চায়ের দেশ মৌলভীবাজার
বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি চা বাগান আছে মৌলভীবাজার জেলায়৷ ফলে ঢাকা থেকে প্রায় ২১০ কিলোমিটার দূরের এই চায়ের রাজ্য এখন বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন গন্তব্য৷
একটি কুড়ি দু’টি পাতা
একটি কুড়ি দু’টি পাতা, রতনপুর বাগিচায়....চা বাগান নিয়ে ভুপেন হাজারিকার বিখ্যাত সেই গান৷ মৌলভীবাজারে মোট ৯২টি চা বাগান আছে৷ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো ফিনলে, মিতিংগা, ডানকান, শাহবাজপুর, সাতগাঁও, মাইজদিহি, মাথিউরা ও রাজনগর৷
ভাস্কর্য ‘চা কন্যা’
ঢাকা থেকে সড়কপথে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় প্রবেশের আগে দৃষ্টিনন্দন এই ভাষ্কর্যটি দেখা যায়৷ সাতগাঁও চা বাগানের সহায়তায় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন এটি তৈরি করেছে৷ এর সামনেই বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে সাতগাঁও চা বাগান৷
শ্রীমঙ্গলের চা বাগান
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় আছে বেশ কিছু চা বাগান৷ ছোট্ট এই শহরকে পেছনে ফেলে ভানুগাছা সড়ক ধরে এগিয়ে যেতে দুই ধারে শুধুই চা বাগান চোখে পড়ে৷ এই পথে চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিটিআরআই) ভেতর থেকে দক্ষিণমুখী সড়কটি ধরে গেলে ফিনলের চা বাগান ছাড়াও আছে বিটিআরআই-এর নিজস্ব বাগান৷ এছাড়া ভানুগাছা সড়কের গ্রান্ড সুলতান রিসোর্টের সামনে থেকে হাতের ডানের সড়ক ধরে কয়েক কিলোমিটার গেলে পাওয়া যাবে জেরিন টি এস্টেট৷
কুড়ি সংগ্রহের মৌসুম
সাধারণত এপ্রিল মাস থেকে এই মৌসুম শুরু হয়৷ চা বাগান ভ্রমণের এটিই উত্তম সময়, কেননা এই সময় চা বাগানের সৌন্দর্য ছাড়াও চা শ্রমিকদের ব্যস্ততা দেখতে পাওয়া যায়৷
লেক ঘেরা চা বাগান
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে পাহাড় ঘেরা চা বাগানের মাঝে বিশাল এক হ্রদ ‘মাধবপুর লেক’৷ এ পথে যাবার সহজ পথ নূরজাহান টি এস্টেটের পথ ধরে৷ তাহলে পুরো পথেই চোখ জুড়ানো চা বাগান দেখা যাবে৷ মাধবপুর লেকের চারপাশের এ বাগানটি বাংলাদেশ সরকারের ন্যাশনাল টি কোম্পানির বাগান৷
শ্রী গোবিন্দপুর চা বাগান
মাধবপুর লেক থেকে সামনে গেলেই বেসরকারি মালিকানাধীন শ্রী গোবিন্দপুর চা বাগান৷ এ বাগানটির পেছনেও সুন্দর একটি লেক আছে৷
বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ
মাধবপুর লেকের সামনের সড়কটি ইতি টেনেছে ধলই সীমান্তে৷ এ পথের দু’ধারেই সমতল চা বাগান৷ সেখানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সীমান্ত ফাঁড়ির পাশেই এই স্মৃতিসৌধ অবস্থিত৷
বাগানঘেরা দীর্ঘ পথ
ধলই সীমান্তে ধলই চা-বাগানের ভেতর থেকে পশ্চিমমুখী সরু সড়কটি অনেকগুলো চা বাগানের ভেতর দিয়ে শ্রীমঙ্গলে এসে থেমেছে৷ ছায়াঢাকা এ পথটি যে কোনো পর্যটকের কাছেই আকর্ষণীয়৷
চা শ্রমিকদের কষ্টের জীবন
দিন শেষে নিজেদের সংগ্রহ করা পাতা নিয়ে পরিমাপের জন্য যাচ্ছেন চা শ্রমিকরা৷ চা শ্রমিকদের পারিশ্রমিক বর্তমান বাজারের তুলনায় খুবই কম৷ বর্তমানে সারাদিন কাজ করে একজন শ্রমিক পাঁচ তারকা হোটেলের এক কাপ চায়ের মূল্যের সমানও পারিশ্রমিক পান না৷
বেশিরভাগই নারী
চা শ্রমিকদের বেশিরভাগই নারী৷ এ সব শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে কোনো স্বাধীনতা নেই৷ বাগানের মধ্যে নেই ট্রেড ইউনিয়নের কার্যক্রমও৷
জুড়ির চা বাগান
মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলাতেও আছে বেশ কয়েকটি চা বাগান৷ এ বাগানগুলোও বেশ সুন্দর৷
রাবার বাগান
চা বাগানের পাশাপাশি মৌলভীবাজার জেলায় আছে বেশ কিছু রাবার বাগান৷ এ সব বাগানে গেলে দেখা যাবে গাছ থেকে রাবার সংগ্রহের কৌশল৷
মৌসুমি ফল চাষ
শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছা সড়ক ধরে নানান ফলমূল নিয়ে বাজারে যাচ্ছেন কৃষকরা৷ শ্রীমঙ্গলে চা বাগানের পাশাপাশি টিলাগুলোতে বিভিন্ন মৌসুমি ফলমূলও চাষ করেন তাঁরা৷