গিনি বিসাউয়ে অভ্যুত্থান, প্রধানমন্ত্রী ও সেনা প্রধান আটক
২ এপ্রিল ২০১০আফ্রিকার রাষ্ট্র গিনি বিসাউ-এ বৃহস্পতিবার সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটে৷ সেনাবাহিনীর একটি দল সকালে প্রধানমন্ত্রী কার্লোস গোমেজ জুনিয়রকে গ্রেপ্তার করে৷ তবে এর কিছুক্ষণ পরেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে তাঁর সহযোগী এবং পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের একজন সদস্য জানিয়েছেন, তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং তিনি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করছেন৷
এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সামরিক সূত্র সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে জানায়, বৃহস্পতিবার খুব ভোরে সেনাবাহিনীর একটি দল প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ঢুকে পড়ে এবং তাঁকে গ্রেপ্তারের উদ্যোগ নেয়৷ ভারী অস্ত্রে সজ্জিত সৈন্যরা সাবেক একজন নৌ-বাহিনী প্রধানের খোঁজে জাতিসংঘ ভবনেও ঢুকে পড়ে বলে জানা গেছে৷
তবে অপর কয়েকটি সূত্র থেকে জানা গেছে, বিদ্রোহী সেনা সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী কার্লোস গোমেজ জুনিয়রকে গ্রেপ্তার করেছে, সেইসঙ্গে সেনাপ্রধান জামোরা ইন্ডুটা সহ অন্তত ৪০ জন সরকারি কর্তাব্যক্তি তাদের হাতে বন্দী৷ তার আগে রাজধানী বিসাউয়ের জাতিসংঘ দপ্তরে হামলা চালায় বিদ্রোহী সেনাবাহিনী৷ মুক্ত করে নিয়ে চলে যায় সাম্প্রতিক অতীতের ব্যর্থ সেনাবিদ্রোহের নায়ক জেনারেল আন্তোনিও ইন্ডজাইকে৷
এই ঘটনার পরপরই সেনা সদস্যদের অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন৷ তিনি এক বিবৃতিতে, দেশটির সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান করার জন্য আহ্বান জানান৷ এছাড়া সকলকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার জন্যও আহ্বান জানান মুন৷ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র পি জে ক্রাউলি বলেন, ‘‘আমরা সকল সহিংসতার বিরুদ্ধে৷ আমরা যত দ্রুত সম্ভব সেখানে সাংবিধানিক শাসন ব্যবস্থার পুনর্বহাল দেখতে চাই৷'' ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান ক্যাথরিন অ্যাশটন এই ঘটনাকে অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য সেনা সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান৷
উল্লেখ্য, ১৯৭০ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে একের পর এক সেনাবিদ্রোহের সাক্ষী হয়ে থেকেছে এই প্রাক্তন পর্তুগিজ উপনিবেশটি৷ সরকারেও বেশ জোরালো ভূমিকা নিয়ে থাকে গিনি বিসাউয়ের সেনাবাহিনী৷
প্রতিবেদক: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়