ঘুরে ফিরে বারবারই মনে পড়ে ছেলেবেলার কথা
৩ নভেম্বর ২০১০অনেক ছোট বেলার আনন্দের স্মৃতি বিজড়িত সেই দিনগুলোকে আমরা কেউই ভুলে যাই না৷ ঘুরে ফিরে বারবারই আমাদের তা মনে পড়ে৷ আমরা ফিরে যাই সোনালী সেই দিনগুলোতে৷ ফিরে পেতে চাই হারিয়ে যাওয়া সেই দিনগুলিকে৷
এ ধরণের কাজেই নিজেকে নিয়োজিত করেছেন ৫২ বছর বয়স্ক নবার্লিন নাগরিক ক্লাউস ফারিন৷ বার্লিনে প্রথমবারের মত তরুণ প্রজন্মের জন্য আর্কাইভ তৈরি করেছেন ফারিন৷ কী আছে সেই আর্কাইভে? পঞ্চাশের দশকের এলপি, ম্যাগাজিন, নিউজপেপার কাটিং, স্টিকার, পিনআপ বাটন– সবকিছুই৷ অনায়াসেই মুহূর্তের মধ্যে যে কোন প্রবীণ জার্মান হারিয়ে যেতে পারবেন তাঁর দুরন্ত শৈশব এবং ছেলেবেলায়৷
ক্লাউস ফারিনের হাতে ‘ব্রাভো' ম্যাগাজিনের একটি কপি৷ প্রচ্ছদটি সাদা কালো৷ সেই সময় জার্মানির তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি ম্যাগাজিনই বাজারে আসতো, ‘ব্রাভো'৷ সাল ১৯৫৬৷ বার্লিনের ক্রয়েৎসব্যার্গের এই আর্কাইভের কাজ ফারিন শুরু করেন ১৯৯৮ সাল থেকে৷ ফারিন জানান, ‘‘সত্যি কথা বলতে আমি কখনো ‘ব্রাভো' পড়িনি৷ কারণ মেয়েরাই তা নিয়ে মেতে থাকতো বেশি৷ ছেলেরা তাই ‘ব্রাভো'র ধারে কাছে যেত না৷''
ব্রাভোর পাশের তাকগুলোতে আরো অনেক ধরণের ম্যাগাজিন, পত্রিকা, এলপি, সিডি রাখা৷ এছাড়া রয়েছে পুরনো এবং জনপ্রিয় তারকা আর শ্লোগান খচিত টি-শার্ট, পিনআপ-বাটন, স্টিকার, ফ্লাইয়ার৷ এসব ফারিন আর কিছু সহকর্মী আর্কাইভের জন্য যোগাড় করেছেন৷ সবমিলে প্রায় ৩০ হাজারের মত ম্যাগাজিন আর পত্রিকা সংগ্রহ করা হয়েছে৷
ফারিনের বয়স যখন ১৪ তখন তিনি নিজেই স্কুলের জন্য একটি স্কুল-পত্রিকা বের করতেন৷ সংগ্রহে এ ধরণের স্কুল পত্রিকা রয়েছে প্রায় ৮ হাজার৷ একটু বড় হওয়ার পর ঝোঁক চল যায় অন্যদিকে৷ ফারিন জানান, ‘‘আমার বয়স যখন ১৭ তখনই আমি যুব সংস্কৃতির ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে পড়ি৷ পরে এই বিষয়টির ওপর বহু তত্ত্বতালাশ করেছি, সংগ্রহ করেছি অনেক কিছু৷ এই কাজগুলো করতে গিয়ে লক্ষ্য করেছি যে এ সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার কোন জায়গা নেই৷ যদিও চাহিদাটা রয়ে গেছে৷ তখন ভাবলাম কাজটা আমি নিজেই করব৷ এভাবেই আমি শুরু করে দেই আর্কাইভের কাজ৷''
তবে এই আর্কাইভ টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন অর্থের৷ ফারিনের প্রয়োজন ৩৫ হাজার ইউরো৷ কারণ আর্কাইভের সংগ্রহে প্রতিদিনই কিছু না কিছু আসছে৷ সবকিছুই রক্ষা করতে হবে৷ স্মৃতিকে ধরে রাখতে হবে৷ তবে ক্লাউস ফারিন দমে যাচ্ছেন না কারণ স্মৃতি কখনোই বিস্মৃতি হয় না৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক