1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তেলেঙ্গানা ইস্যু

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

ভারতে পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠন নিয়ে সংকট ক্রমশই বাড়ছে৷ এই ইস্যু নিয়ে সংসদের শেষ অধিবেশনের কাজকর্ম লাগাতার মুলতুবি রাখতে হচ্ছে৷ অচলাবস্থা কাটাতে প্রধানমন্ত্রী বিজেপির শীর্ষ নেতাদের নৈশভোজে ডেকেছেন তাঁদের মনোভাব জানতে৷

https://p.dw.com/p/1B6GR
ছবি: DW/A. Chatterjee

সাধারণ নির্বাচনের আগে সংসদের শেষ অধিবেশন দিনের পর দিন স্থগিত রাখতে হচ্ছে অন্ধ্রপ্রদেশকে ভেঙে পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের সমর্থক ও বিরুদ্ধবাদীদের ক্রমাগত প্রতিবাদ এবং হৈ-হট্টগোলে৷ এই নিয়ে তীব্র মতভেদ রাজ্যের কংগ্রেস নেতাকর্মীদের মধ্যে৷ অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য পুনর্গঠন বিল সংসদে পাস হলে তাঁরা কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে যাবার হুমকি দিচ্ছেন৷ তাহলে কেন্দ্রের কংগ্রেস-জোট সরকার জেনে বুঝে এই সংকট ডেকে আনলো কেন? কেন্দ্র কি আঁচ করতে পারেনি এই সংকট কত গভীর হতে পারে এবং তাতে রাজনৈতিক লাভ বেশি হবে নাকি লোকসান?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অবশ্য মনে করেন, হিসেবটা যে পুরোপুরি ভুল তা কিন্তু নয়৷ কংগ্রেস নেতৃত্বের ধারণা, ২০১৪-এর সাধারণ নির্বাচনে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না৷ সে ক্ষেত্রে আঞ্চলিক দলগুলি জাতীয় সরকার গঠনে এক বড় ভূমিকা নিতে পারে৷ তাই পৃথক তেলেঙ্গানার চন্দ্রশেখর রাও-এর টিআরএস পার্টির মত আঞ্চলিক দলগুলিকে পাশে টানার রাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন করতে চাইছে৷ এমনিতেই তেলেঙ্গানা অঞ্চলে কংগ্রেসের জনভিত্তি দুর্বল৷ কংগ্রেস-শাসিত অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশে ৪২টি সংসদীয় আসন৷ রাজ্য ভাগ হলে ১৭টি আসন যাবে তেলেঙ্গানায়৷ তার মধ্যে ১২-১৩টি আসন যেতে পারে তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি অর্থাৎ টিআরএস-এর ঝুলিতে৷ টিআরএস একসময় কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকারের শরিক দল ছিল, কিন্তু তেলেঙ্গানা ইস্যুতে তারা জোট ছেড়ে বেরিয়ে যায়৷

Indiens Premierminister Manmohan Singh am 3.1.2014 Pressekonferenz
মনমোহন সিংছবি: UNI/ASHISH KAR

এখন মুখরক্ষা করতে কংগ্রেস-জোট সরকারকে যেভাবেই হোক সংসদের শেষ অধিবেশনেই পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠন বিল পাস করাতেই হবে৷ নাহলে ভোট রাজনীতির হিসেবটাই মাঠে মারা যাবে৷ তাই প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং বিজেপির অবস্থান বুঝতে আগামী ১২ই ফেব্রুয়ারি বিজেপির শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন নৈশভোজে৷ পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনে যদিও বিজেপির অমত নেই, কিন্তু কিছু সংশোধন সাপেক্ষে৷ যেমন, সীমান্ধ্রের জন্য অনুকূল আর্থিক প্যাকেজ৷ সরকার তাতে অরাজি নয়৷ তবে রাজধানী হায়দ্রাবাদকে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল করার প্রস্তাব খারিজ করে দেয়া হয়েছে৷ বলা বাহুল্য তৃণমূল কংগ্রেস অন্ধ্রপ্রদেশ বিভাজনের তীব্র বিরোধী৷ কারণ সহজবোধ্য৷ পৃথক গোর্খাল্যান্ড নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একই সমস্যা৷ অখণ্ড অন্ধ্রপ্রদেশের নেতারা তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগিতা প্রার্থী৷

অন্ধ্রপ্রদেশ গঠনের ঐতিহাসিক পটভূমি ছিল তেলেগু ভাষা ও সংস্কৃতি৷ এরই ভিত্তিতে আন্দোলন শুরু হয় ৫৭ বছর আগে তামিল ভাষাভাষী সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে৷ ভাষা-ভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন কমিশনের সুপারিশে গঠিত হয় অন্ধ্রপ্রদেশ৷ এত বছর পর ভাষার বাঁধন আলগা করে অভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিচয় মুছে ফেলে পৃথক রাজ্য গঠন করতে চান তেলেঙ্গানাপন্থিরা৷ আর্থিক তথা উন্নয়নের দোহাই দিয়ে রাজনৈতিক ক্ষমতালাভ৷ অন্যদিকে তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের অভিঘাতে ছোট ছোট রাজ্য গঠনের আন্দোলন আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে৷ যেমন, আসামে বোড়োল্যান্ড, পশ্চিমবঙ্গে গোর্খাল্যান্ড, মহারাষ্ট্রে বিদর্ভ অঞ্চল এবং জম্মু-কাশ্মীরে জম্মু ও লাদাখ৷ বিল পাস হলে তেলেঙ্গানা হবে দেশের ২৯-তম রাজ্য৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য