গরমে অফিসে যে সুবিধা পেতে পারেন
আহ, গ্রীষ্ম! শহরের সুইমিং পুলে দাপিয়ে বেড়াতে কিংবা পাড়ার দোকানে আইসক্রিম খাওয়ার আদর্শ সময় এটা৷ কিন্তু দুঃখের কথা হচ্ছে, এমন গরমেও অনেকের সারাদিন অফিসেই কাটাতে হয়৷ তবে দাবদাহের সময় তাঁদের জন্যও কিন্তু আছে কিছু অধিকার৷
অবশেষে তার দেখা মিলল!
গ্রীষ্ম – মানে একেবারে আসল গ্রীষ্ম, যখন অনেক সূর্যের আলো মেলে এবং তাপমাত্রা এত বেশি থাকে যে আপনি ঘামবেন৷ বছরে কয়েক সপ্তাহের জন্য এমন গ্রষ্ম পায় জার্মানি৷ এটা হয়ত স্বল্প সময়ের জন্য, কিন্তু সেই সময়েও চাকুরিজীবী এবং চাকুরিদাতাদের বিশেষ কিছু নিয়মনীতি অনুসরণ করতে হয়৷
ঠান্ডা এবং মানানসই থাকুন
গরমের সময় অন্যতম বড় বিষয় হিসেবে দেখা দেয় ড্রেস কোড৷ আপনি কী ধরনের কাজ করছেন, সেটার উপরে পোশাক নির্ভরশীল৷ অনেকক্ষেত্রে এই বিষয়ে উদারতা থাকলেও ব্যাংক, আইনি সংস্থা এবং প্রশাসনিক চাকুরিতে ড্রেস কোড কঠোরভাবেই মানা হয়৷ তার একটি হচ্ছে পায়ের আঙুল দেখানো যাবে না৷ যার অর্থ স্যান্ডেল পরা যাবে না৷ তবে মেয়েদের গ্রীষ্মের পোশাকের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেয়া হয়৷
লিঙ্গ বৈষম্য
ব্রিটিশ কলসেন্টার কর্মী জো বার্গকে অফিসে শর্টস পরে আসায় বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়েছিল৷ কিন্তু সেখানে তাঁর নারী সহকর্মীরা স্কার্ট পরেই অফিস করছিলেন৷ জো তখন ফিরে গিয়ে ছবির এই পোশাক পরে অফিসে আসেন৷ তাঁর এই অভিনব প্রতিবাদ টুইটারে ভাইরাল হয়ে যায় এবং প্রতিষ্ঠানটিকে ড্রেসকোড পরিবর্তনে বাধ্য করে৷ পুরুষরা এখন চাইলে থ্রি কোয়ার্টার শর্টস পরতে পারবে৷
এসি দরকার নেই
কেউ কেউ হয়ত গরম পছন্দ করেন, কিন্তু আমাদের মতো অনেকের আবার বেশি গরম তাপমাত্রায় কষ্ট হয়৷ জার্মান আইন অনুযায়ী, একটি অফিসের তাপমাত্রা যদি ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হয়, তাহলে সেটি কাজের অনুপযোগী হিসেবে বিবেচিত হয়৷ আর চাকুরিদাতা যদি গরম কমানোর উদ্যোগ না নেয়, তাহলে আপনি অফিস ত্যাগ করতে পারেন৷ তবে এর অর্থ এই নয় যে, চাকুরিদাতাকে অবশ্যই এসি স্থাপন করতে হবে৷
ছায়ার ব্যবস্থা
তাপমাত্রা কমানোর অন্যান্য উদ্যোগও গ্রহণ করা যাবে৷ যেমন, বেশি গরম হলে চাকুরিদাতা ফ্যান সরবরাহ করতে পারে৷ পাশাপাশি জানালায় ব্লাইন্ড বা পর্দার মাধ্যমে তাপমাত্রা কমানোর উদ্যোগ নেয়ার সুযোগ রয়েছে৷ জার্মানিতে, অফিসের তাপমাত্রা ত্রিশ ডিগ্রির বেশি হলেই গরম কমাতে আপনার বস উদ্যোগ নিতে আইনিভাবে বাধ্য৷
বাড়ি থেকে কাজ করা
জার্মানিতে কিছু কর্মীর নিজেদের গরম থেকে দূরে রাখতে বাড়িতে বসে কাজ করার অধিকার রয়েছে৷ এক্ষেত্রে গরমের কারণে তাঁর শারীরিক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকতে হবে৷ সাধারণত অন্তঃসত্ত্বা এবং নার্সিং নারীরা এর আওতায় পড়েন৷ যদি তাদের প্রতিষ্ঠান কোনো উদ্যোগ না নেয় তাহলে তাঁরা অফিসে তাপমাত্রা কমানোর জন্য চাপ দিতে পারেন কিংবা বাড়িতে বসে কাজ করতে পারেন৷
অফিসের সময়ের সমন্বয়
দাবদাহ থেকে কর্মীদের বাঁচাতে চাকুরিদাতারা আরো একটি উদ্যোগ নিতে পারেন৷ সেটি হচ্ছে, কাজের সময়ের সমন্বয়৷ দুপুরের গরমের তীব্রতা এড়াতে কর্মীরা খুব সকালে কাজ শুরু করতে পারেন৷ আর যেসব কর্মীরা বেশি গরমে কাজ করতে চান না, তারা চাইলে সেই সময়টা অন্যত্র কাটিয়ে বিকেলের দিকে অফিসে ফিরতে পারেন৷
সবচেয়ে ভালো বস যিনি
আইনে নেই, তবে বস চাইলে কর্মীদের জন্য ঠান্ডা আইসক্রিম বা ঠাণ্ডা পানীয় নিয়ে আসতে পারেন৷ যদি অফিসে অনেক কর্মী থাকে, তাহলে নিজের টিমের জন্য বা সেক্রেটারির জন্যও সেটা আনতে পারেন৷ যে বস কর্মীদের জন্য আইসক্রিম নিয়ে আসেন, তাঁর চেয়ে ভালো আর কে হতে পারেন!