1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জুলাইতে পাওয়া যাবে ১২ হাজার টাকার ল্যাপটপ

৩০ মে ২০১১

গত দুই বছর ধরেই শোনা যাচ্ছিল বাংলাদেশে ১৫ হাজার টাকা বা তার চেয়েও কমদামে ল্যাপটপ পাওয়া যাবে৷ এবার সে ব্যাপারে মোটামুটি একটা নিশ্চিত খবর পাওয়া গেছে৷ জুলাইতেই বাজারে আসছে এই ল্যাপটপ৷

https://p.dw.com/p/11QRE
দেশের উন্নতির জন্যও চাই সস্তার ল্যাপটপছবি: picture alliance /dpa

কবির আহমেদ৷ মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান৷ পড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ আগ্রহ আছে কম্পিউটারে৷ কিন্তু সেটা কিনে দেয়ার সাধ্য নেই তার বাবার৷ তবে এবার হয়তো সে নিজেই একটি ল্যাপটপ কিনতে পারবে৷ কারণ টিউশনি করে সে প্রায় আট হাজার টাকার মতো জমিয়েছে৷ সঙ্গে বাবা যদি আরও কিছু দেন, তাহলেই জোগাড় হয়ে যাবে ল্যাপটপ কেনার টাকা৷

এই সুযোগটা করে দিচ্ছে সরকার৷ কারণ দেশেই কমদামে ল্যাপটপ বানানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে৷ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু সম্প্রতি বলেছেন আগামী মাস মানে জুন থেকেই এই ল্যাপটপ পাওয়া যাবে৷ তবে প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত এক ব্যক্তি বলছেন বাজারে ল্যাপটপ আসতে আসতে জুলাই মাস হয়ে যেতে পারে৷ কারণ ল্যাপটপ তৈরির জন্য যে যন্ত্রপাতি প্রয়োজন সেগুলো মালয়েশিয়া থেকে এখন বাংলাদেশের পথে রয়েছে৷ সেগুলো এসে পড়লেই শুরু হবে কারখানা বসানোর কাজ৷ এরপর ল্যাপটপ তৈরি৷ তারপর পরীক্ষামূলক ব্যবহার৷ এই সব প্রক্রিয়া শেষ হতে পুরো জুন মাস লেগে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি৷ এই ব্যক্তি কাজ করেন বাংলাদেশের একটি বেসরকারি কোম্পানি ‘টুএম কর্পোরেশন'এর সঙ্গে৷ এই কোম্পানির সঙ্গে রয়েছে আরও দুটি কোম্পানি৷ যার মধ্যে একটি হলো সরকারি ‘টেলিফোন শিল্প সংস্থা' বা টিএসএস, যাদের কাজ টেলিফোনের যন্ত্রপাতি তৈরি করা৷ আর দ্বিতীয় কোম্পানিটি মালয়েশিয়ার৷ নাম ‘টিএফটি টেকনোলজি গ্রুপ'৷ তারা অডিওভিসুয়াল পণ্য ও এলসিডি মনিটর ও টিভির যন্ত্রপাতি তৈরি করে থাকে৷

কমদামে ল্যাপটপ তৈরির কাজ করতে এই তিন কোম্পানি মিলে গঠিত হয়েছে একটি কোম্পানি, যার নাম দেয়া হয়েছে ‘টিএসএস-টুএম-টিএফটি টেকনোলজি লিমিটেড'৷

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলছেন ল্যাপটপের দাম হবে ১২ হাজার টাকা৷ তাই অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছে, এই ল্যাপটপ বেশিদিন টিকবে তো? এ ব্যাপারে টুএম কর্পোরেশন'এর ঐ ব্যক্তি বলছেন, দাম কম হলেও মান হবে বাজারের অন্যান্য ল্যাপটপের মতোই৷

সরকার বলছে, গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষের কাছে ল্যাপটপ পৌঁছে দিতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ এছাড়া এতে তরুণদের জন্য চাকরির সুযোগ তৈরি হবে এবং সেই সঙ্গে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচানো যাবে৷ কারণ দেশেই ল্যাপটপ তৈরি হলে বাইরে থেকে ল্যাপটপ আমদানি কমে যাবে৷

Schule und Bildung
ল্যাপটপ বিহীন জীবন প্রায় অসম্ভব তরুণ প্রজন্মের কাছেছবি: Fotolia/Franz Pfluegl

তবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েটের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলছেন, গ্রামের মানুষের হাতে ল্যাপটপ তুলে দেয়ার আগে সেখানে বিদ্যুৎ সহ অন্যান্য অবকাঠামোগত সুবিধা পৌঁছে দেয়া দরকার৷ তিনি বলেন, তরুণ সমাজ যদি ঠিক কাজে ল্যাপটপ ব্যবহার করে তাহলে দেশের অনেক উন্নতি হবে৷

এদিকে ‘অ্যামেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি - বাংলাদেশ'এর অধ্যাপক ড. এবিএম সিদ্দিক হোসেইন বলছেন সরকার থ্রিজি লাইসেন্স দেয়ার কাজ শুরু করেছে৷ এটা হলে ইন্টারনেটের গতি বাড়বে৷ সঙ্গে কমদামে ল্যাপটপ পেলে উপকৃত হবে তরুণরা৷

বাংলাদেশে ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে ‘আউটসোর্সিং' এর কাজ৷ আউটসোর্সিং হলো - ঘরে বসে কম্পিউটারে কাজ করে টাকা আয়৷ এর জন্য প্রয়োজন একটি কম্পিউটার আর সঙ্গে ইন্টারনেট কানেকশন৷ ল্যাপটপের পর থ্রিজি এসে গেলে দুটোই পেয়ে যাবে তরুণরা৷ ফলে চাইলে তারা আউটসোর্সিং কাজে অংশ নিতে পারবে৷ এ ধরনের কাজের মধ্যে রয়েছে ডাটা এন্ট্রি ও বিভিন্ন কোম্পানির ওয়েবসাইট তৈরির কাজ৷ এছাড়া কোনো কোম্পানির ওয়েবসাইট নিয়মিত হালনাগাদ করার কাজও আউটসোর্সিং এর মধ্যে পড়ে৷ ওয়েবসাইটের কাজের জন্য কম্পিউটারে বিশেষ জ্ঞান দরকার হলেও ডাটা এন্ট্রির জন্য সেটার প্রয়োজন নেই৷ তাই সাধারণ ব্যবহারকারীরাও কমদামে ল্যাপটপ কেনার সুবিধা নিতে পারেন৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক