1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গাছেদের ত্রিকোণ জ্যামিতি

কর্নেলিয়া বরমান/এসি৫ ডিসেম্বর ২০১৪

গাছেরা কী ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে? তাদের শিকড় আছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রতিটি গাছের আকৃতি যে আলাদা৷ এক জার্মান পদার্থবিদ গাছেদের খাড়া থাকার রহস্য ফাঁস করে দিয়েছেন: টেনসাইল ট্রায়াঙ্গল, মানে প্রসারণসাধ্য ত্রিভুজ৷

https://p.dw.com/p/1Dxy6
Jemen Drachenbaum auf der Insel Sokotra im Indischen Ozean
ছবি: picture-alliance/dpa/Y. Arhab

কার্লসরুয়ে ইনস্টিটটিউট অফ টেকনোলজি-র অধ্যাপক ক্লাউস মাটহেক-এর সম্পদ কিছু কাঠের টুকরো: প্রতিটি টুকরোর একটা ইতিহাস আছে৷ কোনো কোনো গাছের শিকড় কিংবা চাকতির আলাদা নাম পর্যন্ত দিয়েছেন প্রফেসর মাটহেক৷ গত তিন দশক ধরে মাটহেক যে বিষয়টি নিয়ে গবেষণায় লিপ্ত রয়েছেন, সেটি হল: প্রত্যেকটি গাছের আকৃতি আলাদা হয় কেন? গাছেরা তাদের নিজেদের ওজন বহন করে কী ভাবে, ঝড়ে উপড়ে পড়ে না কেন?

দৃশ্যত গাছেরা বোধ করতে পারে, তাদের কী ভাবে, কোন দিকে বাড়া উচিত৷ মাটহেক-এর তত্ত্ব হল: ‘‘নির্দিষ্ট জায়গায় হাই স্ট্রেস বা চাপ গাছ নিজেই তার মেকানো-সেন্সর দিয়ে পরিমাপ করে৷ তাই গাছটা ঠিক সেখানে বছর গোনার চক্রাকৃতি আঁকে, যতক্ষণ পর্যন্ত না চাপ আবার স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে আসে৷''

মাটির ওপর গাছের কাণ্ড দেখে মাটহেক আরো একটি আশ্চর্য বিষয় আবিষ্কার করেন: গাছেরা তাদের গুঁড়ির এই অংশটিকে কী ভাবে গড়ে তোলে, তা জ্যামিতি দিয়ে সহজেই বোঝা এবং বোঝানো সম্ভব৷ তিনি বলেন, ‘‘ধরুন এটা হল মাটির ওপরদিক৷ এর ওপর যখন একটা গাছ দাঁড়িয়ে থাকে, তখন দু'টোর মধ্যে একটা তীক্ষ্ণ কোণা থাকে, যেন গাঁজ কাটা রয়েছে৷ প্রযুক্তিবিদরা এ যাবৎ একটা বৃত্তের মতো দাগ কেটে সেই গাঁজটা ভরিয়ে দিতেন৷ তা সত্ত্বেও গাঁজের চাপ কিছুটা থেকেই যায়৷ তখন গাছ একটা কাজ করে: গাছ এই চক্রাকৃতির উপর আরো একটা প্রতিসম ত্রিভুজ বসায়৷ তার উপরেও আবার অনুরূপভাবে অনুবন্ধন করা হয়৷ এ ভাবে একবার, দু'বার, বারংবার৷ তারপর আমরা সেগুলোকে মিলিয়ে দিয়ে একটা টেনসাইল ট্রায়াঙ্গল বা প্রসারণসাধ্য ত্রিভুজ পাই – যা কিনা প্রাকৃতিক জগতের একটা সার্বজনীন আকৃতি৷''

একটি সার্বজনীন ফর্মুলা

সে আকৃতি সর্বত্র দেখতে পাওয়া যাবে – গাছে কিংবা হাড়ে... এমনকি প্রাণীবিহীন জগতেও এই প্রসারণসাধ্য ত্রিভুজ পাওয়া যাবে৷ রিও ডি জানেইরো-র সুগার লোফ মাউন্টেনের আকারও তাই৷ গবেষকরা যা দেখে চমকে যান, তা হল: একটা গলার চেন-এর আকৃতিও ঐরকম; বিশেষ করে ওপরের দিক ধরে টানলে৷ টেনসাইল ট্রায়াঙ্গল সর্বত্র পাওয়া যাবে৷

গাছের অনুকরণে সবচেয়ে অনুকূল আকৃতি সৃষ্টি করতে গিয়ে আগে কম্পিউটারে অনেক মাপজোক করতে হতো৷ ক্লাউস মাটহেক টেনসাইল ট্রায়াঙ্গল-এর নীতিটিকে একটি সার্বজনীন ফর্মুলায় পরিণত করেছেন৷ এর ফলে কম্পিউটারে লম্বা আঁকজোক ছাড়াই বিভিন্ন যন্ত্রাংশকে তাদের সবচেয়ে অনুকূল আকৃতিতে আনা যায়৷ ফলে অর্থ ও সময় বাঁচে৷ শল্যচিকিৎসায় ব্যবহারযোগ্য, মানুষের শরীরে বসানো যায়, এমন সব স্ক্রু, গাড়ি ও মেশিনের বিভিন্ন পার্টস, এ ছাড়া বহু নিত্যব্যবহারযোগ্য জিনিসপত্রের ঢালাই করা পার্টস প্রসারণসাধ্য ত্রিভুজের নীতি প্রয়োগ করে আরো উন্নীত করা সম্ভব হয়েছে৷ মাটহেক বলেন, ‘‘আগে আমাদের প্রতিটি গাঁজ আঁকজোক করে বার করতে হতো৷ আজ আমরা শুধু বলি: এই হল তোমার গাঁজ আর এতোটা জায়গা আছে৷ একটি মাউস ক্লিক দিয়েই আজ গাঁজটাকে তার আদর্শ আকৃতি দেওয়া যায়৷ এ ক্ষেত্রে বুড়ো আঙুল আর তর্জনীর মধ্যে যে টেনসাইল ট্রায়াঙ্গল-গুলো আছে, সেগুলোও তো তার অনুরূপ৷''

ক্লাউস মাটহেক সারা বিশ্বে হাজার হাজার বৃক্ষ পরীক্ষা করে দেখেছেন৷ এবং মাটহেক জানেন: গাছেদের এখনও এমন অনেক রহস্য আছে, যেগুলো খোদ প্রফেসর মাটহেক-এরও অজ্ঞাত৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য