জগৎ তার সাথে, তবুও লিবিয়া একলা
১১ মার্চ ২০১১উপকূলে খোলা মরুভূমি অঞ্চলে একটিমাত্র সড়কে চলাফেরা করতে গিয়ে বিদ্রোহী বাহিনী পড়ছে গাদ্দাফি অনুগামীদের জঙ্গি হেলিকপ্টার এবং জঙ্গিবিমানের আওতায়৷ বিদ্রোহীদের সামরিক অভিযান যে তার গতিবেগ হারিয়েছে, তার একটা প্রধান কারণ হল এই যে, এই খোলামেলা দেশে বায়ু অঞ্চলের উপর বিদ্রোহীদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই৷ সেটা পুরোপুরি গাদ্দাফি বাহিনীর হাতে৷ যে কারণে বিদ্রোহীদের তরফ থেকে এখন আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রসমাজের কাছে একটাই ডাক উঠেছে: নো-ফ্লাই জোন চালু করো; বাকিটা আমরা দেখব৷
কিন্তু সেই নো-ফ্লাই জোন চালু হবার সম্ভাবনা কতোটা? ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন বৃহস্পতিবার ব্রাসেলস থেকে যে সঙ্কেত পাঠিয়েছে, তা হল এই: আপাতত তারা এই সশস্ত্র সংঘাতে জড়াতে রাজি নয়৷ বিশেষ করে আঞ্চলিক এবং আরব লিগের সমর্থন ছাড়া তো নয়ই৷ এমনকি জাতিসংঘের সনদও চাই তাদের৷ ওদিকে আফ্রিকান ইউনিয়ন ইতিমধ্যেই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা সামরিক হস্তক্ষেপের বিরোধী৷ একমাত্র ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি আগ বাড়িয়ে বিদ্রোহী পরিষদকে স্বীকৃতি দিয়ে বসে আছেন৷ লিবিয়ায় বিমান হানার কথাও নাকি শোনা গেছে তাঁর মুখ থেকে৷ অবশ্য এর কতোটা যে নাটক, তা বলা শক্ত৷ তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন সত্যিই আগামী ১৫ই মার্চ ন্যাটোকে নো-ফ্লাই জোন প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত প্রস্তাব দেবেন৷
এই গড়িমসির ফলেই তো গাদ্দাফি গোষ্ঠীর ছছল-বছল৷ গাদ্দাফি-পুত্র সাইফ আল-ইসলামের হাবভাবই বদলে গেছে৷ রয়টার্সের সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘এবার অভিযানের সময় এসেছে৷ আমরা এখন এগোচ্ছি৷'' পশ্চিমী শক্তিরা হস্তক্ষেপ করলেও নাকি গাদ্দাফি তরফ জিতবে, ইত্যাদি কথা তার মুখে৷
সত্যিই তো, পূর্বে রাস লানুফ, এমনকি ব্রেগার উপর বোমা - এ'সবই আবার তেলের শহর, তেলের বন্দর৷ তা'তে তেলের আন্তর্জাতিক খরিদ্দারদেরও কিছুটা ভয় দেখানো হল৷ পশ্চিমে জাউইয়া'তে নাকি রক্ত বইয়েছে গাদ্দাফির সাঙ্গপাঙ্গরা, মহিলা এবং শিশুদের হত্যা করতেও দ্বিধা করেনি৷ ওদিকে লিবিয়া থেকে আড়াই লক্ষ মানুষ পালিয়েছে পাশের দেশগুলোতে৷ কাজেই জাতিসংঘ এখন মানবিক সাহায্যের দিকটা সামলাতেই ব্যস্ত৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: জাহিদুল হক