চেনা পরিবেশে ফিরছেন আটকেপড়া খনি শ্রমিকরা
১৩ অক্টোবর ২০১০প্রথম জনসহ উপরে যখন উঠে এল ক্যাপসুলটি, তখন অনেকের চোখে ছিল আনন্দের অশ্রু৷ জার্মান সময় তখন সকাল পাঁচটা দশ মিনিট৷ হাসিমুখে ক্যাপসুল থেকে নামলেন ৩১ বছর বয়সি ফ্লোরেন্সিও অ্যাভালোস৷ খুব একটা হৈচৈ উচ্ছ্বাস দেখা যায়নি তাঁর আচরণে৷ বরং শান্তভাবেই চিকিৎসকদের দিকে রওয়ানা হন প্রায় দশ সপ্তাহ পর প্রথম মুক্তি পাওয়া এই খনি শ্রমিক৷
জার্মান সময় সকাল ছয়টা দশ মিনিটে মানে প্রথম জন উদ্ধারের ঠিক এক ঘন্টা পর ভূপৃষ্ঠে উঠে আসেন আটকেপড়া দ্বিতীয় শ্রমিক৷ নাম মারিও সেপুলভেডা, বয়স ৩৯ বছর৷ এই শ্রমিক চেনা পরিবেশে ফিরে এসে আর উচ্ছ্বাস থামিয়ে রাখতে পারেননি৷ একে এক জড়িয়ে ধরেন চিলির প্রেসিডেন্টসহ অন্যদের৷ আনন্দে কয়েকবার লাফিয়ে উঠেছেন শূণ্যে৷ এভাবে একে একে ভূপৃষ্ঠে উঠে আসছেন দিনের পর দিনে মাটির নিচে কোন রকম খেয়ে বাঁচা শ্রমিকরা৷
চিলির উত্তরাংশে অবস্থিত সান জোসে খনির অভ্যন্তরে দুর্ঘটনায় আটকে পড়েন ৩৩ জন শ্রমিক৷ আগস্টের পাঁচ তারিখ থেকে এই আটকাবস্থায় তাঁরা৷ শুরুতে তারা জীবিত আছেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ ছিল৷ সতের দিন পর তাদের সাড়া পাওয়া যায়, শুরু হয় আসল উদ্ধার তৎপরতা৷
মোটেই সহজ ছিলনা সে উদ্ধার কাজ৷ শুরুতে বলা হয় ডিসেম্বরের বড়দিনের আগে বুঝি উদ্ধার পাবেনা শ্রমিকরা৷ কিন্তু তারপরও কাজে লেগে পড়েন বিশেষজ্ঞরা৷ আলাদা আলাদা পরিকল্পনায় তিনটি গর্ত খোঁড়া শুরু হয় শ্রমিকদের তুলে আনতে৷ এদের মধ্যে প্ল্যান বি আগেভাগেই পেয়ে যায় সাফল্য৷
অবশেষে ১৩ই অক্টোবর এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ৷ জার্মান সময় ভোর পাঁচটা দশ মিনিটে প্রথম খনি শ্রমিক উঠে আসেন মাটির উপরে, পরিবার পরিজনের কাছে৷ বুক ভরে গ্রহণ করেন সুবাতাস৷ তবে চোখে ছিল কালো চশমা৷ সেটা চোখের স্বার্থেই৷
চিলির খনি শ্রমিকদের উদ্ধারে ব্যবহার করা হচ্ছে ১৩ ফুট লম্বা বিশেষ ক্যাপসুল, নাম ফিনিক্স৷ সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকালে মানে বৃহস্পতিবার মধ্যেই শেষ হবে উদ্ধার মিশন৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: সাগর সরওয়ার