থাই ছবি কান’এ পাম দ’র জিতল
২৪ মে ২০১০আপিচাটপং থাইল্যান্ডের বাঁধা গতের এ্যাকশন ফিল্ম স্টুডিও সিস্টেমের ধরাছোঁয়ার বাইরে৷ তাঁর ছবি হল আন্তর্জাতিক ফিল্ম সমঝদারদের জন্য৷ কান'এও তাঁর আসা-যাওয়া অনেকদিনের৷ ২০০২ সালে একটা ছোটখাটো পুরষ্কার পেয়েছিলেন ‘‘ব্লিসফুলি ইওর্স'' ছবিটার জন্য৷ তার দু'বছর বাদে জুরির পুরষ্কার পান ‘‘ট্রপিকাল ম্যালেডি'' ছবিটির জন্য৷
তাঁর এবারকার ছবিটির কাহিনী হল এই যে, এক হারানো ছেলে একটি মানুষপ্রমাণ বাঁদুরে ভূত হয়ে ফিরেছে৷ সেই সঙ্গে রয়েছেন এক হতশ্রী রাজকন্যে যিনি একটি কথা-বলা মাগুর মাছের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হন৷ অথবা এক মৃত স্ত্রী যিনি তাঁর স্বামীকে ভালোবেসে পরলোকের পথ দেখাতে এসেছেন৷
একটি সুন্দর, দুর্বোধ্য স্বপ্ন
কিন্তু এ' ধরণের ছবির সাফল্য, অসাফল্য নির্ভর করে দৃষ্টিকোণের উপরে৷ জুরিপ্রধান টিম বার্টনের মতে ‘আঙ্কল বুনমি' হল ‘‘একটি সুন্দর, দুর্বোধ্য স্বপ্ন''৷ বিশ্ব ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে এবং সারা বিশ্বে হলিউডের কায়দায় ছবি তৈরী হচ্ছে৷ এই পরিস্থিতিতে আপিচাটপং-এর ছবি যেন ‘‘অন্য কোনো দেশ এবং অন্য কোনো দৃষ্টিকোণ'' থেকে তোলা, অনুভব করেছেন বার্টন৷
‘হলিউড রিপোর্টার' পত্রিকার সমালোচকের মতে পুনর্জন্মের মূল ধারণাটাই হল সকল সত্তার একটি অভেদ্য এবং অবিচ্ছিন্ন রৈখিক অস্তিত্ব, যা কিনা সার্বিক এক চেতনার মধ্যে ঘটছে৷ এবং আপিচাটপং-এর কাছে সিনেমাও সেই ধরণের একটি মিডিয়াম, যেখানে অতীত-বর্তমান, অথবা মানবজগৎ এবং জীবজন্তু এমনকি ভূতপ্রেতদের জগতের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করা সম্ভব৷
একটি মানুষের চিৎকার
কান'এর জুরির পুরষ্কার কিন্তু এবার গেছে আফ্রিকার একটি প্রায় অজ্ঞাত, প্রায় অদৃশ্য দেশের চিত্রপরিচালক মাহামত-সালেহ হারুন'এর ‘‘এ স্ক্রিমিং ম্যান'' ছবিটির কাছে৷ এ' ছবির কাহিনী ততোধিক সহজ-সরল৷ চাড'এ গৃহযুদ্ধের পটভুমিতে তোলা ছবিটিতে এক চ্যাম্পিয়ন সাঁতারু এখন হোটেলে সুইমিং পুলের দেখাশোনা করেন৷ কিন্তু হোটেলের নতুন চীনা মালিকরা চান, তিনি তাঁর চাকরি ছেড়ে দিন তাঁর ছেলের হাতে৷ এ' ছবিতে আছে আফ্রিকার জীবনের স্পন্দন৷ এবং হারুন স্বয়ং বলেছেন, ‘‘আমি যে দেশ থেকে আসছি, সেখানে বিশেষ কিছু নেই৷ সেই মরুভূমির মতো আঙ্গিকে আমি একটা জিনিষ শিখেছি: এমন ভাবে ফিল্ম তৈরী করবে, যেন তোমার প্রিয়জনদের জন্য রান্না করছ৷''
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই