চীনের কিংহাই প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিকম্প, নিহত চার শতাধিক
১৪ এপ্রিল ২০১০আহত বেশ কয়েক হাজার৷ ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বন্দি হয়ে আছেন অনেকেই৷
বুধবার ভোর রাতে এই ভূমিকম্প যখন আঘাত হানে তখন এই পাহাড়ি এলাকার বেশিরভাগ মানুষ ছিলেন ঘুমিয়ে৷ চীনের উত্তর পশ্চিমের এই এলাকা সাঙ্ঘাতিক ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা নয়৷ তাই সেখানকার বাড়িঘর নির্মাণে ভূমিকম্পের বিষয়টিকে খুব বেশি আমলে নেয়া হয় না৷
জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল চীনের ভয়াবহ এই ভুমিকম্পকে দু:খজনক এবং বেদনাদায়ক বলে উল্লেখ করেছেন বলে বার্লিনে সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন৷ চীনা প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও এর কাছে পাঠানো এক শোকবার্তায় তিনি এই কথা বলছেন৷ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট হোসে মানুয়েল বারোসো অনুরূপ এক শোকবার্তা দিয়েছেন৷ সেই সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদানের ইচ্ছার কথাও জানিয়েছেন তিনি৷
এই ভূমিকম্পের মাত্রা নিয়ে দুই ধরণের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে৷ যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-কম্পন জরিপ সংস্থা ইউএস জিওলজ্যিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, ভোর সাতটা ৪৯ মিনিটের এই ভুমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৯৷ কিন্তু চীনের ভূমিকম্প বিষয়ক কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল সাত দশমিক এক৷
কেবল বাড়ি ঘর নয়, এই ভুমিকম্পের আঘাতে ভেঙে গেছে প্রায় সকল প্রধান সড়ক এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থা৷ স্থানীয় বিমানবন্দরও ভেঙে পড়েছে৷ বহুতল ভবনগুলোতে দেখা দিয়েছে ফাটল৷
ভূমিকম্পের মাত্রা নিয়ে বির্তক থাকলেও ধ্বংসযজ্ঞ নিয়ে কোন বিতর্ক নেই৷ বাড়িঘর ভেঙে যাওয়ায় দুর্গম ঐ এলাকা পুরো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে৷ কিংহাই প্রদেশের মানুষ একে আশ্রয়হারা হয়েছেন, তারপর তাদের জেঁকে ধরেছে প্রচন্ড শীত৷
বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে ঐ অঞ্চলের সরকারি কর্মকর্তা হোয়াং লিমিন জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চারশ'তে৷ এছাড়া প্রায় আট হাজার মানুষ গুরুতর আহত বলে প্রকাশ৷
অপর এক কর্মকর্তা জানান, সেনাবাহিনীর সদস্য এবং উদ্ধার কর্মীরা কাজে নেমে গেছে৷ তারা ধ্বংসস্তূপ থেকে মানুষদের বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে৷ বেঁচে থাকা মানুষের জন্য জরুরি ত্রাণ এবং খাদ্য পাঠানো হচ্ছে, সরবরাহ করা হচ্ছে তাঁবু৷ সেই সঙ্গে সেখানে আরও তিন হাজার নিরাপত্তা কর্মী পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে সরকার৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক