থমথমে ব্যাংকক, অনড় সরকার বিরোধীরা
১১ এপ্রিল ২০১০শনিবারের সহিংস বিক্ষোভে রাজধানী ব্যাংকক থেকে একের পর এক প্রাণহানির খবর আসছে৷ রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ২১-এ দাঁড়িয়েছে৷ এদের মধ্যে ১৭ জন বেসামরিক নাগরিক এবং চার জন সেনা সদস্য৷ নিহতদের মধ্যে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের ক্যামেরাম্যান হিরো মুরামোতো রয়েছেন৷ তিনি জাপানের নাগরিক৷ ইতিমধ্যে জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনার তদন্ত দাবি করেছে থাই সরকারের কাছে৷ সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৮৭০ ব্যক্তি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে৷
এদিকে শনিবার রাতেও ব্যাংকক ছাড়া একাধিক জায়গায় পুলিশ ও সেনাদের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ জনতার সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়৷ পুলিশ ও সেনাদের গুলিতে একের পর এক লোক প্রাণ হারিয়েছে৷ কিন্তু এরপরও বিক্ষোভ থামায়নি রেড শার্ট সমর্থকরা৷ বরং তাদের সহিংস বিক্ষোভের মাত্রা আরও বেড়েছে৷ রাজধানী ব্যাংককের যে দুইটি জায়গায় রেড শার্ট সমর্থকরা দখর করে রেখেছিল সেখানে তারা অবস্থান অটুট রাখে৷ অবশেষে থাই সরকার পরিস্থিতি সামলাতে না পেরে রোবারের মধ্যে সেসব জায়গা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়৷ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও সেনা সরিয়ে আনার জন্য চাপ দেওয়া হয় অভিসিৎ ভেজ্জাজিভার সরকারের ওপর৷
উল্লেখ্য, বিগত প্রায় দুই দশকে এই ধরণের রাজনৈতিক সহিংসতা দেখা যায়নি থাইল্যান্ডে৷ সহিংস বিক্ষোভ ও রক্তপাতের পর শনিবার থাই সরকার বিরোধীদের প্রতি আলোচনায় বসার আহ্বান জানায়৷ প্রধানমন্ত্রী অভিসিৎ ভেজ্জাজিভা এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘যে ক্ষয়ক্ষতি আজ হয়ে গেছে তার জন্য আমি জনগণের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি, বিশেষ করে যারা মারা গেছেন তাদের পরিবারের কাছে৷'
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এই দুঃখ প্রকাশেও বিরোধীদের অবস্থান পরিবর্তন হয়নি৷ বরং তাদের পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়া হয়েছে৷ এবং একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী অভিসিৎ ভেজ্জাজিভার পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে৷ বিরোধী নেতা ওয়েং তোজিরাকাম বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, আলোচনার সময় শেষ৷ আমরা খুনিদের সঙ্গে আলোচনা করি না৷ আমাদের লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে৷ তিনি আরও জানিয়েছেন, বিক্ষোভে নিহতদের প্রতি সম্মান জানিয়ে রোববার কোন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে না৷
রাজনৈতিক এই সহিংসতা থাইল্যান্ডের অর্থনীতিতে বড় বিপর্যয় নিয়ে আসবে বলে আশংকা করছেন দেশটির বিশেষজ্ঞরা৷ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অন্যতম উদীয়মান অর্থনীতি হিসেবে পরিচিত থাইল্যান্ড পর্যটন শিল্পের জন্য প্রখ্যাত৷ কিন্তু ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের থাইল্যান্ড ভ্রমণ না করার জন্য সতর্ক করে দিয়েছে৷
প্রতিবেদক: রিয়াজুল ইসলাম, সম্পাদনা: জাহিদুল হক