1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘চূড়াকে বলো না একা’, থ্রি-জি নেটওয়ার্কের আওতায় এলো এভারেস্ট!

২৯ অক্টোবর ২০১০

ভাবা যায়! এভারেস্টের চূড়ায় বসে আপনি রীতিমতো ভিডিও কলে কথা বলছেন আপনার বাড়ির মানুষ-জনের সঙ্গে৷ ইন্টারনেটে উত্তর দিচ্ছেন আপনার কাছে পাঠানো সব ই-চিঠির! ভাবছেন, এওকি সম্ভব?

https://p.dw.com/p/Ps9W
মাউন্ট এভারেস্টছবি: AP

কিন্তু সম্প্রতি এই অসম্ভবকেই সম্ভব করেছে সুইস-নেপালি একটি টেলি যোগাযোগ সংস্থা৷ এনসেল নামের এই টেলি যোগাযোগ সংস্থাটি জানিয়েছে, এভারেস্ট আরোহীরা এখন চূড়ায় পৌঁছে মোবাইল ফোন থেকেই ভিডিও কল আর ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন৷ এনসেল এর বরাতে আরো জানা গেছে, হিমালয়ের বুকে প্রায় সতেরো হাজার ফুট উচ্চতায় থ্রিজি বা শক্তিশালী তৃতীয় প্রজন্মে'র টেলি যোগাযোগের বেজ স্টেশন স্থাপন করেছেন তাঁরা৷ আর এর ফলে এখন এভারেস্ট আরোহীরা তাঁদের মোবাইল থেকেই ভিডিও কল, ই-চিঠি চালাচালি, ব্লগিং, চাই কি ফেসবুকে কিংবা টুইটারেও তাঁদের স্ট্যাটাস, মন্তব্য এ'সবকিছুই করতে পারবেন৷

34 Teilnehmer beim Marathon auf dem Mount Everest
২০০৩ সালে এভারেস্টে ম্যারাথনছবি: AP

ক'দিন আগে হলে কিন্তু এভারেস্ট বিজয়ী বাংলাদেশের তরুণ মুসা ইব্রাহীমকে আর সেই তর্ক-বিতর্কে'র হ্যাপাটি পোহাতে হতো না৷ উল্লেখ্য, মুসা'কে এভারেস্ট ডিঙিয়েও কতিপয় সন্দেহবাদীর বাঁকা মন্তব্য শুনতে হয়েছিল যে, তিনি আদৌ এভারেস্ট বিজয় করেন নি! মুসা এভারেস্টে পৌঁছে স্রেফ একটি ভিডিও কল করলেই সে মুস্কিল আসান হয়ে যেত৷ যাকগে, আপাতত আমরা হিমালয়ে এই টেলি যোগাযোগের থ্রিজি অভিযান সম্পর্কেই আরো কিছু তথ্য ঘাঁটি৷

হিমালয়ের গোরাকশেপ নামের একটি গ্রামের কাছাকাছি জায়গায় এনসেলের এই বেজ স্টেশনটি বসানো হয়েছে৷ সতেরো হাজার ফুট উঁচুতে থ্রিজি বেজ স্টেশন স্থাপন সম্পর্কে নেপালে এনসেলের প্রধান পাসি কোস্টিনেন এই বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আজ আমরা বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থানটি থেকে সফলভাবে ভিডিও কল করেছি৷ তিনি আরো বলেন, খুব দ্রুতই এই থ্রিজি নেটওয়ার্কের আওতার মধ্যে এভারেস্ট চূড়াটিও চলে আসবে৷

প্রতিবছর হাজারো পর্যটক এবং পর্বতারোহী এভারেস্টে আসেন৷ টেলি যোগাযোগ সংস্থাটির সুইস অংশীদার টেলিয়াসোনেরা'র প্রধান লার্স নাইবার্গ বলেছেন, এটি মোবাইল যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন৷ তিনি আরো বলেন, এই থ্রিজি নেটওয়ার্কটি খুব দ্রুতগতি সম্পন্ন, ফলে ভিডিও কল করা এখন খুবই সহজ হয়ে এলো৷ উল্লেখ্য, এই একই প্রতিষ্ঠান পৃথিবীর সর্বনিম্ন স্থানে থ্রি-জি নেটওয়ার্ক স্থাপনেরও দাবিদার৷ তারা চার হাজার পাঁচশো পঁচানব্বই ফুট অর্থাৎ সমুদ্রতলেরও অনেক নীচুতে ইউরোপের এক খনি এলাকায় এই থ্রি-জি বেজ স্টেশনটি স্থাপন করেছিল৷

জানা গেছে, এভারেস্টকে শক্তিশালী এই থ্রি-জি নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে মোট আটটি বেজ স্টেশন স্থাপিত হয়েছে৷ এরমধ্যে চারটি স্টেশন চলবে সৌরশক্তিতে৷ বেজ স্টেশনগুলোর মধ্যে যেটি সবচেয়ে নীচে স্থাপিত এর অবস্থান নয় হাজার চারশো ফুট উঁচুতে, লুকলা নামের একটি জায়গায়৷ স্থানীয় বিমানবন্দরটির কাছাকাছি জায়গায়৷

উল্লেখ্য, প্রথম এভারেস্ট বিজয়ী হিসেবে ১৯৫৩ সালে স্যার এডমান্ড হিলারি আর তেনজিং নোরগে'র এভারেস্ট আরোহণের পর থেকে এই দীর্ঘ সময়ে এ পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার মানুষ এভারেস্টে উঠেছেন৷ তাঁরা যে সুবিধাটি পান নি ভবিষ্যতের সব এভারেস্ট অভিযাত্রীরা সেটি এখন থেকে পাবেন৷ তাঁদের মোবাইল ফোনগুলোতে এই ‘থ্রি-জি' সবসময়ই সচল থাকবে৷

প্রতিবেদন: হুমায়ূন রেজা

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক