1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দাভিদকে নিয়ে ঘোর লড়াইয়ে রোম আর ফ্লোরেন্স

১৮ আগস্ট ২০১০

মিকেলেঞ্জেলোর প্রিয় পুরুষকে নিয়ে জোর বখেরা বেধে গেছে দুই ইটালিয় শহরের মধ্যে৷ পুরুষটির নাম দাভিদ৷ ঝগড়ার এদিকে রয়েছে ফ্লোরেন্স আর অন্যদিকে ইটালির রাজধানী রোম৷

https://p.dw.com/p/OpnL
Michelangelos David-Statue
মিকেলেঞ্জেলোর বিখ্যাত ভাস্কর্য দাভিদছবি: dpa - Fotoreport

মিকেলেঞ্জেলোকে নিয়ে একটা গপ্পো বলা যাক আগে৷ সেই ১৫০৬ বা ১৫০৭ খৃস্টাব্দের এই গপ্পোটা এরকম....

একদিন ফ্লোরেন্সের শিল্পী, সাহিত্যিকদের মধ্যে জোর আড্ডা চলছিল মিকেলেঞ্জেলোর বাগানবাড়িতে৷ তো, কথায় কথায় উঠেছে রূপের প্রসঙ্গ৷ উপস্থিত সকলেই প্রায় নারীর অসামান্য রূপের প্রশংসায় পঞ্চমুখ৷ নারীর বিভঙ্গ, তার লাস্য, তার ত্বক, তার চুল, তার ইত্যাদি প্রভৃতি৷ আলোচনা খানিকটা গড়ানোর পর হঠাৎ করেই গৃহস্বামী এক ধমক দিয়ে বসলেন সকলকে৷ গৃহস্বামী মানে খোদ মিকেলেঞ্জেলো৷ বললেন, ‘কি তোমরা তখন থেকে মেয়েদের রূপ মেয়েদের রূপ করে মাথাখারাপ করছো? যদি, আসল মানবিক রূপ দেখতে হয়, যদি শিল্পীর দৃষ্টিভঙ্গিতে তার চুলচেরা বিচার করতে হয়, তবে সে রূপ হল পুরুষের৷ নারীর নয়৷ আমার কথা বিশ্বাস না হলে যাও, ফ্লোরেন্সের শিল্পমহলে গিয়ে আমার দাভিদকে দেখে এসো ৷ তাহলেই বুঝবে কাকে বলে সৌন্দর্য, কাকে বলে রূপ!'

তো, মিকেলেঞ্জেলোর তৈরি এই দাভিদ, যা কিনা তাঁর নিজের প্রিয় শিল্পকর্মগুলোর একটা, দুধসাদা কারারা মর্মরে তৈরি সেই দাভিদের অনুপম রূপ একবার নিজের চোখে দেখতে প্রতি বছর গোটা গ্রহের পর্যটকরা মোট দশ মিলিয়ন ডলারের টিকিট কাটেন৷ সেই দাভিদের মালিকানা ফিরে চেয়েছে ফ্লোরেন্স৷ ১৮৭১ সালে ইটালির একত্রীকরণের পর ফ্লোরেন্স শহর থেকে দাভিদকে নিজের ঘরে নিয়ে চলে যায় রোম৷ তারপর থেকে রোমেই রয়ে গেছে ,তেরো মিটার উঁচু এই অনুপম ভাস্কর্য৷ ফলে দাভিদকে দেখিয়ে আমদানি যা হচ্ছে, সবটাই যাচ্ছে রোমের ভাঁড়ারে৷ মানে ইটালি সরকারের রাজকোষে৷ কিন্তু, ফ্লোরেন্স এবার দাবি করেছে, ফিরিয়ে দাও আমাদের দাভিদ৷ ও আসলে আমাদের শহরের প্রতীক৷

Michelangelo statue of the dead body of Christ
মিকেলেঞ্জেলোর আরেকটি বিখ্যাত ভাস্কর্য পিয়েতাছবি: Picture-Alliance / Photoshot

মামলার পথে এখন চলছে দাভিদ নিয়ে হাঁটাহাঁটি৷ ফ্লোরেন্সের একবগগা মেয়র মায়েত্তো রেনজি তো সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে ঘোষণা করেছেন রোমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ৷ বলেছেন, ‘সব কাগজপত্র দিয়ে দিয়েছি, এবার যাবে কোথায় রোম? আমাদের ঘরের ছেলে দাভিদকে এবার ফিরিয়ে দিতেই হবে৷ ছাড়ব না৷'

দাভিদের দাবি ছাড়তে রাজি নয় রোমও৷ তাদেরও আছে কাগজপত্র৷ তবে ১৮৭১ এর পর থেকে৷ তাতে এখন কোনদিকে যায় মামলার ফল, তা বোঝা যাচ্ছে না৷

তবে, দাভিদ যদি মিকেলেঞ্জেলোর নিজের শহরে ফিরে আসে, তাতে হয়তো সে নিজেও একটু খুশিই হবে৷ কারণ, প্রায় দেড়শো বছর ধরে বেচারা প্রবাসে বসবাস করছে৷ ঘরে ফিরতে কার না ইচ্ছে হয়!

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন