ইউরোপে সংকট
১২ জুলাই ২০১৩বিশ্বমন্দার থাবায় স্পেনের খুব খারাপ অবস্থা৷ বেকারত্ব বাড়ছে৷ জনজীবনের নানা স্তরে পড়ছে জাতীয় অর্থনীতির দুর্দশার প্রভাব৷ ক্রীড়াঙ্গনেরও তাতে মরমর অবস্থা৷ টেনিসের রাফায়েল নাদাল, ফর্মুলা ওয়ানের ফ্যার্নান্দো আলন্সো কিংবা স্পেন জাতীয় দল বা বার্সেলোনার ফুটবলারদের দেখলে অবশ্য তা একেবারেই বুঝতে পারবেননা৷ সুপারস্টার হওয়ার সুবাদে তাঁরা তো রীতিমতো ইউরোয় ভাসছেন! জাতীয় ক্রীড়াবিদ হয়েও অভাবে ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে থাকা কাকে বলে দেখতে হলে চোখ রাখুন টেনিস, ফুটবল আর ফর্মুলা ওয়ানের বাইরে স্পেনের অন্য সব খেলায়৷ দেখবেন, লন্ডন অলিম্পিকে অংশ নেয়া জিমনাস্ট ইসাক বোতেইয়া ঠিকমতো প্র্যাকটিস করতে পারছেন না৷ টাকার অভাবে ট্রাউজার কিনতে পারেন না, প্র্যাকটিস করবেন কী করে! স্পেনের পত্রিকায় চোখ রাখলে জানতে পারবেন, ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিকে সোনা জেতা কায়াক কার্লোস পেরেসের ক্ষোভের কথা৷ আগামী মাসেই ডুইসবুর্গে হবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ৷ সেখানে পেরেসকে যেতে হবে নিজের খরচে৷ স্পেন সরকার কোনো খরচই দেবে না৷ দেশের হয়ে খেলতে হবে নিজের পকেট খালি করে – এমন অবস্থা মানতেই পারছেন না পেরেস৷
কিন্তু না মেনে উপায়ও নেই৷ বিশ্বমন্দার ধকল সামলাতে ব্যাপক ব্যয় সংকোচন শুরু হয়েছে স্পেনে৷ খড়গ নেমে আসছে ক্রীড়াঙ্গনের অধিকাংশ ফেডারেশনের বাজেটেও৷ সে দেশের দৈনিক ‘এল পাইস'-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে ৬৩টি ফেডারেশনের মধ্যে ২৫টি নাকি এখন দেউলিয়া হবার পথে৷ এমন পরিস্থিতিতেও চলছে ব্যাপক দুর্নীতি৷ ক্রীড়াবিদরা কোনো ভাতা পাচ্ছেন না, কিন্তু কর্মকর্তাদের অনেকে ঠিকই মাস শেষে গুনে নিচ্ছেন মোটা অঙ্কের বেতন৷ ক্রীড়াবিদই অবহেলিত হলে ক্রীড়াঙ্গনের দুর্দশা তো বাড়বেই৷ সেটাই হচ্ছে৷ ২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিকে অ্যাথলেটিকসে একটাও পদক পায়নি স্পেন৷ এদিকে ২০২০ সালের অলিম্পিকের আয়োজক হতে চায় ইউরোপের দেশটি৷ শেষ পর্যন্ত যদি হয়েই যায়, তাহলে কি আয়োজক হিসেবে অলিম্পিকে সবচেয়ে কম পদক জেতার রেকর্ড গড়বে স্পেন? অবস্থা দেখে তাই তো মনে হচ্ছে!
এসিবি/ডিজি (রয়টার্স)