1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গান নিয়ে, সুর নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে রিগা বিশ্ববিদ্যালয়

১ এপ্রিল ২০১০

পড়াশোনা মানেই যে শুধু বই খাতা নিয়ে পড়ে থাকতে হবে, তা কিন্তু নয়৷ ঘন্টার পর ঘণ্টা পিয়ানো বাজানো, গিটারের তারে সুর তোলা সেটাও এক ধরণের শিক্ষা৷ রিগা বিশ্ববিদ্যালয় সংগীতের জন্য এমনই আদর্শ একটি স্থান৷

https://p.dw.com/p/Mjo4
ছবি: picture-alliance / dpa

বাল্টিক রিপাবলিক লাটভিয়ার রাজধানী রিগা৷ রিগা বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত নিয়ে পড়াশোনার জন্য বিখ্যাত৷ ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা রিগা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছে সংগীতে উচ্চ শিক্ষা নেয়ার জন্য৷ দেশ বিদেশের ছাত্র-ছাত্রীরা ভীড় করছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ পিয়ানো এবং বেহালা বাদনের শিক্ষা রয়েছে প্রথম স্থানে৷

ক্লাস শেষে গোয়েনডোলিন ফান কার্স ব্লিক অন্য দুটি ছাত্রের সঙ্গে একটি সুর অনুশীলন করছে৷ পিয়ানো বাজাচ্ছে গোয়েনডোলিন৷ তাঁর বয়স মাত্র ২৪৷ বেলজিয়ামের নাগরিক৷ বেলজিয়ামে সে সংগীতের ওপর দুটি সেমেস্টার শেষ করে এসেছে৷ এখন এক্সচেঞ্জ স্টুডেন্ট হিসেবে এসেছে রিগা বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ রিগা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অ্যাকাডেমি - নাম মিউজিক অ্যাকাডেমি রিগা৷ গোয়েনডোলিন জানাল, ‘‘সবাই জানে, সংগীত নিয়ে পড়াশোনা করতে হলে ইউরোপের উত্তর দিকে চলে যেতে হবে৷ সেরা স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেখানেই৷ সেখানে সংগীত শেখানোর মান অনেক উঁচুতে যে কেউ চাইলেই ভর্তি হতে পারবে না৷ তাঁকে সংগীতে মোটামুটি দক্ষ হতে হবে৷ আমি আরো ভাল করতে চাই৷ সে জন্যই আমি এখানে এসেছি৷ আমার দেশের একজন শিক্ষক আমাকে বলেছিলেন ‘তুমি বেশ ভাল পিয়ানো বাজাও, তুমি খুব মনোযোগী৷' তখন আমি ভাবলাম, আমি যদি এত ভাল হই, তাহলে রিগায় যাচ্ছি না কেন!''

অ্যাকাডেমির দীর্ঘ করিডর৷ অসংখ্য দরজা৷ প্রতিটি দরজার পিছনেই দেখা যাবে ছাত্র-ছাত্রীরা সুর তুলতে ব্যস্ত৷ অনুশীলন চলছে, চলছে চর্চা৷ ডোমিনিকো স্পেরা ইটালির ছাত্র৷ রোমের একটি কনজার্ভেটরি বা সংগীত বিদ্যালয়ে সে কয়েক বছর সংগীত নিয়ে কাজ করেছে৷ এরপরই সে চলে এসেছে রিগায়৷ ডোমিনিকো বলল, ‘‘আমি সংগীতের অন্য আরেকটি বিষয় নিয়ে ইউরোপের অন্য কোন শহরে পড়াশোনা করতে চেয়েছিলাম৷ জার্মানি অথবা রাশিয়া আমার মাথায় ঘুরছিল৷ আমি রাশিয়ার আশেপাশে পড়াশোনার জন্য আবেদন করেছিলাম৷ তালিন এবং রিগায় আবেদন পত্র পাঠিয়েছিলাম৷ আমিই প্রথম ইটালিয় যে এই অ্যাকাডেমিতে এসেছি৷ আমি সত্যিই ভাল ছাত্র ছিলাম৷ আমি এখানে ভাল করছি এবং আরো ভাল করতে চাই৷ তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আরো এক বছর এই অ্যাকাডেমিতে থাকার৷''

Lettland - Riga Kirchen im Stadzentrum in Riga
রিগাছবি: picture-alliance/ dpa

ডোমিনিকো এবং গোয়েনডোলিনের একই সুপারভাইজার৷ অধ্যাপিকা সিপোল কৃতী দু'জন ছাত্র-ছাত্রী পেয়ে অত্যন্ত গর্বিত৷ রিগায় বিদেশি ছাত্র-ছাত্রী পড়তে আসছে, এর চেয়ে গৌরবের আর কিছু হতে পারে না৷ মায়া সিপোল ছাত্র-ছাত্রীদের অনেক বিষয়ে সাহায্য করে থাকেন৷ বাড়ি খোঁজা, কনসার্টের বিনামূল্যে টিকিট পাওয়া, লিথুয়ানিয়া, এস্টোনিয়ায় বেড়াতে যাওয়া৷ সব কিছুই৷ ইউরোপীয় ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এই অ্যাকাডেমিতে পড়াশোনার জন্য একটি কড়িও খরচ করতে হয়না৷ মায়া সিপোল বলল, ‘‘ ইউরোপের ৬২টি বিভিন্ন সংগীত বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমরা কাজ করছি৷ গত বছর ইটালির একটি ছাত্রের আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয়নি৷ কারণ সে খুব ভাল ছাত্র ছিল না৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার আর্থিক ব্যয় নিজেদের বহন করতে হবে৷ বছরে প্রায় চার হাজার ইউরো৷''

বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে অধ্যাপকরা ইংরেজি ভাষায় কথা বলেন৷ বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীরা লাটভিয়ান ভাষা শিখে লাটভিয়ায় আসবে, এমন কোন কঠোর নিয়ম নেই৷ তবে গোয়োনডোলিন তারপরও ভাষাটি শিখতে চায়৷ গোয়নডোলিন একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকে৷ সঙ্গে আরো দু'জন৷ গোয়েনডোলিন বলল, ‘‘এখানে পড়াশোনা করতে আসার পর সবার ভাবনা-চিন্তায় পরিবর্তন আসে৷ এখানে অনেক গরিব মানুষ রয়েছে যারা রাস্তায় থাকে, রাত কাটায়৷ আমি বেলজিয়াম থেকে এসেছি৷ আমি আগে এসব দেখিনি৷ এখানে আমি যেখানে থাকি, আমার কোন বিছানা নেই৷ শুধু একটি তোষকের ওপর আমাকে ঘুমোতে হয়৷ রান্নার একটি হাঁড়ি আর ব্যবহারের জন্য দু'টি ছুরি৷ এর বেশি কিছু আমার প্রয়োজনও নেই৷ আমি মনে করি, এখন আমি অনেক সংযত৷ আমি যখন কিছু বলি, তখন প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস নিয়েই আমি বলি৷ একটি সমস্যা কীভাবে সমাধান করতে হয় তা আমি অনেক সহজেই বের করে ফেলি৷''

প্রতিবেদক: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদক: আবদুল্লাহ আল-ফারূক