মানুষ-বিহীন যুদ্ধ
৮ জুন ২০১৩চালকবিহীন বিমান, যা ছবি তুলতে, রকেট হানতে কিংবা বোমা ফেলতে সক্ষম৷ অতীতের মহাকাব্যে হয়ত এ ধরনের অস্ত্রের কথা ভাবা হয়েছিল, যেমন শব্দভেদী বাণ৷ কিন্তু শত্রুর বিরুদ্ধে ড্রোন ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সুবিধা, নিজের গণ্ডি না ছেড়ে, নিজেদের সৈন্যকে কোনোরকম বিপদের মুখে না ফেলে, শত্রুকে বিনষ্ট করা যায়৷ তা-তে মাঝেমধ্যে কিছু নির্দোষ মানুষ মারা পড়ে বটে – আপাতত – কিন্তু কে জানে ভবিষ্যতে এই ড্রোনরা আরো নিখুঁত, আরো নির্ভুল হয়ে উঠবে কিনা?
মোট কথা, ড্রোন প্রযুক্তি এগিয়ে চলেছে, যেমন বেড়ে চলেছে তার ব্যবহার৷ কিন্তু বন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর কনভারসন বা বিআইসিসি-র গবেষকরা জঙ্গি ড্রোন ব্যবহারের নেতিবাচক দিকটাও বিবেচনা করে দেখেছেন৷ তাঁরা বলছেন, ড্রোনের ব্যবহার হলো ‘‘রিমোট হাতে নির্ঝঞ্ঝাট যুদ্ধ''৷ আরো বড় কথা, ড্রোনের মাধ্যমে এমন সব দেশে ঢুকে যুদ্ধ চালানো যায়, যেখানে বস্তুত যুদ্ধের অবতারণা ঘটেনি, অথবা সরকারিভাবে কোনো যুদ্ধঘোষণা করা হয়নি – যা কিনা আন্তর্জাতিক আইনের বিরুদ্ধে৷ সন্ত্রাসবাদী সন্দেহে অপর দেশের নাগরিকদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করাটা ড্রোন যুদ্ধের অঙ্গ – অথচ যাদের হত্যা করা হচ্ছে, তাদের কোনো সঠিক বিচার হয়নি৷
ড্রোন ব্যবহারের ফলে যুদ্ধ আর শান্তির মধ্যে বিভাজনরেখাটাই ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে, বলছেন বিআইসিসি-র গবেষকরা৷ ‘ইউরো হক' ড্রোন কেনা নিয়ে জার্মানিতে চলতি কেলেংকারির পরিপ্রেক্ষিতে শান্তি আন্দোলনকারীরা জার্মান সরকারের প্রতি জঙ্গি ড্রোন না কিনে, সে ধরনের ড্রোনের ব্যবহার আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ করার জন্য সক্রিয় হবার আহ্বান জানিয়েছেন৷