জার্মানির ‘ব্যার্গ পার্ক’ বা পাহাড়ি পার্ক
পাহাড়ি পার্কটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেন পর্যটকরা পুরো পার্কের ভেতর দিয়ে হেঁটে বেড়াতে পারেন, মুক্ত বাতাস সেবন করতে পারেন – এই পার্ক তৈরির এটাই মূল লক্ষ্য৷
ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান ‘ব্যার্গ পার্ক’
জার্মানির ভিলহেল্মসহ্যোয়ের ‘ব্যার্গ পার্ক’ বা পাহাড়ি পার্কটি এ বছর, অর্থাৎ ২০১৩ সালের ২৩ জুন বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেস্কো থেকে স্বীকৃতি পেয়েছে৷ অপূর্ব সুন্দর ছায়া শ্যামল ঘেরা সবুজ এই পার্কটি আস্তে আস্তে একটু ওপরের দিকে উঠে গেছে বলেই এর নাম পাহাড়ি পার্ক৷
অবকাঠামো
পার্কটি মোট সাড়ে চার কিলোমিটার লম্বা৷ পাহাড়ি পার্কটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেন পর্যটকরা পুরো পার্কের ভেতর দিয়ে হেঁটে বেড়াতে পারেন, মুক্ত বাতাস সেবন করতে পারেন – এই পার্ক তৈরির এটাই মূল লক্ষ্য৷ পার্কের ভেতরে দর্শনীয় বিল্ডিং এবং প্রাসাদও রয়েছে৷
ভিলহেল্ম প্রাসাদ
এই প্রাসাদটি প্রথমে সন্ন্যাসীদের আশ্রম ছিল এবং ১৭৮৬ থেকে ১৭৯৮ পর্যন্ত ভিলহেল্ম প্রাসাদের রূপান্তরিত করা হয়৷ আর বর্তমানে এটাকে আর্ট গ্যালারি এবং অ্যান্টিক সংগ্রহশালা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে৷
ফ্লোরা
এই পার্কে ফুল গাছের চেয়ে বেশি রয়েছে বিভিন্ন জাতের বড় বড় সব গাছ৷ তবে ব্যতিক্রম হিসেবে রয়েছে ফুলের রাজা গোলাপের বিশাল সংগ্রহ৷ যেটি সুন্দর করে একটি দ্বীপের মতো করে বানিয়ে রাখা হয়েছে৷ এই গোলাপের দ্বীপটি ১৭৯৫ সালে বানানো হয় এবং জার্মানিতে প্রথম এখানেই গোলাপ চাষ করা হয়েছে৷
নানা জাতের গাছ
বিভিন্ন দেশের গাছের সংগ্রহ রয়েছে এখানে৷ ১৭৭৭ সালেই ৩২৯ রকমের গাছ লাগানো হয়েছিল৷ তার মধ্যে ১২৮ রকমের গাছ আনা হয়েছিল সুদূর অ্যামেরিকা থেকে৷
হারকিউলিস স্ট্যাচু
পার্কের ভেতরে রয়েছে বিখ্যাত গ্রিক বীর হারকিউলিসের নামে ‘হারকিউলিস বিল্ডিং’, যার চূড়ায় দেখা যাচ্ছে একটি পিরামিড৷
বিশাল গ্রিন হাউজ
পার্কের ভেতরে রয়েছে বিশাল এই গ্রিন হাউজটি৷ এখানে বিভিন্ন দেশের গাছ-পালার সংগ্রহ রয়েছে৷ এমনকি, গ্রিন হাউসের উষ্ণতা বাড়িয়ে এখানে লাগানো হয়ে থাকে বাংলাদেশে পাওয়া যায়, এমন গাছও৷
বল হাউজ
পার্কে শুধু মুক্ত বাতাস সেবন নয়, চিত্ত বিনোদনের জন্য রয়েছে একটি বল হাউজ, যার অন্য পাশটি থাকার জন্য হোটেল হিসেবেও ব্যবহার করা হয়৷পার্কে শুধু মুক্ত বাতাস সেবন নয়, চিত্ত বিনোদনের জন্য রয়েছে একটি বল হাউজ, যার অন্য পাশটি থাকার জন্য হোটেল হিসেবেও ব্যবহার করা হয়৷
ব্যার্গ পার্ক, শহর এবং জনগণ
সবার জন্যই এই পার্ক – যা নানাভাবে জনগণ ব্যবহার করে থাকে৷ জার্মান সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে পার্কের ভেতরে৷
ব্যার্গ পার্কের জলপ্রপাত
অত্যন্ত সুন্দর এই জলপ্রপাতটির পানির খেলা সকলেই উপভোগ করেন৷ তবে জলতরঙ্গের খেলা দেখা যায় মে মাস থেকে অক্টোবব মাস পর্যন্ত প্রতি বুধবার, রবিবার এবং সরকারি ছুটির দিনগুলোতে৷ জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাসের প্রথম শনিবার রঙীন বাতির জলতরঙ্গের খেলা দেখানো হয়৷ যার মাধ্যমে এক একটি জায়গা ভিন্ন ভিন্ন রং-এর আলোর মাধ্যমে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়৷
হাজারো পর্যটক
ব্যার্গ পার্কে সব সময়ই পর্যটকের ভিড় হয়৷ তবে গ্রীষ্মের সুন্দর আবহাওয়া থাকলে বা পার্কের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গেছে যে, এক এক দিনে কয়েক হাজার পর্যটক এসে হাজির হন এখানে৷