জিত পলেরই
১২ জুলাই ২০১০এবারের বিশ্বকাপের শুরুতেই ভাগ্য গণনার কাজটি মানুষের হাত থেকে বাগিয়ে নেয় অক্টোপাস পল৷ জার্মানির প্রতিটি খেলার ফলাফল আগাম জানিয়ে যাচ্ছিলো সে৷ পলের এই সাফল্য দেখেই কি না সিঙ্গাপুরের জ্যোতিষী এম মুনিয়াপ্পন ভাগ্য গণনায় নামিয়ে দেন তাঁর তোতাটিকে৷ মানি মানে তোতা পাখিটি শুরুটা ভালো করলেও সেমিফাইনালে এসে তাল হারিয়ে ফেলে৷ ফাইনালিস্ট হিসেবে সে বেছে নেয় উরুগুয়েকে৷ উরুগুয়ে যখন নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে যায়, তখন আবার ফাইনালে স্পেনের হারের ভবিষ্যদ্বাণী করে৷ এটাও মেলেনি৷ অবশ্য ফাইনাল নিয়ে কিছুটা দোটানায় ছিলো মানি৷ কারণ প্রথমে সে স্পেনের জয়ের কথা বলে পরে উল্টে যায়৷
অন্যদিকে অক্টোপাস পল যে আটটি খেলার কথা আগাম বলেছিলো, তার সবই ঠিকঠাক মিলেছে৷ সেমিফাইনালে তাকে অবশ্য একটু বেকায়দায় পড়তে হয়েছে৷ তা অবশ্য ভুল বলার জন্য নয়৷ পলের বাস জার্মানির ওবারহাউজেন শহরের সি-লাইফ অ্যাকুয়ারিয়ামে৷ আর সেমিফাইনালে স্পেনের কাছে জার্মানির হারের কথা বলে অনেক জার্মানের রোষাণলে পড়েছিলো সে৷ কেউ কেউ তাকে খেয়ে ফেলার কথাও বলেছিলো৷ ওই সময়ে পল পক্ষে পেয়েছিলো অবশ্য স্প্যানিশদের৷ স্পেনের প্রধানমন্ত্রী হোসে লুই রদ্রিগেজ সাপাতেরো তো বলেই দিলেন, প্রয়োজনে স্পেন থেকে দেহরক্ষী যাবে পলের জন্য৷ পলকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার কথাও বলেন স্পেনের শিল্পমন্ত্রী মিগেল সেবাস্তিয়ান৷
জলের প্রাণী পল আর স্থলের প্রাণী মানির ভবিষ্যৎ বলার ধরনটি ভিন্ন৷ পল যে ট্যাংকে থাকতো, খেলার আগে সেখানে দুটি বাক্সে খাবার ফেলা হতো৷ বাক্স দুটিতে থাকতো খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের পতাকা৷ যে পতাকার বাক্সের খাবারটি পল সাবাড় করতো, ধরে নেওয়া হতো তারাই জিতবে৷ অন্যদিকে মানির সামনে দুটি কাগজ মুড়িয়ে দেওয়া হতো৷ এর ভেতরে লুকানো থাকতো দুই দেশের পতাকা৷ এর মধ্যে একটিকে জয়ী হিসেবে বেছে নিত মানি৷ মানিকে দিয়ে খেলার ভবিষ্যৎবাণী করে আবার টাকাও নিতেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুনিয়াপ্পন৷ বিশ্বকাপের সময় বেশ জমে উঠেছিলো ব্যবসা৷ এখন মানি কী করবে, জানতে চাওয়া হলে মুনিয়াপ্পন বলেন, আবার আগের ব্যবসায় ফিরবে, মানুষের ভাগ্য গণনায়৷
আগামী বিশ্বকাপে পলকে ভবিষ্যৎ বলতে দেখা যাবে না৷ কারণ অক্টোপাসেরা সাধারণ তিন বছর বাঁচে৷ তবে তোতার আয়ু এর চেয়ে বেশি৷ তাই তার সময় আছে৷ দেখা যাক, পলের কাছে এবার হারলেও আগামী বিশ্বকাপে মানি ঠিক ঠাক সব বলতে পারে কি না৷
প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক