গদ্দাফি বললেন, তিনি ত্রিপোলিতেই আছেন
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১১আগে ব্রিটিশ সূত্রে গুজব ছড়িয়েছিল, গদ্দাফি নাকি লিবিয়া পরিত্যাগ করে ভেনেজুয়েলা অভিমুখে৷ তাই টেলিভিশনে গদ্দাফিকে দেখা গেল নিজের প্রাসাদে একটি গাড়িতে ওঠার মুখে৷ মাথার ওপর ছাতা ধরে আছেন এবং টিভি-দর্শকদের বলছেন,‘‘আমি দেখাতে চাই, আমি ত্রিপোলিতে, ভেনেজুয়েলায় নয়৷ রাস্তার কুকুরদের ঐ চ্যানেলগুলোকে বিশ্বাস করবেন না৷''
গদ্দাফি তার পরই পরই যোগ করেছেন, ‘‘আমি তো ত্রিপোলির সবুজ চত্বরের তরুণদের সঙ্গে জেগেই থাকতে চেয়েছিলাম৷ কিন্তু বৃষ্টি পড়তে শুরু করল৷'' সবুজ চত্বরে গদ্দাফি সমর্থকদেরই সমাবেশ হচ্ছিল৷
মোট কথা, বিক্ষোভ, সংঘর্ষ এখন ত্রিপোলিতেও ছড়িয়েছে৷ বারংবার বন্দুকের গুলির আওয়াজ শোনা গেছে৷ বিক্ষোভকারীরা পুলিশ ফাঁড়ি, রাষ্ট্রীয় বেতারভবন এবং একাধিক সরকারি অফিসে আগুন ধরিয়েছে৷ অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা নাকি তাজুরায় বিক্ষোভকারীদের উপর এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে একটা হত্যাকাণ্ডের সৃষ্টি করেছে৷ আবার কোথাও ভাড়াটে আফ্রিকান সৈন্যদের হেলিকপ্টার থেকে নেমে গুলি চালানোর কথাও শোনা যাচ্ছে৷
শোনা যাচ্ছে চলতি বিক্ষোভে নাকি এযাবৎ ২০০ থেকে ৪০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন৷ আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ঠিক তাই নিয়ে৷ টিউনিশিয়া কি মিশরে যেরকম রক্তপাত ঘটলেও, একটা পর্যায়ে থেমে গেছে - লিবিয়া কি ইরানের ক্ষেত্রে, এমনকি বাহরাইন কি মরক্কোর ক্ষেত্রে সেটা আশা করা বোধহয় ভুল হবে৷ অন্যদিকে গদ্দাফিও জানেন যে, আন্তর্জাতিক মানবিক আইন বলে একটা ব্যাপার রয়েছে৷ এবং এ'ধরণের অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রসমাজ অনেকদূর এগিয়েছে৷
যদিও গদ্দাফির মূল আশঙ্কা সম্ভবত সেনাবিদ্রোহ নিয়ে, বেনগাজিতে যা নাকি ঘটেছে৷ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনেও বলা হয়েছে যে, নিরাপত্তা বাহিনী ‘‘সন্ত্রাসবাদীদের আস্তানার'' সঙ্গে যুদ্ধ চালাচ্ছে৷ স্বয়ং গদ্দাফি-পুত্র সঈফ আল-ইসলাম নাকি বলেছেন, লিবীয় সেনাবাহিনী শহরাঞ্চলের বাইরে অস্ত্রশস্ত্রের ভাণ্ডারের উপর আক্রমণ চালিয়েছে৷ গৃহযুদ্ধের ভয়ও দেখিয়েছেন এই সঈফ আল-ইসলাম৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: জাহিদুল হক