1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন বিষয় গ্লোবাল চেঞ্জ ইকোলজি

১ নভেম্বর ২০১০

ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরিবেশ রক্ষার গুরুত্বের কথা বিবেচনায় শুরু করেছে নতুন একটি বিষয়৷ নাম গ্লোবাল চেঞ্জ ইকোলজি৷ ইদানিং আইটি-র দিকেও ঝুঁকে পড়েছে অনেকে৷

https://p.dw.com/p/PvJR
বাচাও এই পৃথিবীকে, শ্লোগান সর্বত্রছবি: AP

জার্মানির বাভারিয়া রাজ্যে ওবারফ্রাঙ্কেন শহরের পাহাড়ের কাছে জড়ো হয়েছে বায়রয়েথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী৷ সঙ্গে প্রফেসর ইয়োহানেস লুয়েরসও রয়েছেন৷ ঝলমলে রোদ৷ প্রফেসর বোঝাচ্ছেন৷ পরিবেশ রক্ষার বিভিন্ন দিক তুলে ধরছেন তিনি৷ ক্লাসরুমের পরিবর্তে বেছে নেওয়া হয়েছে পাহাড় ঘেরা জঙ্গল আর সবুজকে৷ খুব কাছ থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের দেখানো হচ্ছে আবহাওয়া ও পরিবেশের পরিবর্তন আর তার নেতিবাচক প্রভাব৷ ছাত্রী ডানিয়েলার ভাষ্য, ‘‘ইদানিং যে বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিজ্ঞানীরা মাথা ঘামাচ্ছেন তা হল আবহাওয়া ও পরিবেশের পরবর্তন৷ তবে আমাকে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি নাড়া দিয়েছে তা হল এই পরিবর্তনের মারাত্মক ফলাফলগুলো৷ ভবিষ্যতে কী থাকবে আর কী থাকবে না – তা আমি কিছুতেই মাথায় ঢোকাতে পারছি না৷''

আবেগ আপ্লুত ছাত্র-ছাত্রী

ডানিয়েলা ক্রেট্স দ্বিতীয় সেমেস্টারের ছাত্রী৷ বিষয় - গ্লোবাল চেঞ্জ ইকোলজি৷ ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানো হয়, বোঝানো হয় আবহাওয়া পরিবর্তনের কথা, দেখানো হয়, জানানো হয় বিভিন্ন নেতিবাচক দিকগুলো৷ বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বাড়ছে৷ তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়৷ গাছপালার মধ্যে কোন ধরণের পরিবর্তন আসছে তা সামনা সামনি দেখানো হয়৷ এছাড়া পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ক্ষরা, বন্যা, বৃষ্টিপাত বাড়ছে৷ প্রাকৃতিক এসব দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন দিক নিয়েও আলোচনা করা হয়৷ ডানিয়েলা ক্রেট্স বড় হয়েছেন ক্যানাডায়৷ সেখানকার হাই স্কুলে পরিবেশ ব্যবস্থাপনা বিষয় নিয়ে তিনি পড়াশোনা করেছেন৷

Biodiversität Flash-Galerie
ব্রাজিলের এই বন ও নদী জলবায়ু পরিবর্তনের ধকলের মুখোমুখিছবি: picture-alliance/dpa

বায়রয়েথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মত গ্লোবাল চেঞ্জ ইকোলজি বিষয়ে মাস্টার্স চালু করা হয়েছে৷ বিভাগের প্রধান প্রফেসর কার্ল বায়ারকুনলাইন৷ তিনি জানান, তাঁর প্রয়োজন তরুণ, উৎসাহ-উদ্দীপনায় ভরা একটি প্রজন্ম যারা বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে আগ্রহী৷ যারা আবহাওয়া এবং পরিবেশের এই পরিবর্তন নিয়ে কাজ করতে পারবে, বিষয়টি বুঝবে৷ বায়ারকুনলাইন বললেন, ‘‘এটা নামে মাত্র মাস্টার্স স্টাডি৷ আসলে আমরা এমন কিছু ছেলে-মেয়ে খুঁজছি যারা এই বিষয়টি নিয়ে শুধু পড়াশোনা নয় পরবর্তী সময়ে গবেষণাও চালিয়ে যাবে৷ যারা এই বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকবে৷ তাদের আমরা চাই যারা সত্যিকার অর্থেই আবহাওয়া ও পরিবেশ নিয়ে চিন্তাভাবনা করে৷ একারণে আমি নিজেই ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে একান্তে সময় কাটাই৷ প্রতিটি বিষয় তাদের খুব কাছ থেকে দেখাই, বোঝাই৷''

পড়াশোনার চাপে ক্লান্ত ছাত্র-ছাত্রীরা

তবে এই বিষয়টির অত্যন্ত গভীরে যাওয়ারও একটি নেতিবাচক দিক আছে৷ চতুর্থ সেমেস্টারের ছাত্র হোলগার ডেম্পেল৷ তিনি জানান এত অল্প সময়ে এত বেশি পড়াশোনা এবং গবেষণা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়৷ ডেম্পেল জানান, ‘‘কত কিছু পড়ার আছে, জানার আছে তা বলে বোঝানোর মত নয়৷ কত কাজ বাকি, কত কাজ আছে – কোন কিছুরই শেষ নেই৷ মাস্টার্সের এই কোর্স যথেষ্ট নয়৷ গত ছুটিতে আমাকে পরিবেশ বিষয়ে ইন্টার্নশিপ করতে হয়েছিল৷ ছুটি কাটাতে পারিনি৷ ইন্টার্নশিপ না করলে পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়তাম৷ তবে একথা সত্যি যে এই বিষয়ে পড়াশোনার ফলে আমি অনেক কিছু শিখেছি, জেনেছি৷ ভবিষ্যতে প্রতিটি শিক্ষাই কাজে লাগবে৷ আবহাওয়া ও পরিবেশ রক্ষায় – কাজ পেতে কষ্ট হবে না৷''

গ্লোবাল চেঞ্জ ইকোলজি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করলে ভবিষ্যতে এই ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ জার্মানিতে রয়েছে৷ তবে পড়াশোনা এবং গবেষণায় বেশ ভাল ফলাফল করা জরুরি৷ কারণ প্রতিটি সেমেস্টারের ফাঁকে ফাঁকে ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন কোম্পানি বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপের জন্য পাঠানো হয়৷ সেসব প্রতিষ্ঠান থেকেই পরবর্তীতে ডাক আসে – কাজ করার, ক্যারিয়ার গড়ার, প্রকৃতিকে বাঁচানোর৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক