চীনের ভূমিকম্প বিধ্বস্ত প্রদেশে চলছে উদ্ধারকাজ
১৫ এপ্রিল ২০১০ধ্বংসস্তুপের নীচে আটকা মানুষ
বুধবার সকালে কিংহাই প্রদেশে ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে৷ সেখানকার ধ্বংসাবশেষ এবং দুর্গত মানুষের দুরবস্থা দুই বছর আগে সিচুয়ান প্রদেশের ভূমিকম্পের কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে৷ বার্তা সংস্থা শিনহুয়া এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৬১৭ জন বলে জানিয়েছে৷ এছাড়া আহতের সংখ্যা প্রায় দশ হাজার বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি৷ ভূমিকম্পের পর কিংহাই প্রদেশের শহরগুলোতে ধ্বসে পড়া বাড়িঘরগুলোর নীচে হাজার হাজার মানুষ এখনও চাপা পড়ে আছে৷ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল জিয়েগু এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে৷ সেখানকার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শহরের ৮৫ শতাংশ বাড়ি ঘর ধ্বংস হয়ে গেছে৷ কিংহাই প্রদেশের রাজধানী থেকে শহরটির দুরত্ব প্রায় ৮০০ কিলোমিটার হওয়ায় সেখানে সাহায্য পৌছতেও সময় লাগছে৷
চলছে উদ্ধার তৎপরতা
কিন্তু এরপরও উদ্ধার তৎপরতা থেমে নেই কিংহাই প্রদেশে৷ বেঁচে থাকা মানুষগুলো নিজেরাই নেমে পড়েছে উদ্ধার তৎপরতায়৷ সেখানকার এক লোক বললেন, ‘আমরা নিজেরাই ভেঙ্গে পড়া বাড়িগুলো থেকে উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি৷ ওইদিকে উদ্ধাকারী দল একটি স্কুলের হোস্টেলে আটকে পড়া ছাত্রদের উদ্ধারে ব্যস্ত৷ সেখানে প্রায় ২০ জন চাপা পড়ে আছে৷ এছাড়া আরেকটি দল একটি হোটেলের নীচে চাপা পড়া লোকদের বাঁচাতে চেষ্টা করছে৷'
কিংহাই প্রদেশের পুলিশ জানিয়েছে, তারা এখন পর্যন্ত ৯০০ এরও বেশি লোককে জীবিত উদ্ধার করতে পেরেছে৷ চীনা সরকার দুর্গত এলাকা পাঁচ হাজার উদ্ধারকারী কর্মি পাঠিয়েছে৷ এদের মধ্যে ৭০০ সেনা সদস্যও পাঠানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে৷ চীনা প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও দুর্গত এলাকার সহায়তায় ২৯ মিলিয়ন ডলার দেয়ার কথা ঘোষণা করেছেন৷
আন্তর্জাতিক মহলের সহানুভূতি
এদিকে চীনের এই ঘটনায় সহানুভূতি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়৷ জাতিসংঘ সহ যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স, জাপান চীনকে সহায়তা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে৷ ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি বুধবার চীনা প্রেসিডেন্টকে এক চিঠিতে গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন৷ জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন এক বাণীতে চীনা সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন৷ উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের মে মাসে চীনের সিচুয়ান প্রদেশের ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রায় ৮৭ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল৷
প্রতিবেদক: রিয়াজুল ইসলাম, সম্পাদনা: ফাহমিদা সুলতানা