জার্মানিতে অচলাবস্থা
টাকাপয়সার অভাব নেই৷ তা সত্ত্বেও বড় বড় নির্মাণ প্রকল্প শেষ করতে হিমশিম খাচ্ছে জার্মানি৷ বিলম্বের ফলে ব্যয় বাড়ছে, কাজও কিছুতেই শেষ হচ্ছে না৷ জার্মানির এমন দশার কারণগুলি জানতে চান?
ডানদিকে না যাওয়াই ভালো
লেভারকুসেন শহরের কাছে অত্যন্ত ব্যস্ত হাইওয়ের উপর একটি সেতুর অবস্থা যে বেহাল তা অনেকদিন ধরেই সবাই জানে৷ তার আমূল সংস্কারের প্রয়োজন নিয়েও কোনো সংশয় নেই৷ কিন্তু কাজটা কিছুতেই সারা যাচ্ছে না৷ এবার বড় ফাটল দেখা দেওয়ায় কয়েক দিনের জন্য সেতুটি পুরো বন্ধ রেখে কাজে হাত পড়েছে৷
মনোরম দৃশ্য, কিন্তু গৌরবের বিষয় নয়
কাজ শেষ হলে হয়ত দৃশ্যটা সুন্দর হবে৷ মোজেল নদীর উপর এই সেতু নির্মাণের কাজ থমকে গেছে৷ কারণ বেশ কয়েক বছর ধরে এক নাগরিক আন্দোলন এর বিরোধিতা করছে৷ প্রায় ৪৬ কোটি ইউরোর অস্বাভাবিক ব্যয়ভার ছাড়াও তারা মোজেল উপত্যকার সৌন্দর্যহানির বিপক্ষে৷ যাই হোক, ২০১৮ সাল নাগাদ নির্মাণের কাজ শেষ হবার কথা৷
আর এক সেতু নির্মাণের করুণ কাহিনি
সাড়ে পাঁচ বছর লেগেছে এই সেতু নির্মাণ করতে৷ এয়ারফুয়র্ট ও লাইপসিশ শহরের মধ্যে উচ্চগতির রেলের এই সেতু দেখতে খারাপ নয়৷ কিন্তু সরকারি কোষাগার থেকে প্রায় ১,০০০ কোটি ইউরো ব্যয় করে হাইস্পিড রেল সংযোগ গড়ে তোলার যৌক্তিকতা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে৷ সমালোচকদের মতে, এর ফলে যাত্রীদের তেমন কোনো বাড়তি সুবিধা হয়নি৷
নির্মাণ বিপর্যয়ের প্রতীক বার্লিন বিমানবন্দর
খোদ জার্মানির রাজধানীর নিজস্ব বিমানবন্দর বলে কথা! বর্তমান যুগের উপযোগী এই বিমানবন্দরের নির্মাণকাজ শেষ হবার কোনো নিশ্চয়তা এখনো কেউ দিতে পারছে না৷ গোটা প্রকল্প বার বার থমকে যাচ্ছে৷ দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলি পরস্পরকে দোষারোপ করে চলেছে৷ কিন্তু বার্লিন-ব্রান্ডেনবুর্গ বিমানবন্দর ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে গেছে৷
আরও এক ‘মাস্টারপিস’
হামবুর্গ শহরের কনসার্ট হলো নির্মাণের জন্য প্রথমে ৭ কোটি ৭০ লক্ষ ইউরো ধার্য করা হয়েছিল৷ সেই ব্যয়ভার এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে একান্ন কোটি ইউরো! ২০০৭ সাল থেকে নির্মাণ কাজ চলছে৷ বর্তমান হিসেব অনুযায়ী, ২০১৭ সালে সেই কাজ শেষ হবার কথা৷
জার্মানিতে অলিম্পিক? না, চাই না!
কনসার্ট হল নিয়ে কেলেঙ্কারি সত্ত্বেও হামবুর্গ শহর কর্তৃপক্ষ দমে যায়নি৷ ২০২৪ সালের অলিম্পিক প্রতিযোগিতার আয়োজনের দৌড়ে নাম লেখাতে চেয়েছিল হামবুর্গ৷ কিন্তু সেই উদ্যোগে বাধ সাধলেন খোদ শহরবাসীরাই৷ এক গণভোটে তারা সাফ ‘না’ বলে দিলেন৷ অথচ ‘মাত্র’ ১,১২০ কোটি ইউরো ব্যয় ধার্য করলেই অলিম্পিক আয়োজনের দৌড়ে নামা যেত৷
আমাদের ডয়চে ভেলে ভবনের কাহিনি
এই ছবিটি আসলে বন শহরে ডয়চে ভেলের বর্তমান ভবনের কালো ইতিহাসের প্রতীক৷ স্থপতি ইওয়াখিম শ্যুয়রমানের নামেই এই কাঠামো লোকমুখে পরিচিত৷ সংসদদের দপ্তর নির্মাণের সময়ই রাইন নদীর বন্যার জল কাঠামোর মধ্যে ঢুকে পড়ে৷ তারপর সংসদ সদস্যরা বার্লিনে চলে যাবার সিদ্ধান্ত নেন৷ শেষ পর্যন্ত কোলোন থেকে ডয়চে ভেলের দপ্তর এখানেই স্থানান্তরিত করা হয়৷