জার্মানদের মাথায় উকুন!
উকুন বাসা বাঁধে অপরিষ্কার বা তেলতেলে মাথায় – অনেকের এমন একটা ধারণা থাকলেও জার্মান বিশেষজ্ঞরা এর সাথে একমত নন৷ উকুনের জন্মের কারণ, বসবাস ও তাদের তাড়ানোর উপায় জেনে নিন ছবিঘর থেকে৷
উকুন ছোঁয়াচে
জার্মানিতে ছোঁয়াচে বা সংক্রমণ রোগ সর্দি-কাশির পরেই রয়েছে উকুনের স্থান, বিশেষ করে ৮ থেকে ১১ বছর বয়সি শিশুদের ক্ষেত্রে৷ ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের চুল লম্বা বা বড় থাকার কারণে মেয়েদের মাথার চুলেই উকুন আরাম বোধ করে৷
অপরিচ্ছন্নতা কারণ নয়
সন্তানের মাথায় উকুন হলে জার্মান মায়েরা বিছানা-বালিশ – সবকিছু নতুন করে ধুতে শুরু করেন৷ এক্ষেত্রে মাইক্রোবায়োলজি ও হাইজিন চিকিৎসক হ্যারমান ফেল্ডমায়ার জানান, রক্তচোষা ছাড়া উকুন চার ঘণ্টার বেশি বাঁচতে পারে না, অর্থাৎ উকুনের আসল বাড়ি-ঘর হলো মাথা বা চুলের গোড়া৷ কাজেই অপরিচ্ছন্নতা উকুন ছড়ানোর কারণ নয়৷
ক্ষতিকর নয়
মাথায় উকুন হলে তা যে খুবই বিরক্তিকর এতে সন্দেহ নেই৷ তবে উকুন ক্ষতিকর কিছু নয় বলে জানান জার্মান ফার্মাসিস্ট বারবারা ভাল্টার৷ তিনি জানান, ফার্মেসিতে উকুন মারার ঔষুধ পাওয়া যায় এবং একটু সতর্কভাবে তা ব্যবহার করলে উকুন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়৷ অবশ্য উকুন মারার ঔষুধ ব্যবহারে শুধু বড় উকুনই মারা যায়, ডিমগুলো নয়৷ তাই কয়েক সপ্তাহ সেদিকে ভালোভাবে নজর রাখতে হবে৷
সেলফি
উকুন বিছানা বা অন্য কোনোভাবে ছড়ায় না৷ উকুন সরাসরি এক মাথা থেকে আরেক মাথায় যায়৷ অল্প বয়সি মেয়েরা বন্ধুদের সাথে মাথায় মাথা লাগিয়ে সেলফি বা ছবি তুলতে বেশ পছন্দ করে৷ সেলফি তোলার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ডা. হ্যারমান ফেল্ডমায়ার৷
শিশুদের মাথায় উকুন হলে ...
জার্মানিতে কিন্ডার গার্টেন বা প্রাইমারি স্কুলের কোনো শিশুর মাথায় উকুন হলে ওকে কয়েকদিনের জন্য বাসায় থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়, অর্থাৎ ঐ সময়টা উকুন মেরে ফেলার ছুটি৷ আর সেই সাথে অন্যান্য শিশুর মা-বাবাকেও উকুন সম্পর্কে সতর্ক করে দেওয়া হয়৷
এক উকুনের ৩০০ ডিম!
একটি উকুন প্রাপ্তবয়স্ক হবার সাত থেকে ১০দিন পরেই ডিম দেয় আর ডিমগুলোও সপ্তাহ খানেক পরই প্রাপ্তবয়স্ক উকুন হয়ে যায়৷ একটি উকুন ৩০০টি ডিম পর্যন্ত দিতে পারে৷
লজ্জার কোনো কারণ নেই
মাথায় উকুন হলে অনেকেরই মাথা চুলকায় এবং লজ্জা পায়, যদিও এতে লজ্জার কোনো কারণ নেই৷ কারণ এর জন্য তো আর কেউ নিজে দায়ী নয়৷ কোনো এক অসতর্ক মুহূর্তে কাছের কারো মাথা থেকেই হয়ত নিজের মাথায় উকুন এসে থাকবে৷ তাই লজ্জা বা ভয় না পেয়ে বরং উকুন তাড়ানোর ব্যবস্থা করাই শ্রেয়৷
তাড়ানোর পরামর্শ
ভেজা চুলে ধাতুর তৈরি বিশেষ চিরুণি দিয়ে খুব ধীরে ধীরে চুল আচড়ানোর পর চিরুণিটি একটি সাদা কাপড়ের ওপর রাখলেই দেখা যাবে উকুন বেরিয়ে এসেছে৷ এবং এভাবে কয়েকদিন করতে হবে৷ তাছাড়া ঔষুধ দু’সপ্তাহ ব্যবহার করেও উকুন থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব৷