তেজস্ক্রিয়তার ভয়ে জাপান থেকে খাবার আমদানি বন্ধ
২৪ মার্চ ২০১১ফুকুশিমার পরমাণু চুল্লির বিস্ফোরণের পর আশেপাশের মানুষ তেজস্ক্রিয়তার হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে নাক এবং মুখ ঢেকে চলাফেরা শুরু করেছিল৷ কিন্তু শেষরক্ষা আর হল না৷ খাবার এবং পানিতে তেজস্ক্রিয়তা পাওয়া গেছে জাপানে৷ আতঙ্কিত জাপানের প্রতিটি মানুষ৷ একজন মহিলা কাঁদতে কাঁদতে জানালেন, ‘‘আমি খুবই চিন্তিত৷ খাবারে তেজস্ক্রিয়তা পাওয়া গেছে৷ আমার মধ্যে এবং বাচ্চাদের শরীরে তা প্রবেশ করেছে কিনা জানিনা৷ আমার বাচ্চারাই আমার কাছে সবকিছু৷''
এরকম আরো কতজন মানুষ জাপানে কাঁদছে, আতঙ্কিত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে তা কেউ জানে না৷ কোনভাবেই নির্ধারণ বা নিরূপণ করা যাচ্ছে না ঠিক কোন অঞ্চল পর্যন্ত এই তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছে৷ ফলস্বরূপ আন্তর্জাতিক মহল জাপান থেকে খাবার আমদানি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
রাশিয়া আপাতত জাপান থেকে খাবার আমদানি বন্ধ রেখেছে৷ ১১ই মার্চের পর থেকে যে সব খাবার রাশিয়া আমদানি করেছে, তা যেন কোন অবস্থাতেই ব্যবহার করা না হয় তার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে৷
রাশিয়ার একা নয়৷ সঙ্গে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ক্যানাডা এবং সিঙ্গাপুর৷ অ্যামেরিকা এবং হংকংও জাপানের তৈরি বিভিন্ন খাবার সহ সামুদ্রিক খাবারও আমদানি করছে না৷ ফ্রান্স চাইছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নও একই ব্যবস্থা গ্রহণ করুক৷
শুধু খাবার নয়, অস্ট্রেলিয়া বিভিন্ন ধরণের দুগ্ধজাত পণ্য সহ ফলমূল এবং শাক-সব্জিও জাপান থেকে আমদানি করতো – এই মুহূর্তে তা পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে৷ ফিলিপিন্স চকোলেট আমদানি করতো জাপান থেকে – ১১ই মার্চের পর থেকে তা বন্ধ রয়েছে৷
জাপান সরকার নিজেও বিভিন্ন দেশে খাবার রপ্তানি বন্ধ রেখেছে৷ খাবার এবং দুগ্ধজাত পণ্য পরীক্ষা না করে তা যেন সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে৷ খাবার এবং পানীয় এখন আমদানি করা হচ্ছে আশেপাশের দেশ থেকে৷
দক্ষিণ কোরিয়ার বেশ কিছু খাবার প্রস্তুতকারী কোম্পানি জানিয়েছে, জাপানের কাছ থেকে বেশ কিছু অর্ডার তারা পেয়েছে৷ এর মধ্যে ইন্সট্যান্ট নুডলস এবং পানির অর্ডার রয়েছে সবচেয়ে বেশি৷ সিওকসু এ্যান্ড পুরিস কোম্পানি জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই তারা প্রায় দুই লক্ষ কেস ভর্তি পানির বোতল জাপানে পাঠিয়েছে৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন