1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দেশের বাইরে ইউরেনিয়াম পাঠাতে রাজি ইরান

১৭ মে ২০১০

অবশেষে দেশের বাইরে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পাঠাতে রাজি হলো ইরান৷ এ ব্যাপারে আজ তেহরানে স্বাক্ষরিত হলো একটি চুক্তি৷ তবে এরপরও ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধকরণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা উত্তেজনার অবসান ঘটছে না বলে মনে হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/NQ8D
চুক্তি স্বাক্ষর করছেন তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীছবি: AP

ইরান, তুরস্ক ও ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এই মর্মে এক চুক্তি স্বাক্ষর করেন৷ এর ফলে ইরান এক মাসের মধ্যে ১,২০০ কেজি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পাঠাবে তুরস্কে৷ বিনিময়ে ইরানকে দেয়া হবে ১২০ কেজি পরমাণু জ্বালানী, যা তেহেরানের একটি পারমাণবিক চুল্লিতে ব্যবহার করা হবে৷ যেখানে ক্যান্সার রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত রেডিওআইসোটোপ তৈরি করা হয়৷ এর জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও রাশিয়া সময় পাবে এক বছর৷ এই ঐক্যমতের পর ইরানের প্রধান মধ্যস্থতাকারী আলী আকবর সালেহি বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতার ক্ষেত্রে আমাদের কতটা সদিচ্ছা রয়েছে, তা প্রমাণ করতে আমরা এই আদান-প্রদান সংক্রান্ত বোঝাপড়া মেনে নিয়েছি৷ আমাদের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম তৃতীয় কোনো দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রশ্নে পশ্চিমা শক্তিগুলি যে প্রক্রিয়ার বিষয়ে অনড় রয়েছে সেটাও আমরা মেনে নিয়েছি৷''

চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর ধারণা করা হচ্ছিল যে, হয়তো ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধকরণ নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের যে আশঙ্কা তা দূর হবে৷ কারণ ইউরেনিয়াম দিয়ে ইরান পরমাণু বোমা তৈরি করতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা ছিল৷ এজন্য অন্য কোনো দেশে ইউরেনিয়াম পাঠানোর জন্য জাতিসংঘের মাধ্যমে ইরানের উপর চাপ দিয়ে আসছিল তারা৷ প্রয়োজনে ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও চিন্তাভাবনা চলছিল৷ কিন্তু বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার কাছ থেকে এখন পর্যন্ত যে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে, তাতে আশঙ্কা যে দূর হয়েছে তা মনে হচ্ছেনা৷ যেমন যে দেশটির ইরানকে ফুয়েল রড দেয়ার কথা, সেই ফ্রান্স বলেছে যে, স্বাক্ষরিত চুক্তিটি ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে বিশ্বের উদ্বেগ কমাতে পারবেনা৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান ক্যাথরিন অ্যাশটনও একই মত প্রকাশ করেছেন৷ এদিকে জার্মানি বলেছে যে, ইরান ও জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ-র মধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তির কোনো বিকল্প নেই৷ ব্রিটেন বলছে যে, ইরানকে নিয়ে উদ্বেগের এখনো যথেষ্ট কারণ রয়েছে৷ দেশটির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে কাজ অবশ্যই চালিয়ে যেতে হবে বলে মনে করে ব্রিটেন৷ ওদিকে ইসরায়েল মনে করছে যে, এর ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হলো৷ কারণ আগে শুধু ইরানকে নিয়ে চিন্তা করলেই হতো৷ কিন্তু এখন তুরস্ক ও ব্রাজিল যোগ হওয়ায় সমস্যা আরও বাড়লো বলে মনে করছে ইসরায়েল৷ এছাড়া চুক্তিটি সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ইরানের একটি কৌশল বলে মনে করছে দেশটি৷

Catherine Ashton Rede in Gaza bei UNRWA
ইইউ’র পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান ক্যাথরিন অ্যাশটনছবি: AP

তবে চুক্তিটি স্বাক্ষরের পর প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদ ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরুর জন্য পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷ আর তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ দাভুটোগলু বলছেন যে, এর পরে ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আর কোনো প্রয়োজন নেই৷

এদিকে ইরান জানিয়েছে যে, এই চুক্তির পরও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজ তারা চালিয়ে যাবে৷ এর মধ্যে ২০ ভাগ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদনের কাজও রয়েছে৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন