চীনের ভারত-বিরোধী তত্পরতা কি ভারতের কাছে অশনি সঙ্কেত?
৩ সেপ্টেম্বর ২০১০শুধু তাই নয়, বিতর্কিত ঐ অঞ্চলে পরিকাঠামো নির্মাণে চীনের তত্পরতা নিয়েও ভারত তার উদ্বেগের কথা বলেছে৷
বেইজিং-এ নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত এস.জয়শঙ্কর আজ চীনের পররাষ্ট্র দপ্তরের উপমন্ত্রী ঝাং ঝিয়ুঙের সঙ্গে মিলিত হয়ে পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের গিলগিট ও বাল্টিস্তানে চীনের কথিত সেনা উপস্থিতির প্রতিবাদ জানিয়ে ঐ অঞ্চলে চীনের অন্যান্য কাজকর্মে ভারতের উদ্বেগ ব্যক্ত করেছেন৷ যথারীতি চীন এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, ভারত ও চীনের মধ্যে বৈরিতা সৃষ্টি করতে এটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চক্রান্ত৷ চীনের শক্তিবৃদ্ধি আমেরিকার চক্ষুশূল৷
পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের গিলগিট ও বাল্টিস্তান অঞ্চলে ব্যাপক বিনিয়োগ করে চীন তৈরি করছে রেললাইন, হাইওয়ে, তেল ও গ্যাস পাইপলাইনের মত পরিকাঠামো৷ উদ্দেশ্য, কারাকোরাম করিডোরে চীনের কৌশলগত আধিপত্য বিস্তার করা৷ এই করিডোর হবে পাকিস্তানি বন্দর হয়ে চীনের পারস্য উপসাগর তথা পশ্চিম এশিয়া যাবার প্রবেশপথ৷ শুধু ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে নয়, ভারত মহাসাগর এবং মধ্য এশিয়ায় ব্যবসা বাণিজ্য করার মস্ত সুযোগ তৈরি হবে চীনের৷ এজন্য কাশ্মীরকে তুরুপের তাস করছে বেজিং৷
সম্প্রতি চীনের এই ধরণের মতিগতি কি ভারতের কাছে অশনিসঙ্কেত মনে হতে পারে? উত্তরে জওহরলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পলিটিক্যাল স্টাডিজের অধ্যাপক এ.কে রায় ডয়েচে ভেলের কাছে বললেন, ভারতের অপছন্দের কাজ চীন করলেও সেটা আগ্রাসনের লক্ষ্মণ মনে করা ভুল হবে৷ চীন যে সুপারপাওয়ার হতে চলেছে, সেটা বিশ্ব মঞ্চে জাহির করতে চায়৷ তবে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভারতকে ঢিলেমি দিলে চলবেনা৷ কারণ সামরিক শক্তির মাপকাঠিতে ভারতের পরিকাঠামো চীনের তুলনায় খুবই দুর্বল৷ শুধু সামরিক দিক থেকে নয়, অর্থনীতি এবং প্রশাসনিক দিক থেকেও ভারতে দুর্বলতা যথেষ্ট৷ সেক্ষেত্রে উপায় হলো পশ্চিমী শক্তি, যেমন, আমেরিকা, রাশিয়া, ফ্রান্স, জার্মানির সঙ্গে সম্পর্ক আরো মজবুত করা৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন