বিজেপির জোর তৎপরতা
১৮ জুলাই ২০১৪আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে দিল্লিতে কোনো দল সরকার গড়ার দাবি না জানালে রাষ্ট্রপতির শাসনের মেয়াদ বাড়ানো হবে৷ তাই শুরু হয়ে গেছে সরকার গড়ার তৎপরতা৷ দিল্লি বিধানসভার ২০১৩ সালের নির্বাচনে সরকার গড়ার মত সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গড়তে রাজি হয়নি বিজেপি৷
অমিত শাহ দলের নতুন সভাপতি হয়ে রাতারাতি ভোল পালটে দিলেন বিজেপি-র৷ ২০১৪ সালের সংসদীয় নির্বাচনে অসাধারণ সাফল্যে দলের আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে৷ কেন্দ্রশাসিত দিল্লির সাতটি সংসদীয় আসনের সব ক'টিতেই বিজয়ী হয়েছে বিজেপি৷ এবার তাই দিল্লিতে বিজেপি সরকার বসাতে অমিত শাহ হাত বাড়িয়েছেন৷ কিন্তু দিল্লি বিধানসভার মোট ৭০টি আসনের মধ্যে বিজেপির ছিল ৩১টি আসন৷ সংসদীয় নির্বাচনে তিনজন বিজেপি বিধায়ক সাংসদ হলে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে ২৮ অর্থাৎ সরকার গড়তে আরো ছয়জন বিধায়ক দরকার৷ জোটসঙ্গি আকালি দলে একজনকে নিয়ে৷
কাজেই রাজনৈতিক পাশা খেলার চেনা ছক অনুযায়ী শুরু হয়েছে বিপক্ষ দলের বিধায়কদের কেনাবেচার নেপথ্য চেষ্টা, এমনটাই অভিযোগ করছেন আম আদমি পার্টির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল৷ তাঁর প্রচার অনুযায়ী, বিধায়ক কিনতে বিজেপি ২০ কোটি টাকার দেবার টোপ দিয়েছে৷ তার সঙ্গে মন্ত্রিত্ব৷ এই অভিযোগ নিয়ে আম আদমি পার্টির এক প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও দেখা করেছেন৷
বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব এই অভিযোগ অবশ্য খারিজ করে দিয়ে বলেন, সরকার গড়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশে ফিরলে নেয়া হবে৷ দিল্লির রাজনৈতিক অলিন্দ মনে করছে, মোদী এলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে দলের সভাপতি মোদীর ডান হাত অমিত শাহের অনুমতিক্রমেই৷ বিজেপির দিল্লি শাখার সভাপতির মতে, দলের একাংশ নতুন নির্বাচনের বিরোধী৷ তিনি বলেন, চরম হতাশা থেকেই এই ধরনের অভিযোগ তুলেছেন কেজরিওয়াল৷ উল্লেখ্য, কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে আম আদমি পার্টি দিল্লিতে সরকার গড়ার পর ৪৯ দিনের মাথায় মুখ্যমন্ত্রী পদে কেজরিওয়াল ইস্তফা দিলে দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি শাসন বলবৎ হয়৷ এই পলায়ন মানসিকতাকে ব্যঙ্গ করে কেজরিওয়ালের নির্বাচন কেন্দ্রে এই মর্মে পোস্টার পড়েছে, যে তিনি তাঁর কেন্দ্রের সাধারণ মানুষের অভাব অভিযোগের সুরাহা না করে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন৷ সচিত্র পোস্টারে তাই লেখা ‘খোঁজ চাই, কেজরিওয়াল নিরুদ্দেশ'৷
কংগ্রেসও বিজেপির বিরুদ্ধে অনুরূপ ‘হর্স-ট্রেডিং'-এর অভিযোগ এনে বলেছে, ক্ষমতার লোভে বিজেপি সব কিছুই করতে পারে৷ কেন্দ্রে বিজেপি সরকার থাকা সত্ত্বেও দিল্লি বিধানসভার নতুন নির্বাচনে যেতে ভয় পাচ্ছে কেন বিজেপি? আসলে কংগ্রেস মনে করে বিজেপির ‘আচ্ছা দিন'-এর স্লোগানের বেলুন থেকে ক্রমশই হাওয়া বেরিয়ে যাচ্ছে৷ জনপ্রিয়তার মাত্রা কমের দিকে৷ কারণ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই৷ আম জনতা নাজেহাল মূল্যবৃদ্ধির কোপে৷