1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জেলিফিশ কাজেও লাগতে পারে

ইয়ুলিয়া হাইনরিশমান/এসবি১৬ জুন ২০১৫

সমুদ্রতটে স্নানের অভিজ্ঞতার মজাই আলাদা৷ তবে জেলিফিশের সংস্পর্শে এলে ত্বক জ্বালা করলেই মুশকিল৷ আফ্রিকার উত্তরে টিউনিশিয়া উপকূলে এই সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে৷ বিজ্ঞানীরা এর সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা করছেন৷

https://p.dw.com/p/1FhZO
Biolumiszent
ছবি: CC BY 2.0 by Michael Bentley

টিউনিশিয়ার উত্তরে বিজেরটে-তে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞানীরা জেলিফিশের খাদ্য নিয়ে গবেষণা করছেন৷ ইকো সিস্টেমের জন্য এই প্রাণী ক্ষতিকর৷ সমুদ্রবিজ্ঞানী নেজিব জালি বলেন, ‘‘অনেক জেলিফিশ মাংসাশী, অনেকে প্ল্যাংকটন বা সামুদ্রিক উদ্ভিদ খায়৷ সার্ডিন ও অ্যান্চোভির মতো মাছেরও প্ল্যাংকটনের প্রয়োজন রয়েছে৷ অর্থাৎ জেলিফিশ সমুদ্রের বাকি প্রাণীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা চালিয়ে যায়৷''

এ কারণে জেলেদের সমস্যা হচ্ছে৷ দেশের দক্ষিণে জেলেরা নৌকা ছাড়াই বিশাল এক জাল দিয়ে মাছ ধরে৷ তাদের সঙ্গে একটি দিন কাটিয়ে একটা চিত্র পাওয়া গেল৷ আজ তাদের ভাগ্য ভালো৷ জালে জেলিফিশের তুলনায় বেশি মাছ ধরা পড়েছে৷ বিজ্ঞানীরা জেলে ও তাদের পরিবারের সঙ্গে কাজ করেন৷ কারণ গত তিন বছরে নতুন প্রজাতির জেলিফিশের আবির্ভাব ঘটেছে এবং অস্বাভাবিক হারে তাদের বংশবৃদ্ধি ঘটছে৷ জেলেদের একজন জানালেন, ‘‘জালে এত জেলিফিশ পড়লে মাছ খুঁজতে তাদের ঝাঁকিয়ে বার করে দিতে হয়৷ জেলিফিশের গায়ে হাত পড়লে গা-হাত-চোখ সব জ্বালা করে৷ ভাগ্য খারাপ থাকলে, মানে মাছের তুলনায় বেশি জেলিফিশ উঠলে সবটাই ফেলে দিতে হয়৷

Quallen Gericht
জেলিফিশ কিন্তু খেতেও মন্দ নয়!ছবি: akeeris/Fotolia.com

রাজধানী টিউনিসের কাছে জেলেরা বিজ্ঞানীদের সঙ্গে জেলিফিশ শিকারে বেরিয়েছেন৷ আজ কিন্তু জেলিফিশরা লুকিয়ে রয়েছে৷ বেশি বাতাস বইলে তারা আরও গভীরে ডুব মারে৷ এই জেলেকে অনেক দূরে যেতে হচ্ছে৷ কারণ সে এলাকাটি ভালোই চেনে, বিশেষ করে কোথায় জেলিফিশদের পাওয়া যাবে, তা ভালোই জানে৷

কিছু প্রজাতির জেলিফিশের ছুঁলে ত্বক বেশি জ্বালা করে৷ এখানকার মানুষকে হয়ত জেলিফিশের সঙ্গেই বসবাস করতে হবে৷ কিন্তু প্রশ্ন হলো, কী ভাবে তা সম্ভব? সমুদ্রবিজ্ঞানী নেজিব জালি বলেন ‘‘সমাধান হলো, হয় মাছ ধরা কমাতে হবে, কিংবা জেলিফিশদেরও মূল্যবান করে তুলতে হবে৷ তাই আমরা এক ল্যাব তৈরি করে সব প্রজাতির জেলিফিশের নমুনা সংগ্রহ করছি৷''

সত্যি জেলিফিশ দিয়ে কসমেটিক শিল্পের মৌলিক উপাদান তৈরি করা সম্ভব৷ গোটা বিশ্বেই এমন উদ্যোগ চলছে৷ ফলে চাহিদাও বাড়ছে৷ টিউনিশিয়ার মানুষ এই প্রবণতা থেকে ফায়দা তুলতে চান৷ বায়োমার-এর কর্মী আসমা টুর্কি বলেন, ‘‘বিশেষ করে গত কয়েক বছরে আমরা বিশাল পরিমাণ জেলিফিশ পেয়েছি৷ ভূমধ্যসাগর ভরে গিয়েছিল৷ তাদের কেন কসমেটিক্স তৈরির কাজে লাগাবো না? একদিন হয়ত ওষুধ তৈরির কাজেও লাগবে৷

অন্য একটি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের জন্যও জেলিফিশ একটা সমস্যা৷ সেটা হলো পর্যটন৷ প্রতি বছর হাজার-হাজার পর্যটক সমুদ্রতটে আসেন৷ তাঁরা মোটেই জেলিফিশের উপদ্রব চান না৷ বহুকাল ধরে এই প্রাণী উৎপাত করে চলেছে৷ লন্ডনের পর্যটক আব্দেলহক জাহুইট বলেন, ‘‘সাঁতার কাটা শুরু করতেই আমার ছেলের গায়ে জেলিফিশ লেগেছে৷ এই তো দেখুন৷ আমার ছেলে আর মেয়ে অনেকগুলি দেখেছে৷ কোন আঙুলে লেগেছে যেন? সত্যি বলতে কি, বড্ড স্ট্রেসের কারণ৷ ব্রিটেনের এসেক্স-এর পর্যটক ডমিনিক বিয়র্শ বলেন, ‘‘সাত দিন ধরে এখানে রয়েছি এবং আমরা অনেক জেলিফিশ দেখেছি৷ সকালের দিকে হাতে গোনা কয়েকটা, তারপর তাদের সংখ্যা বাড়ে – বিশেষ করে বিকালের দিকে, ৫টা বা ৬টার সময়৷''

বিজ্ঞানীরা তাই প্রথম বার টিউনিশিয়ায় জাল টাঙিয়েছেন৷ সমুদ্রে স্নানের জায়গা থেকে জেলিফিশ দূরে রাখার চেষ্টা চলছে৷ তাঁরা পর্যটকদের কাছেও তাঁদের অভিজ্ঞতা জানতে চাইছেন৷ বিভিন্ন সমুদ্রতট ও জেলিফিশদের ঘনত্ব মানচিত্রে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে৷ বিজ্ঞানীরা এই লক্ষ্যে নমুনা সংগ্রহ করছেন এবং জেলিফিশ গণনা করছেন৷ সমুদ্রবিজ্ঞানী সোনিয়া গুয়েরুন বলেন, ‘‘আজ সমুদ্রতট শুধু আমাদের জন্য৷ স্রোতের টান ও বাতাসের গতির কারণে এখানে জেলিফিশ নেই বললেই চলে৷''

প্রশ্ন হলো, জেলিফিশ না থাকলে সেটা কি বিজ্ঞানীদের জন্য সুখবর?গুয়েরুন বলেন, ‘‘বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এটা অবশ্যই দুঃখজনক৷ আমাদের কাজও কমে যাবে৷ তবে পর্যটক ও জেলেদের জন্য এটা সুখবর বৈকি৷''

সন্ধ্যাবেলায় পর্যটকরা হোটেলে ফেরার পর বিজ্ঞানীরা জাল নামিয়ে ফেলতে পারেন৷ টিউনিশিয়ায় যাতে আবার পর্যটক আসেন এবং তাঁদের জেলিফিশে ভরা সমুদ্রতট দেখতে না হয়, সেটাই হলো কাম্য৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান