জিকা ভাইরাস ছড়ানো মশা মারতে মাছ ও ব্যাঙ
দক্ষিণ অ্যামেরিকায় জিকা ভাইরাসের ‘ভেক্টর’ প্রতিরোধে নানা ধরনের পন্থা নেওয়া হচ্ছে – তাদের অধিকাংশই প্রকৃতিদত্ত অথবা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পদ্ধতিতে সৃষ্ট৷ লক্ষ্য হলো, মশার লার্ভা বা কীট বিনষ্ট করে মশা কমানো৷
মশককীট খেকো মাছ
এল সালভাদর-এর সান দিয়েগো সৈকতে কিশোররা জাম্বো নামের এক ধরনের মোটা স্লিপার মাছ ধরে আনে৷ পরে জল রাখার পিপেয় এই জাম্বো মাছ ছেড়ে দিলে, সেই মাছ মশার লার্ভে বা কীটগুলোকে খেয়ে ফেলে৷ ‘এডিস এজিপ্টাই’ মশার কামড় থেকেই জিকা ভাইরাস ছড়ায়৷ (ছবিতে ব্রাজিল-এর একটি মিষ্টি জলের মাছকে দেখা যাচ্ছে)৷
মশা দিয়ে মশা মারা
জিকা ভাইরাস মায়ের পেটের ভ্রুণে মাইক্রোসেফালি রোগের অবতারণা ঘটায়, যা থেকে নবজাতকের মস্তক ও মস্তিষ্কের বিকাশ স্বাভাবিকের তুলনায় ছোট হয়৷ নয়ত জিকা ভাইরাসের জ্বর প্রাণঘাতী নয়৷ কলম্বিয়া আর ব্রাজিলেই জিকা ভাইরাসের প্রকোপ আপাতত সবচেয়ে বেশি৷ কলম্বিয়ার আন্তিয়োকিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা মশকদের মধ্যে ওলবাখিয়া নামের একটি জীবাণু ছড়ানোর চেষ্টা করছেন, যার ফলে এডিস মশা মানুষকে সংক্রমিত করতে পারবে না৷
মশাখেকো ব্যাঙ
যেখানে বিপদ, সেখানেই ব্যবসা ফাঁদার সুযোগ ও সম্ভাবনা৷ তাই আর্জেন্টিনায় সাত ডলার দরে ব্যাঙ বিক্রি হচ্ছে – সেই ব্যাঙ নাকি মশার বংশ ধ্বংস করে মানুষজনকে এডিস আর জিকার হাত থেকে বাঁচাবে৷ এ কাজে ব্যাঙ নাকি মশা তাড়ানোর ক্রিমের চেয়ে বেশি কার্যকর৷
অরগ্যানিক কীটনাশক
‘এডিস এজিপ্টাই’ মশা শুধু জিকা নয়, ডেঙ্গু রোগের ভাইরাস ও চিকুঙ্গুনিয়া জ্বরের ভাইরাসও বহন করে৷ এই মশার কীট ধ্বংসের জন্য পেরুতে কোকো, ইউকা, অ্যাসপারাগাস আর আলু মিশিয়ে একটি ‘বায়োলার্ভিসাইড’ বা অরগ্যানিক কীটনাশক তৈরি করা হচ্ছে৷
তেজস্ক্রিয়তা দিয়ে মশার প্রজনন ক্ষমতা রোধ
ব্যাপারটা নিয়ে আপাতত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলেছে৷ মূল ধারণাটা হলো, মশকদের উপর রশ্মি বিকিরণের ফলে পুরুষ মশারা নিষ্ফলা হয়ে পড়বে, কাজেই নারী মশারা ডিম পাড়তে পারবে না৷
ধোঁয়া দিয়ে মশা তাড়ানো
এককালে গোয়ালঘরে যা করা হতো, জিকা-ডেঙ্গুর তাড়নায় সেই পুরনো পদ্ধতিই এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে যখন অধিকাংশ দেশেই ডিডিটি ছড়ানো নিষিদ্ধ৷ মুশকিল এই যে, ধোঁয়া দিয়ে মশা তাড়ানো গেলেও, মশার ডিম ও কীট অক্ষত থেকে যায়৷