1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জাহাজ ভাঙায় জার্মানির লজ্জা

১৭ এপ্রিল ২০১৭

২০১৬ সালে সারা বিশ্বে ৮৬২টি জাহাজ ভাঙা হয়েছে বলে জানিয়েছে ‘এনজিও শিপব্রেকিং প্ল্যাটফর্ম'৷ এর মধ্যে ৬৬৮টি ভেঙেছেন বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের শ্রমিকরা৷

https://p.dw.com/p/2bGnN
ছবি: Roberto Schmidt/AFP/GettyImages

ব্রাসেলস ভিত্তিক শিপব্রেকিং প্ল্যাটফর্ম পরিবেশ, মানবাধিকার ও শ্রম অধিকার নিয়ে কাজ করা ১৯টি সংগঠনের একটি জোট৷ জাহাজা ভাঙা ইয়ার্ডে শ্রমিকদের নিরাপদ কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং পরিবেশসম্মত উপায়ে জাহাজ ভাঙার কাজ নিশ্চিত করতে কাজ করে এই প্ল্যাটফর্ম৷

গত ফেব্রুয়ারি মাসে ২০১৬ সালের জাহাজ ভাঙা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করে শিপব্রেকিং প্ল্যাটফর্ম৷ এতে বলা হয়, জাহাজ ভাঙার নীতি অনুসরণে সবচেয়ে খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে জার্মানি৷ গত বছর দেশটির মোট ৯৯টি জাহাজ ভাঙা হয়৷ এর মধ্যে ৯৭টিই ভাঙা হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়, অর্থাৎ বাংলাদেশে, ভারত ও পাকিস্তানে৷ আর এই ৯৭টি জাহাজের ৪০ শতাংশ ভেঙেছেন বাংলাদেশের শ্রমিকরা৷ বাংলাদেশের জাহাজ ভাঙার পরিবেশকে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বাজে মনে করা হয়, বলে জানিয়েছে শিপব্রেকিং প্ল্যাটফর্ম৷

গত বছর জার্মানির জাহাজ নির্মাতাদের মধ্যে হানসা মারে-র ১২টি জাহাজ ভাঙার জন্য বিক্রি করা হয়৷ এছাড়া আলফা শিপ এফ., ল্যাইসৎস ও পেটার ড্যোলের সাতটি এবং ড. পেটার্স, ক্যোনিশ অ্যান্ড সি, নর্ডডয়চে ফ্যারম্যোগেন ও রিকমার্সের ছয়টি জাহাজ বাংলাদেশে ভাঙার জন্য বিক্রি করা হয়৷ খাবারের বিখ্যাত ব্র্যান্ড ড. ওয়েটকার’ও তাদের একটি পুরনো কনটেনার শিপ বাংলাদেশে পাঠিয়েছে৷

জার্মান জাহাজ নির্মাতাদের এমন পদক্ষেপের সমালোচনা করে জার্মান সরকারের কাছে উদ্বেগ জানিয়েছেন বিষাক্ততা ও মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা৷

শ্রমিকের মৃত্যু

জার্মানির রেনাটে এন. কোম্পানির একটি জাহাজ ভাঙার সময় চট্টগ্রামের সেইকো ইয়ার্ডে তিনজন শ্রমিক প্রাণ হারান৷ আহত হন আরও তিনজন৷ নভেম্বরে জার্মানির আরও একটি জাহাজ ভাঙার সময় একজন নিহত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছে শিপব্রেকিং প্ল্যাটফর্ম৷

সংস্থার নির্বাহী পরিচালক প্যাট্রিসিয়া হাইডেগার বলেন, জার্মান জাহাজ নির্মাতাদের জাহাজ ভাঙতে গিয়ে শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম নয়৷

শিপব্রেকিং প্ল্যাটফর্ম জানিয়েছে, ২০১৬ সালে জাহাজ ভাঙতে গিয়ে বাংলাদেশে ২২ জন শ্রমিকের প্রাণ যাওয়ার খবর তারা পেয়েছে৷ এছাড়া ২৯ জন শ্রমিক মারাত্মক আহত হয়েছে বলেও জানায় সংস্থাটি৷

এদিকে, ২০১৬ সালে গ্রিসের ১০৪টি জাহাজ ভাঙতে দক্ষিণ এশিয়ায় পাঠানো হয়েছিল৷ সংখ্যার হিসেবে এটি সর্বোচ্চ৷

তালিকা প্রকাশ করা হবে

ইউরোপীয় ইউনিয়ন চলতি বছর সারা বিশ্বের জাহাজ ভাঙা কোম্পানির একটি তালিকা প্রকাশ করবে, যারা পরিবেশ রক্ষা ও শ্রমিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে৷ গতবছর ইউরোপে অবস্থিত এমন ১৮টি কোম্পানির নাম প্রকাশ করেছিল ইইউ

এদিকে, জার্মান কনটেনার লাইন হাপাগ-লয়েড ইতিমধ্যে জানিয়েছে, এখন থেকে তারা ইইউ-র তালিকায় থাকা ইয়ার্ডগুলোতে জাহাজ ভাঙার জন্য পাঠাবে৷

পতাকা পরিবর্তন

জাহাজ নির্মাতারা জাহাজ ভাঙার ক্ষেত্রে তাদের দায়িত্ব এড়াতে ‘জিএমএস’ ও ‘উইরানা’র মতো কোম্পানির কাছে তাদের জাহাজ বিক্রি করে৷ ঐ কোম্পানিগুলো জাহাজ ভাঙা কোম্পানির কাছে জাহাজ বিক্রির আগে পতাকা পরিবর্তন করে৷ এক্ষেত্রে পালাও, কমোরস এবং সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস নামক ছোট ছোট দেশগুলোর পতাকা ব্যবহার করা হয়৷

রোব্যাঁ দে বোয়া নামে ফ্রান্সের একটি পরিবেশ বিষয়ক বেসরকারি সংগঠন জানিয়েছে, ২০১৬ সালে ১৮৪টি জাহাজ পতাকা পরিবর্তন করেছে৷ এর প্রায় অর্ধেক জাহাজই ইউরোপের৷ আর তারও অর্ধেকের বেশি জাহাজ জার্মানির৷

জেডএইচ/ডিজি (শিপব্রেকিং প্ল্যাটফর্ম, রোব্যাঁ দে বোয়া)

আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান