জনহিতকর সংস্থা মাওবাদীদের সহায়তা করছে বলে অভিযোগ
২২ জানুয়ারি ২০১১ছত্তিশগড়ের পুলিশ প্রধান সম্প্রতি অভিযোগ করেন, সবচেয়ে বিশৃঙ্খল জেলা দান্তেভাড়ায় গরীবদের সহায়তার নামে মাওবাদীদের চিকিৎসা দিচ্ছে দুই আন্তর্জাতিক সংস্থার বিদেশি ডাক্তাররা৷ একটি ওষুধের দোকান থেকে আটক দুই মাওবাদী বিদ্রোহীকে আটকের পর এই মন্তব্য করেন পুলিশ প্রধান৷ আটক বিদ্রোহীরা দাবি করেছেন, এমএসএফ এবং আইসিআরসি'র লোকেরা তাদের চিকিৎসা সেবা দিয়েছে৷
আইসিআরসি'র যোগাযোগ সমন্বয়ক এলেক্স হিব এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন৷ তিনি বলেন, আমরা দান্তেভাড়ার পুলিশ প্রধানের বিবৃতিতে বিস্মিত হয়েছি৷ বিশেষ করে তিনি এমন এক সময়ে এই অভিযোগ তুললেন যখন, দান্তেভাড়ে আইসিআরসির কোন সক্রিয় প্রকল্প নেই৷
বলাবাহুল্য, ছত্তিশগড় হচ্ছে ভারতের মাওবাদীদের সহিংসার কেন্দ্রবিন্দু৷ এই অঞ্চলে নিয়মতিই মাওবাদী গেরিলা এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ চলে৷ কিছুদিন আগে এই রাজ্যের চিকিৎসা সেবা উন্নয়নে অ্যাম্বুলেন্স সহায়তাসহ প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেছে আইসিআরসি৷
এদিকে ছত্তিশগড়ে অবস্থানরত এমএসএফ-ভারত এর প্রধান মার্টিন স্লোটও পুলিশ প্রধানের অভিযোগে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন৷ এই সংগঠনের কিছু ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিক দুর্গম এবং হাসপাতালবিহীন এলাকায় চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে৷ এই প্রসঙ্গে মার্টিন জানান, সংশ্লিষ্ট এলাকার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট কিংবা সংঘাতের সঙ্গে এমএসএফ এর কোন সম্পর্ক নেই, পৃথিবীর কোন অঞ্চলেরই এধরনের পরিস্থিতির সঙ্গে এমএসএফ সম্পর্কিত নয়৷ যাদের চিকিৎসা প্রয়োজন,আমরা শুধু সেইসব মানুষকেই চিকিৎসা সেবা প্রদান করি৷ অস্ত্র এবং ইউনিফর্মবিহীন প্রত্যেক বেসামরিক মানুষ আমাদের ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে পারেন৷ এক্ষেত্রে কে কোন লিঙ্গের বা কার রাজনৈতিক মতাদর্শ কি কিংবা গায়ের রং বা অন্য কোনকিছুই বিবেচ্য নয়৷
উল্লেখ্য বছরখানেক আগে ছত্তিশগড়, উড়িষ্যা, ঝাড়খান্ড, বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদী দমনে কঠোর অভিযান শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনী৷ এই অভিযানে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত হাজার বিশেক আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য ও পুলিশ রয়েছে৷ সবমিলিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে বর্তমানে হাজার পঞ্চাশেক আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য এবং পুলিশ মাওবাদী বিরোধী অভিযানে অংশ নিচ্ছে৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: ফাহমিদা সুলতানা