1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নতুন বৃত্তি ডয়েচলান্ড স্টিপেন্ডিয়ুম

২৫ এপ্রিল ২০১১

জার্মানিতে পড়াশোনা করার জন্য দেশি-বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তি দিতে জার্মান সরকার প্রবর্তন করতে যাচ্ছে আরেকটি নতুন সংস্থা৷ নাম ডয়েচলান্ড স্টিপেন্ডিয়ুম বা জার্মানির বৃত্তি৷

https://p.dw.com/p/113PL
ছবি: picture-alliance/ dpa

অনেকদিন ধরেই ডয়েচলান্ড স্টিপেন্ডিয়ুম বা জার্মানির বৃত্তি চালু হবে এমন কথা শোনা যাচ্ছিল৷ জার্মান শিক্ষামন্ত্রী আনেটে শাভান জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই এই বৃত্তি চালু করা হবে৷ এই বৃত্তিতে আর্থিকভাবে সাহায্য করছে জার্মান পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থা ‘বুন্ড' এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন বেশ কিছু সংস্থা৷ অর্থাৎ সরকার এবং বেসরকারি সংস্থা এগিয়ে এলো বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের আর্থিকভাবে সাহায্য করতে৷

শিক্ষা আর গবেষণায় শীর্ষে অবস্থান করবে জার্মানি - শাভান

এ বছরের শুরুতে বেশ ঘটা করেই ডয়েচলান্ড স্টিপেন্ডিয়ুম-এর কথা জানানো হয়৷ বিভিন্ন বিজ্ঞাপনও প্রচার করা হয়৷ শিক্ষামন্ত্রী আনেটে শাভান বেশ জোর দিয়েই বলেন কেন এই বৃত্তি দেশি-বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য জরুরি৷ বিজ্ঞাপনের মধ্যে দিয়ে কী বোঝানো হচ্ছে সে প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘‘ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ, যে বিজ্ঞাপন আপনারা এতক্ষণ দেখলেন তার মধ্য দিয়ে জার্মানির শিল্প আর সংস্কৃতিকেই তুলে ধরা হয়েছে৷ আমরা আর্থিক সহযোগিতা পাচ্ছি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে৷ সেটা ছোট বা বড় হোক তাতে কিছুই এসে যায় না৷ এর অর্থ হল দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একযোগে কাজ করতে চায়৷ এভাবেই আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনায় আগ্রহী করে তুলতে পারি৷''

জার্মানি উচ্চতর শিক্ষা এবং গবেষণায় শীর্ষে অবস্থান করবে – এমনটিই আশা করছেন আনেটে শাভান৷ যে বৃত্তির কথা তিনি বলছেন তার মাধ্যমে গোটা জার্মানির ৮ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রীকে আর্থিকভাবে সাহায্য করা সম্ভব হবে৷ সরকারের পক্ষ থেকে আরেকটি বৃত্তির ব্যবস্থা রয়েছে তার নাম বাফোগ৷ তবে বাফোগের জন্য মূলত এমন ছাত্র-ছাত্রীরাই আবেদন করতে পারে যারা জার্মান নাগরিক৷

Englischer Garten
ছবি: AP

প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রী পাবে মাসে তিনশো ইউরো

ডয়েচলান্ড স্টিপেন্ডিয়ুমের আওতায় বৃত্তির অর্থের পরিমাণ প্রতি মাসে তিনশো ইউরো৷ এর অর্ধেক টাকা আসবে সরকারের পক্ষ থেকে বাকি অর্ধেক আসবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে৷ এটা হতে পারে কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কোন কোম্পানি অথবা উন্নয়মূলক কার্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কোন সংগঠন৷ তবে এই প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষাক্ষেত্রকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং জার্মানিতে বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য আনতে আগ্রহী৷ আর্থিক একটি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন স্টেফান স্টলটে৷ স্টলটে বললেন, ‘‘বৃত্তির এই সুযোগ দিয়ে জার্মান সরকার এমন কিছু অর্জন করতে চায় যা ভবিষ্যতে দেশের কাজে লাগবে৷ পড়াশোনার মাধ্যমে, বৃত্তির মাধ্যমে একটি নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলতে চায় যারা একসময় দেশের হাল ধরতে সক্ষম হবে৷ যারা নিজেরাই এমন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবে যেসব প্রতিষ্ঠান পড়াশোনায় অন্যদের সাহায্য করবে, উদ্বুদ্ধ করবে৷ আর তাই একারণেই বেছে বেছে পড়াশোনার বিশেষ কিছু ক্ষেত্রেই এই ডয়েচলান্ড স্টিপেন্ডিয়ুম বৃত্তি দেওয়া হবে৷''

সমালোচনার মুখে ডয়েচলান্ড স্টিপেন্ডিয়ুম - কেন?

জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও বৃত্তি দিচ্ছে তবে তাদের বেশ কিছু শর্ত রয়েছে যা পূরণ করা আবশ্যক৷ এই ডয়েচলান্ড স্টিপেন্ডিয়ুম এবং জার্মান সরকারের সঙ্গে এক্ষেত্রে কাজ করছে বার্লিনের হুমবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয়৷ তবে বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে বৃত্তি প্রতিষ্ঠানের উচিৎ বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা, কে বৃত্তি পেল, তাতে ছাত্র-ছাত্রী কতটা লাভবান হলো তা ছাত্র-ছাত্রীর নিজের মুখ থেকে শোনা৷ আশা করা হচ্ছে আগামী বছর প্রায় এক লক্ষ ৬০ হাজার ছাত্র-ছাত্রী ডয়েচলান্ড স্টিপেন্ডিয়ুম-এর আওতায় বৃত্তি পেয়ে তাদের পড়াশোনা শুরু করতে সক্ষম হবে৷ এদের মধ্যে বিদেশী ছাচ্র-ছাত্রীরাও পড়বে৷

তবে বৃত্তি শুরু করতে দেরি হওয়ায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে৷ আর যাই হোক ২০১১ সালে কোন ছাত্র-ছাত্রীই ডয়েচলান্ড স্টিপেন্ডিয়ুম থেকে বৃত্তি পাচ্ছে না৷ অনেক ছাত্র-ছাত্রীই এই বৃত্তিকে সাদরে গ্রহণ করছে না৷ কারণ হিসেবে একজন ছাত্র জানাল, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে নয়, ভর্তির পরে এই বৃত্তির জন্য আবেদন করা যাবে৷ তাতে বেশ কয়েক মাস লেগে যেতে পারে৷ এর আরেক অর্থ হল, প্রথম একটি বা দুটি সেমেস্টার ছাত্র-ছাত্রীদের নিজের খরচেই সব কিছু চালাতে হবে৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী