জার্মান রেস্টুরেন্টে যাওয়ার আগে যা জানা প্রয়োজন
একেক দেশের সংস্কৃতি একেক রকম৷ তাই জার্মানির মধ্যমানের কোনো রেস্টুরেন্টে গিয়ে নিজ দেশের রেস্তোরাঁর মতো আচরণ হয়ত আশা করা উচিত নয়৷ এক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা যেতে পারে৷ ছবিঘরে থাকছে সে তথ্যগুলো৷
নিজেই আসন খুঁজে নিন
জার্মান রেস্তোরাঁয় কেউ আপনাকে হাসিমুখে অভ্যর্থনা জানাবে – এমনটা ভেবে রাখলে আপনাকে হয়ত কষ্টই পেতে হবে৷ তাই সেটা আশা না করে নিজেই নিজের টেবিলটি বেছে নিন৷ ছোট ক্যাফেতে জায়গা না থাকে চিন্তা নেই৷ আপনি চাইলেই একটি টেবিলে বসে থাকা কারও সঙ্গে তাঁর অনুমতি নিয়ে বসতে পারেন৷
একসঙ্গে মেনু দেখা
রেস্টুরেন্টের একটা টেবিলে সাধারণত একটাই মেনু বই থাকে৷ তাই বন্ধুবান্ধব সহ গেলে সবাইকে একসঙ্গে একটা মেনুই দেখতে হবে৷
হাত উঁচিয়ে কাউকে ডেকে নিন
চেয়ারে বসার সঙ্গে সঙ্গেই কেউ আপনার কাছে এসে অর্ডার নেবেন, সেটা ভাবা ঠিক নয়৷ চেয়ারে বসার পর আপনারই কাজ হবে কাউকে দেখতে পেলে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করা৷ অনেকসময় দেখা যায়, কেউ একজন অর্ডার নিচ্ছেন, আর সে সময় টেবিল পরিষ্কার করছেন আরেকজন৷ সুতরাং অবাক হবেন না৷
তৃষ্ণার্ত হয়ে রেস্টুরেন্টে যাবেন না
রেস্তোরাঁয় গিয়ে বিনামূল্যে পানি পাওয়ার আশা না করাই ভালো৷ তাই পিপাসা নিয়ে রেস্টুরেন্ট ঢুকবেন না৷ জার্মানিতে পানির দামও কম নয়৷ সাধারণত বিয়ার আর পানির দাম প্রায় সমান হয়ে থাকে এখানে৷ ইচ্ছেমতো খালি বোতল পূরণ করারও সুযোগ নেই৷
খাওয়ার আগে ভেবে নিন
অনেক রেস্টুরেন্টে আপনাকে হয়ত অর্ডার করা খাবারের সঙ্গে বিনামূল্যে ব্রেড দিতে পারে৷ তবে দক্ষিণ জার্মানিতে গেলে সেখানকার অনেক পাব-এর টেবিলে আগে থেকেই ব্রেড রাখা দেখতে পাবেন৷ তবে সাবধান! সেগুলো বিনামূল্যের নাও হতে পারে৷ ওয়েটার ঠিকই ব্রেড-এর হিসেব রাখতে পারেন এবং বিল দেয়ার সময় আপনি যে কয়টা খেয়েছেন তার দাম ধরতে পারেন৷
কাঁটা চামচের ভাষা
প্রায় ঘণ্টাখানেক আগে খাওয়া শেষ হয়েছে অথচ এখনও কেউ প্লেট নিয়ে যাননি! তাহলে বুঝে নিন যে, আপনি কাঁটা চামচের ভাষাটা জানেন না৷ ভাষাটা এরকম – আপনি যদি খাওয়ার পর চামচটি প্লেটের ওপর, তিনটা বা চারটা বাজার সময় ঘড়ির কাঁটাটি যেভাবে থাকে সেভাবে না রাখেন, তাহলে ওয়েটার বুঝতে পারবে না যে আপনার খাওয়া শেষ হয়েছে৷
‘আইস কিউব’ আশা করবেন না
রেস্টুরেন্টগুলিতে সাধারণত আইস কিউব ছাড়াই কোক, স্প্রাইট বা জুস জাতীয় পানীয় ‘সার্ভ’ করা হয়৷ কারণ নন-অ্যালকোহলিক পানীয়-র তাপমাত্রা ঘরের তাপমাত্রার চেয়ে কম হওয়াটা স্বাস্থ্যসম্মত নয়, এমনটাই মনে করা হয় জার্মানিতে৷
বাথরুমে যাওয়ার আগে পয়সা নিয়ে নিন
কারণ টয়লেটে ঢোকার আগেই আপনি দেখতে পারবেন যে, কেউ একজন টেবিলে একটি প্লেট রেখে বসে আছেন৷ তাঁর কাজ হচ্ছে বাথরুম পরিষ্কার রাখা৷ বিনিময়ে আপনার কাছ থেকে ‘কিছু’ আশা করেন তিনি৷ তাই টেবিল ছেড়ে বাথরুমে যাওয়ার আগে পকেটে ৫০ সেন্ট ঢুকিয়ে নিতে ভুলবেন না যেন!
খাবার কেমন লাগলো?
টেবিল পরিষ্কারের সময় ওয়েটার আপনাকে জিজ্ঞেস করবেন – ‘খাবার কেমন লাগলো?’ তখন প্রায় সবাই ‘ভালো’ই বলে থাকেন৷ তবে আপনি যদি ‘খুব খারাপ’ বলে উত্তর দেন, তাহলে ওয়েটার হয়ত বিনয়ের ভঙ্গিতে আপনার সঙ্গে একমত হওয়ার কথা জানাবে৷
বখশিশ
বিল দেয়ার ক্ষেত্রে সাধারণত ‘পূর্ণ’ করে দেয়ার একটা চল আছে জার্মানিতে৷ ধরুন, আপনার কফির দাম যদি ১.৮০ ইউরো হয়, তাহলে বখশিশ সহ দুই ইউরো দেয়া হয়৷ আর খাবারের দাম যদি ৩৬.৪০ ইউরো হয় তাহলে আপনি ৩৮ ইউরো দিতে পারেন৷ ক্ষেত্র বিশেষে সেটা ৩৯ কিংবা ৪০ ইউরোও হতে পারে৷