ধনী দেশের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন চায় বিশ্ব খাদ্য সংস্থা
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০সংস্থাটির ২০০৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার বলা হয়েছে, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের মোট ৯০০ কোটি জনসংখ্যার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য যোগাতে হলে এখন থেকেই কৃষিতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে৷
ধনী দেশগুলোর জোট ‘গ্রুপ অফ এইট' বা ‘জি-এইট' দুনিয়াজুড়ে কৃষিখাতে যে ২,০০০ কোটি মার্কিন ডলারের উন্নয়ন সাহায্য দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিল তা বাস্তবায়ন সম্পর্কে কিছুই জানেন না ‘বিশ্ব খাদ্য সংস্থা'র প্রধান জাঁক দিউফ৷ ইতালির রাজধানী রোমে সংস্থা'র সদর দপ্তরে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দিউফ নিজেই একথা জানালেন৷
গত বছরের জুলাই মাসে ইতালির লা' একুইলা সম্মেলনে ওই অর্থ সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ‘জি-এইট'৷
দিউফ বলেন, ‘‘এফএও যতোটুকু অবগত আছে তাতে করে ওই অর্থ সম্পর্কে কিছুই জানি না আমরা৷'' তিনি আরও বলেন, ‘‘ওই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দেখতে আমাদের অনেকে সময় লেগে যাচ্ছে৷ তাই আমরা পরিস্থিতি সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করে দিতে চাই৷''
বিশ্ব খাদ্য সংস্থা প্রধান বলেন, ওই অর্থ হয়তো এমন মাধ্যম দিয়ে যাচ্ছে যা তাঁরা জানেন না৷ তা কোন পথ দিয়ে যাচ্ছে তা গুরুত্বপূর্ণ নয় বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা দ্বিপাক্ষিক ... আঞ্চলিক কিংবা কোনো বহুপাক্ষিক পথেও যেতে পারে তা নিয়ে সমস্যা নেই৷
দিউফ বলেন. ‘‘আমাদের উদ্বেগ এই নিয়ে যে, যেসব দেশে মানুষ ক্ষুধায় কাতর এবং দরিদ্র সেখানে তা পৌঁছাচ্ছে কি না৷ যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হল এই সাহায্য কৃষকদের হাতে পৌঁছানো যাতে তারা সারসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ কিনতে পারে এবং খেয়ে পরে বাঁচতে পারে৷''
দ্রুত গতিতে বিশ্বের জনসংখ্যা বাড়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে দিউফ বলেন, সবাই জানে ২০৫০ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা ৯০০ কোটিতে পৌঁছুবে৷ তিনি বলেন, ‘‘এই বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য যোগতে হলে বিশ্বের মোট খাদ্য উৎপাদন প্রায় ৭০ শতাংশ বাড়াতে হবে এবং বিনিয়োগ ছাড়া তা সম্ভব না৷''
ওদিকে, বৈশ্বিক গবাদিপশু খাতে দ্রুত বিনিয়োগের বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে সংস্থাটির এই বার্ষিক প্রতিবেদনে৷ চীনের মতো দেশগুলোতে ১০০ কোটিরও বেশি মানুষ এই খাতের ওপর নির্ভরশীল বলে উল্লেখ করে সংস্থাটি জানায়, গবাদি পশু খাত কৃষি অর্থনীতির সবচেয় দ্রুত বর্ধিষ্ণু একটি খাত৷
বিশ্বজুড়ে মোট কৃষি পণ্যমূল্যের প্রায় ৪০ শতাংশই এই খাত থেকে আসে৷ এছাড়া বিশ্বখাদ্যের মোট ১৫ শতাংশ শক্তিই আমরা পেয়ে থাকি পশুখাত থেকে৷ আর পৃথিবীব্যাপী মানুষের প্রোটিন চাহিদার প্রায় ২৫ শতাংশই মিটিয়ে থাকে গবাদি পশু খাত৷
প্রতিবেদন : মুনীর উদ্দিন আহমেদ
সম্পাদনা : আবদুস সাত্তার