‘ঘরই প্রাথমিক বিদ্যালয়, অভিবাবকই বড় শিক্ষক' | পাঠক ভাবনা | DW | 14.10.2015
  1. Inhalt
  2. Navigation
  3. Weitere Inhalte
  4. Metanavigation
  5. Suche
  6. Choose from 30 Languages

পাঠক ভাবনা

‘ঘরই প্রাথমিক বিদ্যালয়, অভিবাবকই বড় শিক্ষক'

‘‘বাংলাদেশে কিশোর অপরাধ বন্ধ করতে সুশিক্ষা আর অভিবাবকদের সচেতনতাই যথেষ্ট'' – এ রকম মন্তব্য ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় অনেক পাঠকের৷ তবে কেউ কেউ আবার কিশোর অপরাধের জন্য দায়ী করেছেন সরকারকেও৷

কিশোর অপরাধ বন্ধ করতে হলে, ‘‘সকলকে শিক্ষার আলো দেখাতে হবে''৷ এই মন্তব্য ফেসবুক বন্ধু সরকার চন্দনের৷ পাঠক জসিম উদ্দিন অবশ্য ‘কিশোর অপরাধের' জন্য সমাজের প্রভাবশালী মানুষদেরই দায়ী করেছেন, যারা কিশোরদের বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়াতে বাধ্য করছেন৷

মো. সালাউদ্দিন মনে করেন তিনটি বিষয়ের দিকে গুরুত্ব দিলেই কিশোর অপরাধ বন্ধ হতে পারে৷ এই তিনটি বিষয় হলো, ‘‘কিশোরদের কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নিতে হবে, বিশেষ করে ইন্টারনেট সংযোগসহ মোবাইল/কম্পিউটার৷ ডিশ দেখা বন্ধ করে দিতে হবে৷ আর ধর্মীয় শিক্ষা দিতে হবে৷''

‘‘ধর্মীয় শিক্ষা দিতে হবে৷ দারিদ্রতা নিশ্চিহ্ন করতে হবে৷ সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে৷ শিশুশ্রম বন্ধ করতে হবে, শিশু নির্যাতন বন্ধ করতে হবে৷'' আল-ইমরানও মনে করেন এগুলো বন্ধ করলেই নাকি কাজ হবে৷ অর্থাৎ কিশোর অপরাধ আর থাকবে না বাংলাদেশে৷

তবে সুকেশ সাহা অবশ্য পুরোপুরি ভিন্ন কথা বলছেন৷ তিনি মনে করেন, যাদের বাচ্চা মানুষ করার ক্ষমতা নেই, তাদের বেশি সন্তান নেয়ার প্রয়োজনও নেই৷

কিশোর অপরাধের সাথে নারীদের কী সম্পর্ক তা ঠিক বোঝা গেলো না বন্ধু মাহমুদ হাসানের মন্তব্যে থেকে৷ কারণ তিনি লিখেছেন ‘‘কিশোর অপরাধ বন্ধ করতে মহিলা প্রধানমন্ত্রী বর্জন করতে হবে৷''

যে কোনো দেশেরই সার্বিক পরিস্থিতি ভালো হলে সে দেশে যে কোনো অপরাধই কম হয়, যা স্বাভাবিক৷ আর সে'কথাটাই পাঠক সামসুল হক লিখেছেন এভাবে, ‘‘বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি ভালো হলে সব অপরাধই কমে যাবে৷'' এর কারণও তিনি লিখে জানিয়েছেন এভাবে: ‘‘ঢাকা বা অন্য কোনো শহরে একটু খেয়াল করলেই দেখবেন, ৮ থেকে ১৪-১৫ বছরের বাচ্চারা প্রকাশ্যে পলিথিনে করে নেশা সেবন করছে৷ তাদেরও পালের গোদা আছে, যারা পূর্ণবয়স্ক এবং তারাই এ পথের গুরু৷ নেশা করার পর ওরা যে কোনো অপরাধ করতে পারে৷ প্রকাশ্যে নেশা করলেও ওদের নিবৃত করতে দায়িত্বশীল কোনো মহল এগিয়ে আসে না৷ তাদের কোনো গরজ আছে বলেও মনে হয় না৷''

পড়াশোনা, খেলাধুলা, ধর্মীয় শিক্ষা ও নানা নিয়ম-কানুন শেখানোর মধ্য দিয়ে কিশোরদেরঅপরাধ প্রবণতা বন্ধ করা সম্ভব বলে মনে করেন তানভীর আহমেদ৷

জিয়ায়ুল হকেরও প্রায় একই মত৷ ‘‘মূল বিষয় হচ্ছে শিক্ষা আর সকলের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করতে পারলে স্বাভাবিকভাবেই অপরাধ কমে আসবে৷''

শাসক এবং রক্ষককে সৎ হতে হবে তবেই কিশোর অপরাধ বন্ধ করা সম্ভব বলে ফেসবুকে জানিয়েছেন বেলাল উদ্দিন নাহিদ৷

রিয়াজ উদ্দিনের ধারণা, টাকার তাড়নায়-ই কিশোররা এ সব অপরাধ করে থাকে৷

‘‘বাংলাদেশে কিশোর অপরাধ বন্ধ করতে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে হবে'' মন্তব্য ফেসবুক বন্ধু আনিসুরের৷

পরেশ নাথ কিশোর অপরাধ বন্ধের ব্যাপারে পরিবারকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন৷ পরেশ নাথের মতে, ‘‘কিশোর অপরাধ বন্ধ করতে পরিবারের সকলকে আলোচনায় বসতে হবে ৷ কিশোরদের বাবা-মা, আত্মীরা মিলে আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি সমাধান খুঁজে বের করতে হবে৷''

ডয়চে ভেলের ফেসবুক বন্ধু রিজওয়ান কিশোর অপরাধের জন্য বাংলাদেশের রাজনীতিকদেরই দায়ী করছেন৷ তাঁর মতে,

‘‘বাংলাদেশের সংসদ সদস্যগণ এবং পুলিশ, ব়্যাব, বিজিবি যতদিন পর্যন্ত আন্তরিক না হবে এবং ঘুস না ছাড়বে, ততদিন পর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো দুর্নীতিবাজ লোকদের চরিত্র সংশোধন হবে না৷ তা সে শিশু বা কিশোর যুবক – যে ই হোক না কেন এবং বাংলাদেশের উন্নতিও হবে না, শান্তিও আসবে না৷''

‘‘শিশুরা যাতে লেখাপড়া করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে এবং পড়া শেষে কর্মসংস্থান করতে হবে৷'' কিশোর অপরাধ বন্ধ করতে আলমগীর হোসেনের মন্তব্য৷

যেসব কিশোররা অপরাধ করে তারা বেশিরভাগই পথশিশু, তাই ওদের পুনর্বাসন ও শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে৷ এই মন্তব্য জাহাঙ্গীর আলমের৷

বাংলাদেশের কিশোর অপরাধ বন্ধ করতে ‘‘আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, বাধ্যতামূলক শিক্ষা ব্যবস্থা, আইনের সংশোধনী, মন-মানসিকতার পরিবর্তন এগুলো সবার আগে নিশ্চত করতে হবে'', বলে মনে করেন বন্ধু শাকিল৷

কিশোর অপরাধ দমনে পরিবার প্রধান৷ কারণ পরিবারের বড়রা যদি ছোটদের সিগারেট কিনতে না পাঠায়, তাহলে অপরাধের প্রবণতা কমে যাবে৷ কারণ চারদিন অন্যের জন্য সিগারেট কিনতে কিনতে সে একদিন নিজের জন্যও কিনবে আর এরপর শুরু হলো মাদক গ্রহণ, তার সাথে অপরাধ৷ ধীরে ধীরে যখন টাকা কাছে থাকবে না শুরু হবে চুরি করা৷'' এই মন্তব্য ডয়চে ভেলের ফেসবুক বন্ধু এ বি জায়েদের৷ অর্থাৎ অন্যান্য পাঠকদের মতো জায়েদেরও একই কথা – ‘‘কিশোর অপরাধ বন্ধ করতে হলে সবচেয়ে আগে পরিবারকেই সচেতন হতে হবে৷''

সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ডয়চে ভেলের ফেসবুক বন্ধু ওমর পারভেজের মন্তব্য এরকম, ‘‘ছাত্রদের জন্য পড়াশোনা ফ্রি করতে হবে এবং প্রয়োজনে সরকারের পক্ষ থেকে ওদের থাকার ব্যবস্থাও করতে হবে তবেই কিশোর অপরাধ বন্ধ করা সম্ভব৷''

‘‘কিশোর অপরাধ বন্ধ করতে সুশিক্ষা আর অভিবাবকদের সচেতনতাই যথেষ্ট'' – মন্তব্য ডয়চে ভেলের ফেসবুক বন্ধু ইমরান খানের৷

সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

নির্বাচিত প্রতিবেদন