1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে অভিনব উদ্যোগ

৩ মে ২০১৩

জার্মানির পূর্বাঞ্চলে প্রায় ফাঁকা হয়ে যাওয়া গ্রামগুলির কল্যাণে নিয়োগ করা হচ্ছে এমন সব ‘অভিভাবক'-দের, যাঁরা নিজেদের উদ্যম ও সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে আবার সুদিন ফিরিয়ে আনার ক্ষমতা রাখেন৷

https://p.dw.com/p/18QFz

গ্রামের বেহাল অবস্থা

জার্মানির ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যের অন্য অনেক গ্রামের মতো আল্টক্যুনকেনডর্ফ-এরও পড়তি দশা৷ গ্রামে বেশি কিছু অবশিষ্ট নেই৷ একটা গির্জা, একটা বাস-স্টপ, কয়েকটা হাঁস৷ জনসংখ্যা মাত্র ২০০৷ যাঁরা আছেন, তাঁদেরও মন যেন ভেঙে যাচ্ছে৷

গ্রামের ‘অভিভাবক' হান্স ইয়ুর্গেন বেভার হাল ছাড়তে প্রস্তুত নন৷ তিনি বললেন, ‘‘নিজের দৃষ্টান্ত দেখিয়েই আমি গ্রামের মানুষকে উৎসাহ দিতে চাই৷ অবসাদ ভুলে তাদের জেগে উঠতে হবে, সক্রিয় হতে হবে, গ্রামের জন্য আবার কিছু করতে হবে৷''

সুযোগের সদ্ব্যবহারই চাবিকাঠি

গ্রামের অভিভাবকের স্বপ্ন রয়েছে৷ যেমন অবসর নিলেও বেভার কিন্তু উদ্যম হারিয়ে ফেলেন নি৷ গ্রামের কাছেই একটি আকর্ষণ রয়েছে, যেটিকে তিনি কাজে লাগাতে চান৷ বেভার মনে করেন, ‘‘এখানে বিচ গাছের যে জঙ্গল রয়েছে, ইউনেস্কো তাকে বিশ্ব প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে৷ মনে রাখবেন, অ্যামেরিকার গ্র্যান্ড ক্যানিয়নও সেই তালিকায় রয়েছে৷''

Grumsiner Buchenwald
ইউনেস্কো-স্বীকৃত বিচ গাছের যে জঙ্গলছবি: picture-alliance/dpa

অর্থাৎ গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের সমকক্ষ হওয়ায় ব্রান্ডেনবুর্গের বিচ গাছের জঙ্গলের সম্ভাবনা কম নয়৷ বেভার-এর মতে, গ্রামের জন্য এটা বিশাল একটা সুযোগ৷ এমন সুযোগ বার বার আসে না৷ সেটাই তিনি কাজে লাগাবার চেষ্টা করছেন৷

সার্বিক উদ্যোগ

গোটা রাজ্যে গ্রামের অভিভাবক পদ সবে চালু হচ্ছে৷ হান্স ইয়ুর্গেন বেভার তাদের মধ্যে অন্যতম৷ অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে কাজ করছেন তিনি৷ বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তিনি কাছের শহরের টাউন হলে গিয়ে তিনি প্রকল্পের অনুমতি ও আর্থিক অনুদান আদায় করার চেষ্টা করেন৷ সহজে ‘না' শোনার পাত্র নন তিনি৷

টাউন হলে সবাই এই গোঁয়ার মানুষটিকে কিন্তু পছন্দই করে৷ আঙারম্যুন্ডে শহরের ডেপুটি মেয়র বির্গিট রিটার বললেন, ‘‘আমার মনে হয়, এলাকার সব বিষয়গুলি তাঁর নখদর্পণে৷ তিনি কোনো দৃষ্টান্ত দেখান, তারপর স্থানীয় ক্লাব, গির্জা থেকে লোকজন জড়ো করে কাজটা শুরু করে দেন৷ লক্ষ্য স্থির করে কাজ করাই তাঁর বিশেষত্ব৷''

মানুষের মধ্যে উদ্যম

এমন উৎসাহী অভিভাবক পেয়ে গ্রামের কিছু মানুষও নড়েচড়ে বসছেন৷ তাঁদের একজন বললেন, বেভার তো সব সময়ে পিছনে পড়ে থাকেন, চাপ দেন৷ সত্যি গ্রামের জন্য অনেক কাজ করছেন৷ আরেকজন মনে করেন, বিশ্ব প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের দেখাশোনার জন্য তিনি অনেক কাজ করছেন৷ তাদের অনেক সুযোগ আছে৷ এই গ্রাম হয়ে উঠতে পারে সেখানে প্রবেশের দ্বার৷

রাজ্য সরকারের শ্রম, সামাজিক, নারী ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়েও সবাই গ্রামের এই অভিভাবককে নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট৷ গোটা রাজ্যে আপাতত ৮ জন এমন অভিভাবক নিয়োগ করা হয়েছে৷ তাঁদের মধ্যে কেউ হয়ত সাফল্য দেখাতে পারবেন৷ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গাব্রিয়েল হেসে বললেন, ‘‘গ্রাম থেকে শহরমুখী অভিবাসনের ফলে বিশেষ করে ছোট গ্রামগুলির অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রয়োজন৷ উদ্যোগ আসতে হবে স্থানীয় পর্যায় থেকে৷ গ্রামের অভিভাবক নিয়োগ করে আমাদের অভিজ্ঞতা বেশ ইতিবাচক হয়েছে৷ গ্রামে কারো কোনো প্রস্তাব থাকলে, সেখানেই আলোচনা করে মানুষকে উৎসাহ দিতে পারলে কাজ হয়৷ নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে, যা নতুন অবকাঠামোর জন্ম দেয়, কর্মসংস্থান ঘটে, জায়গাটি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে৷''

হান্স ইয়ুর্গেন বেভার আগামী প্রকল্প নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করে দিয়েছেন৷ গির্জার টাওয়ার-টিকে ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারলে পর্যটকরা সেখান থেকে ইউনেস্কো স্বীকৃত জঙ্গলটির দারুণ দৃশ্য দেখতে পারবেন৷

এসবি/ডিজি