গ্রহাণুর বুকে মহাকাশযান
গ্রহ-নক্ষত্রের রহস্য উন্মোচনে মানুষ যথেষ্ট উদ্যোগ দেখিয়ে চলেছে৷ কিন্তু গ্রহাণু? কিছুদিন আগেই একটি গ্রহাণু আচমকা পৃথিবীর বিপজ্জনক রকম কাছে এসে পড়েছিল৷ নাসা এবার ‘বেনু’ নামের এক গ্রহাণুতে যান পাঠালো৷
যাত্রার সূচনা
২০১৬ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর ভোরে যাত্রা শুরু করলো ‘অসিরিস-রেক্স’ নামের যান৷ সেটিকে মহাকাশে পৌঁছে দেবার দায়িত্ব নিয়েছে ‘অ্যাটলাস-ভি’ রকেট৷ প্রায় সাত বছরের এই অভিযানে ‘বেনু’ গ্রহাণু থেকে মূল্যবান নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার কথা৷
‘বেনু’ কেন?
প্রায় ৫ লক্ষ গ্রহাণুর মধ্যে ‘বেনু’-কেই গন্তব্য হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে, কারণ তার কক্ষপথ পৃথিবীর খুব কাছে৷ তাছাড়া আয়তনের দিক থেকেও আদর্শ৷ নাসার তথ্যভাণ্ডারে অন্যতম প্রাচীন গ্রহাণু এটি৷
লাভ-লোকসানের হিসেব
প্রায় ৮০ কোটি ডলারের এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য প্রায় ৪৫,০০০ কোটি বছর আগের অবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা৷ সেখান থেকে ধুলাবালি, ধাতু ও মাটির নমুনা সংগ্রহ করে ২০২৩ সালে ‘অসিরিস-রেক্স’ আবার ঘরে ফিরে আসলে বিজ্ঞানীরা মূল্যবান জ্ঞান অর্জনের আশা করছেন৷
ছোট হলেও শক্তিশালী
‘অসিরিস-রেক্স’-এর আকার একটি এসইউভি গাড়ির মতো হলেও অত্যন্ত উন্নত যন্ত্রপাতি ভরা রয়েছে৷ নানা রকমের ক্যামেরা, লেজার, স্পেকট্রোমিটার এই প্রথম কোনো গ্রহাণুর মধ্যে ধাতুর বিন্যাস পরীক্ষা করবে৷
গ্রহাণুতে অনেক কাজ
২০১৮ সালের আগস্ট মাসে ‘অসিরিস-রেক্স’-এর ‘বেনু’ গ্রহাণু পৌঁছানোর কথা৷ সেখানে প্রায় দু-বছর ধরে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্যস্ত থাকবে যানটি৷ তারপর ২০২০ সালের জুলাই মাসে নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু হবে৷ তবে সরাসরি গ্রহাণুর ‘মাটি’ ছোঁবে না এই যান৷
মূল্যবান নমুনা
গত শতাব্দীর ষাট ও সত্তরের দশকে অ্যাপোলো অভিযানের পর এত পরিমাণ মহাজাগতিক নমুনা পৃথিবীতে আনা হয়নি৷ নাসা আশা করছে, ‘অসিরিস-রেক্স’ এই কাজে অত্যন্ত সফল হবে৷ ‘ট্যাগস্যাম’ নামের এক যন্ত্র ভাসমান যান থেকে হাত বাড়িয়ে সেই কাজ করবে৷
পৃথিবীর জন্য বিপদ
এই অভিযানের আরেকটি উদ্দেশ্য ‘ইয়ারকভস্কি এফেক্ট’ সম্পর্কে আরও জ্ঞান অর্জন করা৷ সূর্যের আলো গ্রহাণুদের কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত করার ফলে তারা বিপথগামী হয়ে পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটাতে পারে৷ এমন ঝুঁকির আগাম পূর্বাভাষ দিতে চান বিজ্ঞানীরা৷ এই অভিযান সম্পর্কে আরও জানতে উপরে ডানদিকে ক্লিক করুন৷