জার্মান পত্রপত্রিকায় আইপিএল কাণ্ড
২৬ এপ্রিল ২০১০থারুর'এর সক্রিয় সাহায্যে গড়ে ওঠা ইণ্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের নতুন কোচি টিমের শেয়ার তাঁরই বন্ধু বলে কথিত দুবাই ভিত্তিক এক মহিলা ব্যবসায়ীকে দেয়া হয়, এরকম অভিযোগের মুখেই থারুর পদত্যাগ করেছেন৷ তিনি অবশ্য লোকসভায় বলেছেন যে কোন রকম অবৈধ কাজ তিনি করেননি৷ বার্লিনের দৈনিক ‘‘টাগেসসাইটুং'' পত্রিকায় দিল্লি থেকে পাঠানো গেয়র্গ ব্লুমের দীর্ঘ নিবন্ধের উপশিরোনামে লেখা হয়েছে : ‘‘তিনি ছিলেন বেস্টসেলার লেখক, জাতিসংঘের কূটনীতিক এবং সর্বশেষ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ কিন্তু তাও শশী থারুরকে পদত্যাগ করতে হল৷''
টাগেসসাইটুং-এর নিবন্ধকার লিখছেন : থারুর নিজেকে লেখক, শান্তির রক্ষক, শরণার্থীদের সাহায্যকারী এবং মানবাধিকারবাদী হিসেবে দেখে থাকেন৷ তিনি ছিলেন বিশ্বায়নের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং শাসক কংগ্রেস পার্টির শুটিং স্টার৷ ভারতের সফলতম লেখকদের তিনি অন্যতম৷ জাতিসংঘের মহাসচিব তিনি প্রায় হয়ে যাচ্ছিলেন আর কি৷ ভারতের এনডিটিভি এই তো মার্চ মাসে তাঁকে বছরের সেরা ‘নিউ এজ' রাজনীতিক বলে নির্বাচিত করে৷ টুইটারে তাঁর নিবন্ধিত পাঠক সংখ্যা ৭০০.০০০৷ তাঁকে এমনভাবে দেখা হচ্ছিল যে তিনি যেন ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা জওহরলাল নেহেরুরই প্রতিমূর্তি৷ মনে হচ্ছিল, অন্য সবার চেয়ে ভারতের অনেকটাই তিনি তাঁর মধ্যে ধারণ করছেন৷ কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি এবং এক নারীর প্রতি তাঁর ভালবাসার কারণে থুবড়ে পড়লেন এই মন্ত্রী৷ আপাতত তাঁর দিন শেষ৷ গভীর এক পতন হল তাঁর৷
মন্ত্রী এবং সংসদ হিসেবে থারুর'এর ওপর দ্বৈত চাপ কি তাঁর জন্য মাত্রাধিক হয়ে পড়েছিল ? এই প্রশ্ন তুলে নিবন্ধকার গেয়র্গ ব্লুম লিখেছেন : প্রতিদিনই তাঁর নির্বাচনী এলাকা থেকে শত শত প্রশ্ন এসে পৌঁছাতো তাঁর দপ্তরে৷ একই সঙ্গে এক বিশ্ব শক্তির পররাষ্ট্রনীতি চালিত করার দায়িত্ব পড়েছিল তাঁর৷ ভারতের সংবিধান অনুযায়ী সাংসদের মধ্য থেকেই মন্ত্রী হতে হবে৷ যাতে জনগণের সঙ্গে যোগটা তাঁরা রক্ষা করতে পারেন৷ কিন্তু এর মধ্যেই বিপদ দেখতে পেয়েছেন থারুর৷ আইন প্রণয়নের পরিবর্তে ভারতের সাংসদরা যেন সরকারি পদ অধিকারেই শুধু ব্যস্ত হয়ে পড়েন৷
প্রতিবেদক : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা : দেবারতি গুহ