1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাঘ বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে

জাহিদুল হক২৮ জুলাই ২০১৫

আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতবছর চমৎকার একটি মন্তব্য করেছিলেন৷ তিনি বলেছিলেন, বাঘ বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে৷ খুবই সত্যি কথা৷ কিন্তু বাঘ বাঁচানোর জন্য আমরা কী করছি?

https://p.dw.com/p/1G5jA
Bangladesch Tiger
ছবি: AP

এ নিয়ে তথ্য খুঁজতে গিয়ে অন্তত দুটি প্রকল্পের কথা জানতে পারলাম৷ একটি ‘বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান' ৷ অন্যটি ‘বাঘ প্রকল্প' ৷ প্রথমটি বাস্তবায়ন করছে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এবং বন অধিদপ্তর৷ সহায়তা করছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও স্থানীয় কয়েকটি সংস্থা৷ এই প্রকল্পে কাজ শুরু হয়েছে ২০০৯ সালে, চলবে ২০১৭ সাল পর্যন্ত৷

এদিকে, বাঘ প্রকল্পের কাজের উদ্যোক্তা যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএইড৷ তারা কাজটি বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব দিয়েছে বাংলাদেশের ‘ওয়াইল্ডটিম'-কে৷ সঙ্গে বন রয়েছে অধিদপ্তর ৷ এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে ২০১৪ সালে, চলবে ২০১৮ পর্যন্ত৷

অর্থাৎ একই সময়ে বাঘ রক্ষায় দুটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে৷ কিন্তু এই সময়ে এসেই আমরা জানতে পারলাম যে, আমাদের সুন্দরবনে মাত্র ১০৬টি বাঘ আছে৷ ১০ বছর আগে করা জরিপে যে সংখ্যাটা ছিল ৪৪০৷ অবশ্য বলা হচ্ছে আগের জরিপ পরিচালনার নিয়মটি নাকি ত্রুটিপূর্ণ ছিল৷ তাই বাঘের সংখ্যা ৪৪০ থেকে কমে একেবার ১০৬ হয়ে গেছে, সেটা বলা যাবে না৷ বুঝলাম৷ হয়ত ১০ বছরে এতগুলো বাঘ হত্যা করা হয়নি বা ভারতে চলে যায়নি৷ কিন্তু বাঘের সংখ্যা নিশ্চয় কিছু কমেছে৷ অন্তত বিশেষজ্ঞরা তাই বলছেন৷ শিকারি আর চোরাকারবারীদের দৌরাত্মের কারণে নাকি বাঘের সংখ্যা দিন দিন কমছে৷

DW Bengali Mohammad Zahidul Haque
জাহিদুল হক, ডয়চে ভেলেছবি: DW/Matthias Müller

তবে বাঘের সংখ্যা কমেছে কি কমেনি তা নিয়ে আলোচনা করে লাভ নেই৷ এখন যে ১০৬ টি বাঘ আছে বলে বলা হচ্ছে (এবার নাকি জরিপ প্রক্রিয়া ঠিক ছিল) তার সংখ্যা কীভাবে বাড়ানো যায় সেটা ভাবতে হবে৷ আর ১০৬ থেকে সংখ্যাটা যেন কোনোভাবেই না কমে সেটা নিশ্চিত করতে হবে৷

এই দুটো কাজের জন্যই চলমান প্রকল্পগুলো সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে৷ দুটো প্রকল্পের সঙ্গেই যেহেতু সরকারি সংস্থা জড়িত সেহেতু প্রকল্পগুলো অন্য অনেক সরকারি প্রকল্পের মতো সফল নাও হবার আশঙ্কা থেকেই যায়৷ প্রকল্পের টাকায় সরকারি ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের শুধু পকেট ভারিই হতে পারে৷ সেটা যেন না হয় তা নিশ্চিত করতে পারেন একমাত্র প্রধানমন্ত্রী৷ জানি, ছোটখাটো কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কাম্য হতে পারে না৷ কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, একমাত্র প্রধানমন্ত্রীই যদি কোনো কাজ সফলভাবে করতে নির্দেশ দেন তাহলে সেটা সঠিকভাবে করেন সরকারি কর্মকর্তারা৷ চলমান পদ্মা সেতু নির্মাণকাজে সেটাই দেখা যাচ্ছে৷ প্রধানমন্ত্রীর কড়া নজরদারির কারণে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে সেতুর নির্মাণকাজ৷

এখন প্রশ্ন হলো প্রধানমন্ত্রীর কেন বাঘ রক্ষায় নজর দেয়া উচিত? তিনি নিজেই বলেছেন, বাঘ বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে৷ সুতরাং তিনিই ভালোভাবে বোঝেন কেন বাঘ রক্ষা জরুরি৷ এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ক্রিকেটের বিশেষ ভক্ত৷ আর আমাদের ক্রিকেটারদের সারা বিশ্ব চেনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার নামে৷ যে বাঘের নামে আমাদের সবাই চেনে সেটার অস্তিত্বই যদি না থাকে তাহলে সেটা নিশ্চয় ভালো কোনো কথা নয়৷ নজরদারি না বাড়ালে বাঘের সংখ্যা ১০৬ থেকে কমে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়তে হয়ত বেশি সময় লাগবে না৷ অর্থাৎ একটা দেশ তখন জাতীয় প্রাণীশূন্য হয়ে পড়বে, যেটা হবে খুবই লজ্জার৷

কারণ আরেকটি আছে৷ বিশ্বব্যাপী বাঘের সংখ্যা ২০২২ সালের মধ্যে দ্বিগুন করার পরিকল্পনা করেছে ‘গ্লোবাল টাইগার ইনিশিয়েটিভ' বা জিটিআই৷ বাংলাদেশ এই উদ্যোগের এক অংশীদার৷ ২০১০ সালে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে এই পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়৷ সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ এছাড়া গত বছর ঢাকায় জিটিআই এর একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ সেটি উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী৷ এর মাধ্যমে বাঘের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর যে আগ্রহ আছে সেটা বোঝা যায়৷ এখন শুধু সেই আগ্রহটাকে কাজে লাগাতে হবে৷ প্রধানমন্ত্রীর উচিত হবে সুন্দরবন থেকে শিকারি ও চোরাকারবারীদের হটাতে সংশ্লিষ্টদের কঠোর নির্দেশ দেয়া৷ বঙ্গবন্ধুর কন্যা নিশ্চয় সেটা করবেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য