তিমিদের কেন সৈকতে পাওয়া যাচ্ছে?
গত সপ্তাহে উত্তর সাগর সংলগ্ন জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসের উপকূলে ১২টি মৃত তিমির দেখা পাওয়া গেছে৷ কী কারণে তাদের এই দুরবস্থা তা বের করার চেষ্টা চলছে?
দুঃসংবাদ
গত সপ্তাহে উত্তর সাগর সংলগ্ন জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসের উপকূলে ১২টি মৃত তিমির দেখা পাওয়া গেছে৷ একেকটি তিমির দৈর্ঘ্য ১০ মিটারেরও বেশি৷ তাদের মৃত্যুর কারণ জানতে তিমিদের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে৷
ক্রেনের সহায়তা
জার্মানির লোয়ার সাক্সনি রাজ্যের উপ পরিবেশমন্ত্রী আলমুট কোটভিৎস ডয়চে ভেলেকে বলেন, সৈকত থেকে তিমিদের সরিয়ে নেয়ার কাজ একইসঙ্গে কঠিন ও মজার৷ একটি নারী তিমির ওজন গড়ে সাড়ে ১৬ টন হয়ে থাকে৷ আর পুরুষ তিমির ওজন ৬০ টন পর্যন্ত হতে পারে৷ ফলে সৈকতে পাওয়া তিমিগুলো বয়সে তরুণ হলেও তাদের পরীক্ষাগারে নিয়ে যেতে ক্রেনের সহায়তা নিতে হয়েছে৷
জাদুঘরে প্রদর্শিত হবে
দেখছেন একটি তিমির চোয়াল৷ এটি গিসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ এর হাড়গুলো জাদুঘরে প্রদর্শনের জন্য রাখা হবে৷ আরেকটি কংকাল স্ট্রালসুন্ডের মেরিন জাদুঘরে রাখা হবে৷
খাবারের অভাব
কোটভিৎস ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, মৃত তিমিগুলোর কয়েকটির পেট একদম খালি ছিল৷ তারা অপুষ্টিতে ভুগছিল৷ এই জাতের তিমি সাধারণত স্কুইড খেয়ে থাকে৷ কিন্তু উত্তর সাগরে এগুলো পাওয়া যায় না৷ তাই প্রশ্ন ওঠেছে, তিমিগুলো উত্তর সাগরে এলো কী করে?
এলোমেলো অবস্থা?
জার্মানির কিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ ক্লাউস ফান্সেলোভ ডয়চে ভেলেকে বলেন, গত ডিসেম্বরে তিনটি বড় ‘সোলার উইন্ড’ বা সৌর ঝড় হয়েছে৷ এতে তিমিগুলো দিশেহারা হয়ে দিক ভুলে উত্তর সাগরে ঢুকে পড়তে পারে৷ তারপর খাবার না পেয়ে অপুষ্টিতে ভুগে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কোলে ঢুলে পড়েছে৷
অগভীর সাগর
কয়েকটি তিমি অপুষ্টিতে ভুগলেও বাকিগুলোর পেট ভরাই ছিল৷ কিন্তু তাদের যে সমস্যা হতে পারে সেটা হচ্ছে, সাগরের অগভীরতা৷ এ সব তিমি সাধারণত সাগরের কয়েক’শ মিটার পানির নীচে চলাফেরা করে৷ কিন্তু উত্তর সাগর তত গভীর নয়৷ ফলে তারা উত্তর সাগরে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে না পেরে নতুন স্থানের সন্ধান করতে করতে সৈকতে পৌঁছে থাকতে পারে বলে গবেষকরা মনে করছেন৷
হাজার হাজার তিমির গন্তব্য সৈকত
তিমি ও ডলফিন নিয়ে কাজ করেন ফাবিয়ান রিটার৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, বছরে গড়ে কয়েক হাজার তিমি সৈকতে ভিড়ছে৷ যেমন ছবিতে সপ্তাহখানেক আগে ভারতের একটি সৈকতে ছোট জাতের ৮০টি তিমি পড়ে থাকতে দেখা যায়৷ স্থানীয়রা কয়েকটিকে আবারও সাগরে পাঠাতে সমর্থ হলেও কয়েকটিকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি৷
সামরিক প্রশিক্ষণ
পরিবেশবিদরা বলেন, সাগরের পানির নীচে শব্দের কারণে সেখানকার প্রাণীজগতের সমস্যা হয়৷ যেমন সামরিক প্রশিক্ষণ চলার কারণে যে শব্দ দূষণ সৃষ্টি হয়, তা প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর৷