1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঘুমের মধ্যেও গোল হয়ে সাঁতার কাটে ডলফিন

২৫ আগস্ট ২০১০

ডলফিন এক চোখ বন্ধ করে ঘুমোয়৷ আর ওরা যখন ঘুমোয় তখন এদের মস্তিষ্কের মাত্র অর্ধেক অংশ বিশ্রাম নেয়৷

https://p.dw.com/p/OvNW
ডলফিন নাকি এক চোখ বন্ধ করে ঘুমোয়ছবি: AP

গেনোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক, পঁয়ত্রিশ বছরের এই ফোসসা৷ তিঁনি ও তাঁর দুই সহকর্মী ২০০৬ সাল থেকে ইটালির উত্তর-পশ্চিমের গেনোয়া উপসাগরে ডলফিনদের জীবনযাত্রা নিয়ে গবেষণা করছেন৷ আর তাঁদের গবেষণাই জানাচ্ছে এই নতুন তথ্য৷

‘‘ওরা ঐদিকেই আছে'' ফিসফিস করে বলছিলো ফালভিও ফোসসা৷ ঠোঁটের মৃদু হাসিই বলে দিচ্ছিলো ডলফিনের ঝাঁকটির অবস্থান বুঝতে পেরে গেছেন তিনি৷ অনেক সময় জোরে বাতাস বয় আবার কখনওবা বৃষ্টি৷ তাতে কী এসে যায়! সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার তিনি এই উপসাগরে আসেনই৷

ভূ-মধ্যসাগরীয় অঞ্চল ও ইটালির উত্তর-পশ্চিমের গেনোয়া উপসাগরের বিভিন জায়গায় গবেষণা চালিয়েছেন গবেষকরা৷ ইউরোপের সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘গেনোয়াজ অ্যাকুরিয়াম'৷ এর পাশের এই উপসাগরে গবেষকরা ডলফিনের গতিবিধি খেয়াল করেছেন, ছবি তুলেছেন এবং তালিকা তৈরি করেছেন৷

বার্তা সংস্থা রয়টারকে ফোসসা বললেন, পূর্ণবয়স্ক ডলফিন তিন থেকে সাড়ে তিন মিটার হয়ে থাকে এবং বন্দী অবস্থায় এরা বাঁচে প্রায় ৪৫ বছর৷ যেখানে প্রাকৃতিকভাবে খোলা অবস্থায় বাঁচে আরও দশ বছর কম৷ অন্যদিকে প্রতিকূলতার মাঝে নিজেদেরকে রক্ষার ব্যাপারে এগিয়ে আছে স্ত্রী ডলফিনরা৷

Flash-Galerie Haustiere Delphine bei Hawaii
পূর্ণবয়স্ক ডলফিন তিন থেকে সাড়ে তিন মিটার হয়ে থাকেছবি: AP

ফোসসা বলছেন, ডলফিন যখন ঘুমোয় তখনও বৃত্তাকারে সাঁতার কাটতে থাকে৷ এদের বন্ধ এক চোখ দেখলে মনে হয় মস্তিষ্কের যে অংশটি ঘুম আনে যেন তার প্রতিনিধিত্ব করছে৷

মানুষের সঙ্গে ডলফিনের সম্পর্কটাও একটা বিশদ গবেষণার বিষয়৷ মানুষ এদের কাছে সবচেয়ে বেশি বিপদজনক৷ কেননা, একমাত্র মানুষই রাসায়নিক পদার্থ ফেলে পরিবেশকে দূষিত করে ফেলে এবং এদের খাবারের উৎসকে নিঃস্ব করে দেয়৷ আবার, অন্য কিছু মাছের সঙ্গে কিছুটা মিল থাকায় জেলেদের জালেও অনেকসময় উঠতে হয় এদের৷ আর এইসব কারণেই ডলফিনরাও জেলেদের জাল কেড়ে নেয়৷ তবে তীরবর্তী অঞ্চলে যারা বাস করেন তাদেরকে মনে হয় ডলফিনরা পছন্দই করে৷ বলছিলেন ফোসসা৷ এখন অবশ্য ডলফিনদের গতিবিধি অনুসরণও করতে পারেন তিনি৷ বিশেষ করে কয়েকটা ডলফিন তাঁর কাছে এতটাই পরিচিত হয়ে গেছে যে তিনি ওদের নামও রেখেছেন৷

‘গেনোয়াস অ্যাকুরিয়াম' ভিত্তিক এই গবেষণা প্রকল্পটির প্রধান গিডো গোনে৷ তিনি বলছেন, ‘‘ডলফিনদের দেখলে মনে হয় এরা বুঝি দেখতে সব একইরকম৷ কিন্তু আপনি যদি কাছ থেকে খেয়াল করেন দেখবেন, এদের ডানা একটার চেয়ে আরেকটার একেবারে আলাদা৷''

ফোসসা ডলফিনের ছবিগুলো পাঠিয়েছেন গোনে-র কাছে৷ আর গোনে এগুলো নিয়ে একটা আর্কাইভ তৈরি করছেন৷ এতে বছরের পর বছর ধরে ডলফিনদের এই গতিবিধি গবেষকরা এখান থেকে জানতে পারবেন৷

গেনোয়াস অ্যাকুরিয়ামের ফাইলে এখন এদের দু'শো চুয়াল্লিশটি নমুনা আছে৷ দু‘টি ডলফিনকে বড় একটা ট্যাংকের মধ্যে পানি দিয়ে রাখা হয়েছে কম বয়সী দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করতে৷ গোনে বললেন, ‘‘আমার প্রধান লক্ষ্যই ছিলো ডলফিন সম্পর্কে আমাদের সীমিত জ্ঞানকে বাড়ানো৷ আর কিছু নয়৷''

প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস

সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়