1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘গোপন ক্ষুধা'-কে ভুলে গেলে চলবে না

সংবাদভাষ্য : গ্রেহেম লুকাস/এসিবি১৪ অক্টোবর ২০১৪

গত ২৫ বছরে ক্ষুধার প্রকোপ উল্লেখযোগ্য হারে কমলেও সারা বিশ্বে এখনো দু'শ কোটিরও বেশি মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে৷ জিএইচআই-এর প্রতিবেদন জানাচ্ছে এই তথ্য৷ প্রতিবেদনটির খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোকপাত করেছেন ডয়চে ভেলের গ্রেহেম লুকাস৷

https://p.dw.com/p/1DVPJ
Symbolbild Hungernot Afrika
ছবি: picture-alliance/dpa

এ বছরের গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (জিএইচআই) প্রতিবেদন বেশ কিছু ভালো খবর দিয়েছে৷ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৯০ সাল থেকে সারা বিশ্বে ক্ষুধার প্রকোপ শতকরা ৩৯ ভাগ কমেছে৷ বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া এবং ইন্দোনেশিয়াসহ এশিয়ার মোট ২৬টি দেশ এ সময়ে ক্ষুধাপীড়িত জনগোষ্ঠীর অবস্থার উন্নয়ন ঘটিয়ে ‘উদ্বেগজনক' থেকে (প্রচেষ্টায়) ‘আন্তরিক' পর্যায়ে উঠে এসেছে৷ এশিয়ার বাকি দেশগুলোর মধ্যে চীন, থাইল্যান্ড, মঙ্গোলিয়া এবং ভিয়েতনামের অবস্থা আরো ভালো৷ জিএইচআই প্রতিবেদন তাদের ‘মাঝারি' পর্যায়ে উঠে আসার স্বীকৃতি দিয়েছে৷

Dürre ohne Ende Am Horn von Afrika droht Hungersnot
সারা বিশ্বে এ মুহূর্তে শুধু মাংস ছাড়া বাকি সব খাদ্যদ্রব্যের দাম গত চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে কমছবি: picture-alliance/dpa

জাতিসংঘের খাদ্য এবং কৃষি বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ২০১৪ সালের জিএইচআই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হলো৷ জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, সারা বিশ্বে এ মুহূর্তে শুধু মাংস ছাড়া বাকি সব খাদ্যদ্রব্যের দাম গত চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম৷ তারপরও সরকার এবং সাহায্য সংস্থাগুলোর প্রশংসা শুরু করার আগে জিএইচআই প্রতিবেদনের অন্য কিছু তথ্যের দিকে দৃষ্টি দেয়া উচিত৷

বিশ্বের ক্ষুধা পরিস্থিতি তুলে ধরা জিএইচআই প্রতিবেদনে কিছু খারাপ খবরও দেয়া হয়েছে৷ খারাপ হলেও খবরগুলো আশ্চর্যজনক নয়৷ ক্ষুধার সঙ্গে জাতিগত সংঘাত বা যুদ্ধেরও সম্পর্ক আছে৷ দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া এবং ইরাকের চলমান যুদ্ধের কারণে অনেক মানুষ ঘরছাড়া হয়েছে৷ শরণার্থীদের অবস্থা খুব খারাপ৷ তাছাড়া ইরাকে অপুষ্টিতে ভুগছে এমন শিশুর সংখ্যা ১৯৯০ সালের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে৷ ইবোলার কারণে পশ্চিম আফ্রিকার কিছু দেশের বিষয়েও সতর্কবার্তা উচ্চারণ করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ তাঁরা বলছেন, দেশগুলোতে আগামীতে বড় রকমের খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে৷ এ মুহূর্তে আমরা যা অনুমান করছি, ইবোলার বিস্তারের কারণে পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর পরিস্থিতি তার চেয়ে অনেক খারাপ হতে পারে৷

Infografik Welthunger-Index 2014 Indikatoren Portugiesisch
অপুষ্টিতে ভুগে সারা বিশ্বে এখনো প্রতি বছর মারা যাচ্ছে ৩১ লাখ শিশু

যুদ্ধকবলিত দেশগুলোর ক্ষুধা পরিস্থিতির উন্নয়ন করা মোটেই সহজ নয়৷ এ সব দেশে ক্ষুধাগ্রস্থদের কাছে সাহায্য সংস্থাগুলো যেতেই পারে না৷ সংস্থাগুলোর কর্মীদের জীবনের ঝুঁকি নিতে হয়৷ ধরা পড়লে মৃত্যু অবধারিত৷ সাম্প্রতিককালে আমরা সিরিয়া এবং ইরাকে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট-এর হাতে করুণ এবং নৃশংস শিরশ্ছেদের মতো ঘটনাও ঘটতে দেখেছি৷ সংবাদমাধ্যমে এ সব খবর সবসময়ই আসে, কিন্তু নিরীহ মানুষদের ভোগান্তির দিকটা অনেক সময় আড়ালে থেকে যায়৷ যুদ্ধ কবলিত দেশগুলোর রাজনীতিবিদদের এখন সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসার প্রয়াস দ্বিগুণ হারে করা উচিত এবং সে প্রয়াসে শান্তি স্থাপনের মনোভাবকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন – এমন বার্তাও দিয়েছে জিএইচআই প্রতিবেদন৷

DW Bengali Grahame Lucas
গ্রেহেম লুকাস, এই সংবাদভাষ্যের লেখকছবি: DW/Matthias Müller

উন্নত দেশগুলোর জন্যও সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছে এই প্রতিবেদন৷ পুষ্টিহীনতা উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এখন বড় সমস্যা নয়৷ তবে প্রতিবেদনটি বলছে, এ সব দেশেও পুষ্টিহীনতার সমস্যা আছে৷ এখনো আড়ালে থেকে যাওয়া এ সমস্যাকে ‘গোপন ক্ষুধা' হিসেবে বর্ণনা করেছে জিএইচআই৷

অপুষ্টিতে ভুগে সারা বিশ্বে এখনো প্রতি বছর মারা যাচ্ছে ৩১ লাখ শিশু৷ আয়োডিনের ঘাটতির জন্য প্রতি বছর অন্তত ১ কোটি ৮০ লাখ শিশু জন্ম নেয় মস্তিষ্কের সমস্যা নিয়ে৷ এ সমস্যা কীভাবে সমাধান করা যায়, তার কিছু উপায়ের কথাও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে৷ বলা বাহুল্য, তা করতে গেলে ভিটামিন, আয়রন, জিংক এবং আয়োডিনযুক্ত খাবার সরবরাহ করতেই হবে৷ এক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যাপক আন্তর্জাতিক উদ্যোগ প্রয়োজন৷

জিএইচআই প্রতিবেদন প্রণয়নে অংশ নেয়া কিছু সাহায্য সংস্থা বিশ্বের কোটি কোটি ক্ষুধার্ত মানুষের উন্নততর জীবনের নিশ্চয়তা দেয়ার লক্ষ্যে বৃহত্তর আন্তর্জাতিক উদ্যোগের আহ্বান জানিয়েছে৷ যথার্থ আহ্বান৷ তবে এক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোর সহায়তা সবার আগে প্রয়োজন, যে সব দেশে সবচেয়ে বড় খাদ্য সমস্যা হলো মানুষের ওজন কমানোর জন্য খাদ্যতালিকা স্থির করা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য