1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

টিআইবির প্রতিবেদনের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন

সমীর কুমার দে, ঢাকা৩০ জুন ২০১৬

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, দেশের সেবা খাতগুলোর মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত পাসপোর্ট বিভাগ৷পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এই জরিপের যথার্থতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন৷

https://p.dw.com/p/1JGp3
দুর্নীতির প্রতীকী ছবি বাংলাদেশে টাকা
ছবি: DW

‘‘অনলাইনে ফরম পূরণ করতে দালালরা টাকা নেয়, ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার লাইন না দিয়ে কিছু টাকা দিলে আগেই কাজ হয়, পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় টাকা দিতে হয়৷ এখন এসব অবৈধ লেনদেনের দায় কেন পাসপোর্ট অফিসের?'' আমরা যখন স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করছি তখন কেন এই রিপোর্ট৷ এটা তো ২০১৪ সালের জরিপ৷ কেন এটা ২০১৬ সালে এসে প্রকাশ করা হচ্ছে?'' ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলার সময় এ প্রশ্ন রেখেছেন পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান৷

পাসপোর্টের এই প্রজেক্টের সঙ্গে তো সেনাবাহিনী রয়েছে৷ তারপরও কেন এই পরিস্থিতি? এমন প্রশ্নের জবাবে মাসুদ রেজওয়ান বলেন, ‘‘পাসপোর্টের পুরো কাজটা করে বেসামরিক প্রশাসনের লোকজন৷ শুধুমাত্র টেকনিক্যাল কাজগুলোর সঙ্গে সেনাবাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন৷ আর আমি মহাপরিচালক হিসেবে মাত্র ৬ মাস আগে যোগ দিয়েছি৷ এর আগে কখনো সেনাবাহিনীর কোনো কর্মকর্তা পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ছিলেন না৷ ফলে যে ধারণা থেকে বলা হচ্ছে সেনাবাহিনী থাকার পরও কেন এটা হলো, তা একেবারেই ঠিক নয়৷''

হাফিজ উদ্দিন খান

গত বুধবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) একটি জরিপের ফল প্রকাশ করে৷ সেখানে বলা হয়েছে, জরিপের তথ্য অনুযায়ী দেশের সেবা খাতগুলোর মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত হচ্ছে পাসপোর্ট বিভাগ৷ এখানে সেবা নেয়ার জন্য প্রায় ৭৭ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষকে দুর্নীতির শিকার হতে হয়েছে৷ আর ঘুষ দিতে হয়েছে ৭৬ দশমিক ১ শতাংশ মানুষকে৷ রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে বলা হয়, আইন-শৃঙ্খলা, বিচার বিভাগসহ অন্য বিভাগকে পেছনে ফেলে পাসপোর্ট বিভাগের প্রথমে চলে আসাটা বিস্ময়কর৷ তবে পাসপোর্ট করতে গিয়ে পুলিশকে যে ঘুষ দিতে হয়, সেটা পাসপোর্টের মধ্যে রাখা হয়নি৷ সেটা পুলিশের দুর্নীতির হিসেবেই রাখা হয়েছে৷ তারপরও অন্যসব সেবাখাতের মধ্যে দুর্নীতির শীর্ষে এসেছে পাসপোর্ট৷

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও টিআইবির ট্রাস্ট্রি বোর্ডের সদস্য এম হাফিজ উদ্দিন খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা তো খানা জরিপ৷ সেখানে যে চিত্র উঠে এসেছে সেটাই প্রকাশ করা হয়েছে৷ সেনাবাহিনী এখানে কাজ করলেও বেসামরিক প্রশাসনের বড় ভুমিকা রয়েছে৷ সেনাবাহিনী শুধুমাত্র ভেতরের অংশটা দেখে৷ আমি নিজে পাসপোর্ট করেছি কোনো ধরনের ঘুষ ছাড়াই৷ উল্টো তারা আমাকে চা খাইয়েছে৷ কিন্তু সেটা বড় কথা নয়৷ সাধারণ মানুষ কী বলছেন সেটাই আসল৷ জরিপ তো করা হয়েছে সাধারণ মানুষকে নিয়ে৷''

মাসুদ রেজওয়ান

হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘‘এ সব রিপোর্ট একেবারে প্রত্যাখান না করে অভিযোগ আমলে নিয়ে টিআইবির সঙ্গে বসা উচিত৷ কারা ঘুষ দিচ্ছে, কিভাবে দিচ্ছে সেগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে৷ একটা রিপোর্ট হলো আর কয়েকদিন পর মানুষ ভুলে যাবে ভেবে কোনো পদক্ষেপ না নিলে সেটা ভুল হবে৷ আমার মতে, অভিযোগ আমলে নিয়ে সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে৷ এভাবে কাজ করলেই সমস্যার গভীরে গিয়ে সমাধান সম্ভব৷''

তবে টিআইবির এই রিপোর্ট তৈরিতে দক্ষতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাসুস রেজওয়ান৷ তিনি বলেন, ‘‘২০১৪ সালের রিপোর্ট তারা কেন ২০১৫ সালে দিলনা? একটা রিপোর্ট প্রকাশ করতে যদি তাদের দেড় বছরেরও বেশি সময় লাগে তাহলে তারাই বা কি দক্ষতা দেখাচ্ছে৷ তারা আমাদের কোন পাসপোর্ট অফিসে যায়নি৷ শুধু ঘরে বসে পেপারকাটিং ও গ্রাফিক্সের মাধ্যমে এই রিপোর্ট তৈরি করেছে৷ আমি তাদের ফোন করে জানতে চেয়েছি, আপনারা কোন পাসপোর্ট অফিসে গিয়েছেন? তারা বলেছে, কোনো পাসপোর্ট অফিসে যায়নি৷ তারা একজন মানুষের কাছে শুনল পাসপোর্ট করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন, কিন্তু কিভাবে হয়েছেন সেটাও তো দেখতে হবে৷ অথচ সব দায় চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে পাসপোর্টের উপর৷ এটা কোনোভাবেই ঠিক নয়৷''

টিআইবির প্রতিবেদনের যথার্থতা নিয়ে আপনার মন্তব্য জানান, লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান