তেজস্ক্রিয়তার পরোয়া করেছেন না চুল্লিকর্মীরা
১৭ মার্চ ২০১১গত সপ্তাহে জাপানের ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং সুনামির পর গত শনিবার থেকে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের তিনটি চুল্লিতে বিস্ফোরণ ঘটে৷ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত পরমাণু কেন্দ্র ফুকুশিমার দাইচি প্রকল্পে তেজস্ক্রিয়তার হার বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় হাজার হাজার মানুষকে সেই এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে৷ অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে যাওয়া এবং মৃত্যুর ঝুঁকির মধ্যেই ১৮০ জন বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত প্রকল্প কর্মী এই বিপর্যয় থেকে মানুষকে রক্ষা করতে এখনও সেখানে কাজ করে যাচ্ছেন৷
এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ মন্ত্রকের সাবেক এক কর্মকর্তা বলেছেন, প্রকল্প শ্রমিকরা সেখানে বীরদর্পে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন৷ আমাদের কাছে অসমর্থিত কিছু তথ্য রয়েছে যে, পরমাণু কেন্দ্রর কিছু কিছু জায়গায় তেজস্ক্রিয়তার হার এতটা বেশি যা প্রকল্প শ্রমিককদের জীবনের জন্য রীতিমতো ঝুঁকির ব্যাপার৷ আমি মনে করি তাঁরা সেখানে দু:সাহসিক কাজ করে চলেছেন৷ আর এইসব প্রকল্প শ্রমিকদের মধ্যে রয়েছেন পরমাণু চুল্লি পরিচালনায় উচ্চ প্রশিক্ষিত এবং অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রকৌশলী এবং নিরাপত্তা কর্মী৷
ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানচেষ্টার এর ডাল্টন নিউক্লিয়ার ইন্সিটিউট এর রিচার্ড ওয়েকফোর্ড বলেছেন,
বিপদের আশঙ্কা থাকলেও তাঁরা তাঁদের কাজ করে যাচ্ছেন৷ এমনিতেই জাপানিরা কাজের ব্যাপারে নিজেদেরকে উৎসর্গ করতে পিছপা হননা৷ এই কাজকে তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব হিসেবেই দেখছেন৷
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা'র মতে, একজন মানুষ বছরে তিন দশমিক শূন্য এমএসভি মাত্রা পর্যন্ত তেজস্ক্রিয়তা
সহ্য করতে পারেন৷ কিন্তু সেখানে ফুকুশিমার দাইচি প্রকল্পে এ পর্যন্ত ঘন্টায় চারশ এমএসভি তেজস্ক্রিয়তা রেকর্ড করা হয়েছে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মস্ত বড়ো এক ঝুঁকি৷
‘ফিজিশিয়ানস ফর সোস্যাল রেসপনসিবিলিটিজ' এর সদস্য ডাক্তার ইরা হেলফান্ড বলেন, এ সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া কঠিন ব্যাপার৷ তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বেশি হলে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা থেকে পরবর্তীতে লিউকোমিয়া বা রক্তের ক্যান্সার এবং থাইরয়েড জনিত ক্যানসারও হতে পারে৷
এদিকে জাপানে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়া নিয়ে বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি নিয়ন্ত্রণ সংস্থা আইএইএ'ও৷
প্রতিবেদন:জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা:সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়