চোখ জুড়ানো রাঙ্গামাটি
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি জেলা রাঙ্গামাটি, যার প্রধান আকর্ষণ কাপ্তাই হ্রদ৷ কাপ্তাই হ্রদের মাঝেই যেন ভেসে থাকা ছোট্ট একটি শহর৷ জেলাজুড়ে রয়েছে বৈচিত্রময় নানান পর্যটন ভাণ্ডার৷
কাপ্তাই হ্রদ
এর আরেক নাম কর্ণফুলী হ্রদ৷ রাঙ্গামাটি জেলার বড় একটা অংশজুড়েই বিস্তৃত কাপ্তাই হ্রদ৷ ১৯৫৬-৬২ সালে কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের বাঁধ নির্মাণের ফলে প্রায় ৫৪ হাজার একর কৃষিজমি প্লাবিত হয়ে কাপ্তাই হ্রদের জন্ম৷
অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ
প্রায় ১৭২২ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের কাপ্তাই হ্রদের স্বচ্ছ পানি আর বাঁকে বাঁকে পাহাড়ের সৌন্দর্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে৷
কাপ্তাই হ্রদে নৌকা ভ্রমণ
রাঙ্গামাটি শহরের রিজার্ভ বাজার, তবলছড়ি বাজার ও পর্যটন কমপ্লেক্স ঘাটে পাওয়া যায় কাপ্তাই হ্রদে ভ্রমণের নানা রকম নৌকা৷ এ সব নৌকা নিয়ে ঘুরে আসা যায় সুদূর শুভলংসহ আরো অনেক জায়গা৷
শুভলং বাজার
কাপ্তাই হ্রদের পাশে ছোট একটি বাজার শুভলং৷ নৃগোষ্ঠীর মানুষের তৈরি নানান পন্য পাওয়া যায় এ বাজারে৷
শুভলং ঝর্ণা
শুভলং বাজারের আগেই কাপ্তাই হ্রদের পাশে পাহাড়ী ঝর্ণা ‘শুভলং’৷ শুধু বর্ষাকালেই এ ঝর্ণা পানিতে পূর্ণ থাকে৷
ভ্রমণ তরী
কাপ্তাই হ্রদে ভ্রমণের জন্য আছে আধুনিক মানের ভ্রমণ তরী৷ প্রতিদিন সকালে রাঙ্গামাটি শহর থেকে ছেড়ে হ্রদ ভ্রমণ শেষে সন্ধ্যায় আবার ফিরে আসে শহরে৷
টুকটুক ইকো ভিলেজ
কাপ্তাই হ্রদের ভেতরে ছোট্ট একটি দ্বীপজুড়ে আছে টুকটুক ইকো ভিলেজ৷ ইকো কটেজে থাকা আর পাহাড়ি নানান পদের খাবার টুকটুক ইকো ভিলেজের মূল আকর্ষণ৷
রাজবন বিহার
শহরের পাশেই এ অঞ্চলের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থ স্থান রাজবন বিহার৷ একটি প্রার্থনালয়, একটি প্যাগোডা, বনভান্তের (বৌদ্ধ ভিক্ষু) আবাস স্থল ও বনভান্তের ভোজনালয় আছে এখানে৷ রাজ বন বিহারে দাঁড়িয়েও উপভোগ করা যায় কাপ্তাই হ্রদের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য৷
উপজাতীয় জাদুঘর
রাঙ্গমাটি শহরের উপজাতীয় জাদুঘর৷ রাঙ্গামাটিসহ পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত নানান নৃগোষ্ঠীর ব্যবহৃত বিভিন্ন সময়ের সরঞ্জাম, পোশাক, জীবনাচরণ এবং বিভিন্ন ধরনের তথ্য আছে এ জাদুঘরে৷
ঝুলন্ত সেতু
রাঙ্গামাটি শহরের একেবারে শেষ প্রান্তে পর্যটন কমপ্লেক্সের ভেতরে সুন্দর ঝুলন্ত সেতু৷ রাঙ্গামাটির ল্যান্ডমার্কও এই ঝুলন্ত সেতু৷ সেতু পেড়িয়ে সামনের পাহাড়ে উঠলে কাপ্তাই লেকের বড় অংশ দেখা যায়৷
কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান
রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান৷ চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৫৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে এ বনের অবস্থান৷ ১৯৭৪ সালের বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী আইনের আওতায় ১৯৯৯ সালে জাতীয় এ উদ্যানটি প্রতিষ্ঠিত হয়৷ তবে এর বহু আগে ১৮৭৩, ১৮৭৮ এবং ১৮৭৯ সালে এখানে বনায়নের ফলেই গড়ে উঠেছিল ক্রান্তীয় এ বনাঞ্চলের৷
নানান বন্যপ্রাণী
কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে একটি মুখপোড়া হনুমান৷ এছাড়াও নানান বন্যপ্রাণীতে সমৃদ্ধে এ উদ্যান৷ এ বনের প্রাণীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বন্যহাতি, হরিণ, হনুমান, উল্লুক, শুকর, বনবিড়াল, গুইশাপ, অজগর ইত্যাদি৷