চীনে কুকুরের মাংস খাওয়ার উৎসব
অনেক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ-সমালোচনা সত্ত্বেও চীনে হয়ে গেল কুকুরের মাংস খাওয়ার উৎসব৷ ১০ হাজারের মতো কুকুর জবাই করে খাওয়া হয়েছে সেখানে৷ ছবিঘরে দেখুন বিতর্কিত এই উৎসব নিয়ে কিছু ছবি৷
লিচু এবং কুকুরের মাংসের উৎসব
প্রতি বছর লিচু আর কুকুরের মাংস খাওয়ার উৎসব হয় চীনের প্রত্যন্ত এবং দরিদ্রদের অঞ্চল ঝুয়াংয়ে৷ কাটা হয় কয়েক হাজার কুকুর৷ মাংস খাওয়া হয় উৎসবের আমেজে৷ সোমবার ইউলিন শহরে হয়ে গেল কুকুর হত্যার এই উৎসব৷ উৎসবে মাংস খেয়ে আনন্দরত কিছু মানুষ৷
সংস্কৃতি, নাকি ব্যবসা?
স্থানীয়দের অনেকেই মনে করেন, কুকুরের মাংস অনেকটা শূকরের মাংসের মতো, সুতরাং এ মাংস না খাওয়ার কোনো কারণ নেই৷ পশু অধিকার সংগঠনগুলো বলছে, কুকুরের মাংস খাওয়ার এ উৎসব চীনের সংস্কৃতির অংশ নয়, এটা এক শ্রেণির মানুষের ব্যবসায়িক চিন্তার ফসল৷
প্রতিবাদ
এমন উৎসব বন্ধের চেষ্টাও হয়েছে৷ উৎসবের নামে নিষ্ঠুরতা বন্ধের দাবি উঠেছিল চীনে৷ ‘অবৈধ কুকুরের মাংসের ব্যবসা বন্ধের জন্য অভিযান পরিচালনা কর’, ‘অবৈধভাবে কুকুর পরিবহণকারীদের শাস্তি দাও’ – লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন অনেকে৷ কিন্তু অজ্ঞাতপরিচয় কিছু লোক এসে বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে সব প্ল্যাকার্ড কেড়ে নেয়৷
পকেটের টাকায় কুকুর রক্ষার চেষ্টা
পশু অধিকার কর্মীদের কেউ কেউ কুকুর রক্ষার জন্য অভিনব এক পন্থা অবলম্বন করেছিলেন৷ উৎসবে এসে কুকুর কিনে নিয়ে যান তাঁরা৷ কুকুরপ্রেমী ইয়াং জিয়াওউন টিয়ানজিন থেকে এসেছিলেন শুধু কুকুর কিনতে৷ ১০০ কুকুর কিনেছেন তিনি ৭ হাজার ইউয়ান, অর্থাৎ ১ হাজার ১৫০ ইউরো দামে৷ এখানে তাঁর কেনা কয়েকটি কুকুর৷
বছরে এক কোটি কুকুরের মাংস!
হ্যাঁ, ওয়াশিংটনের হিউমেন সোসাইটির দেয়া তথ্য অনুযায়ী প্রতি বছর অন্তত এক কোটি কুকুরের মাংস যায় মানুষের পেটে৷ ইউলিনের উৎসবে কাটা হয়েছে হাজার দশেক কুকুর৷ উৎসবের অনেক কুকুরই বৈধ দোকান থেকে কেনা৷ তবে অবৈধ দোকান এবং চুরি করা কুকুরও আসে উৎসবে৷
কুকুর নির্যাতন উৎসব?
চীনের এই কুকুরের মাংস উৎসবের সমালোচনা চীন তো বটেই, চীনের বাইরেও অনেক হয়েছে৷ ব্রিটেনের কৌতুক অভিনেতা রিকি জ্যার্ভেস ইউলিনের উৎসবের সমালোচনা এবং উৎসব বন্ধ করার দাবিতে অসংখ্য টুইট করেছেন৷ তাঁর হ্যাশট্যাগ ‘স্টপ ইউলিন ২০১৫’ টুইটের অনেক রিটুইটও হয়েছে৷ টুইটারে রিকি জ্যার্ভেস লিখেছেন, ‘‘’এ উৎসবকে কুকুর নির্যাতনের উৎসব বলা উচিত, কেননা ব্যাপারটি আসলে তাই৷’