1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তুরস্কে সেনা-সরকার উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা

২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১০

২০০৩ সালে সামরিক অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার সাথে জড়িতদের বিচার প্রক্রিয়াকে ঘিরে তুরস্কে উত্তেজনা আর আশঙ্কা৷ ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে বেশ কিছু সাবেক ও বর্তমান ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাকে আটকের পর জনমনে দ্বিধা-বিভক্তি৷

https://p.dw.com/p/MBQi
সংকট নিরসনে তুরস্কের তিন শীর্ষ কর্তার বৈঠকছবি: AP

বর্তমান পরিস্থিতি

এমতাবস্থায় দেশটির সেনা প্রধান এবং রাজনৈতিক নেতাদের বৈঠক থেকে সংকট নিরসনের ঘোষণা দেওয়া হয় বৃহস্পতিবার৷ আর এর কয়েক ঘণ্টা পরই মুক্তি দেওয়া হয়েছে শীর্ষ তিন সন্দেহভাজন কর্মকর্তাকে৷ তবে এসব সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে ঐ ষড়যন্ত্রের জন্য বিচারের সম্মুখীন করা হবে কি না তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি৷ সরকারি কৌঁসুলিরা বলছেন, এসব কর্মকর্তা বিদেশে পলায়ন করবেন এমন আশঙ্কা না থাকায় তাঁদেরকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে৷ মুক্তিপ্রাপ্তরা হলেন দেশটির সাবেক নৌ এবং বিমান বাহিনী প্রধান ওজডেন ওরনেক এবং ইব্রাহিম ফিরটিনা, এবং সাবেক সেনা উপ-প্রধান এরগিন সাইগুন৷

মুক্তিপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার ভাষ্য

মুক্তি পাওয়ার পর ইব্রাহিম ফিরটিনা সাংবাদিকদের বলেন, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘‘কিছু তথ্য এবং ঘটনা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির বিষয় পরিষ্কার কর তুলে ধরতেই আমি এখানে এসেছিলাম৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি যে, এই ব্যাপারে আমি সফল হয়েছি এবং এখন আমি আপনাদের মাঝেই রয়েছি৷'' সরকারের উপ-প্রধান কৌঁসুলি টুরান কোলাকাডি জানান, ‘‘গত ডিসেম্বরে আমরা তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলাম৷ তখন থেকেই ঘটনার আলামত নষ্ট করার জন্য কোন কিছু তাঁরা করেননি৷ যেহেতু তাঁরা এখনও একই ঠিকানায় বাস করছেন৷ তাই তাঁরা দেশ ছেড়ে পলায়ন করবেন না এমন শর্তেই তাঁদেরকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে৷''

সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ

Türkei Krisentreffen Abdullah Gül und Hasim Kilic in Ankara
আঙ্কারার রাজ প্রাসাদে সাংবিধানিক আদালতের প্রধান বিচারপতি এবং রাষ্ট্রপ্রধানছবি: AP

এর আগে দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান আব্দুল্লাহ গুল, প্রধানমন্ত্রী রেসেপ তাইইপ এরদোয়ান এবং সেনাপ্রধান জেনারেল ইলকার বাসবুগ একটি যৌথ বিবৃতিতে ‘সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় সমস্যার সমাধান করা হবে' বলে ঘোষণা করেন৷ এই তিন শীর্ষ কর্তার বৈঠক সম্পর্কে বেশি কিছু না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী এরদোয়ান বলেন, ‘‘এটা খুব ভালো বৈঠক হয়েছে৷'' রাষ্ট্রপ্রধান গুল বলেন, ‘‘আমাদের রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না করে সেজন্য প্রত্যেককে দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করতে হবে৷''

উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে ইসলামপন্থী সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে গত সোমবার সাবেক এবং বর্তমান প্রায় ৫০ জন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল৷ এরপর থেকেই পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে থাকে৷ তবে বৃহস্পতিবার দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান, প্রধানমন্ত্রী এবং সেনা কর্মকর্তার বৈঠক এবং তিনজনের মুক্তির ফলে উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হতে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের৷ আদালতের সূত্র অনুযায়ী, আটককৃতদের মধ্যে ২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে৷ এছাড়া ১২ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে৷ অন্যান্যরা বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছেন৷

তুরস্কের উগ্রপন্থী দলের সদস্য গ্রেপ্তার

এদিকে, জার্মান পুলিশ তুরস্কের নিষিদ্ধ ঘোষিত বাম দলের দুই জন ঊর্ধ্বতন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে বৃহস্পতিবার৷ ফেডারেল সরকারের কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন, কোলন এবং ডুসেলডর্ফ শহরের সাতটি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে এই দুই সদস্যকে আটক করা হয়৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তালিকায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত বিপ্লবী জনতা মুক্তি জোট - আরপিএলএফ এর উচ্চ পর্যায়ের সদস্য বলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে৷ এছাড়া, তুরস্কের কুর্দিস্তান শ্রমিক দল - পিকেকে'র একজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডাচ পুলিশ৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়