1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খেলার মাঝেই শিল্পসৃষ্টি

৮ মার্চ ২০১৮

ক'জন শিল্পী শৈশবের অভিজ্ঞতা ও নিজের সন্তানদের সঙ্গে খেলার সুবাদে সৃষ্টির আইডিয়া পান? বাচ্চাদের খেলার উপকরণ দিয়ে সুইডেনের ইয়োহান কার্লগ্রেন তেমন সৃষ্টিতেই মেতে উঠেছেন৷ ইনস্টাগ্রাম হয়ে উঠেছে তাঁর মঞ্চ৷

https://p.dw.com/p/2tvD9
ছবি: DW

সন্তানের সঙ্গে খেলতে খেলতে সৃষ্ট শিল্প

সুইডেনের রাজধানী স্টকহোম শহর থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণের শহর মুটালা৷ সেখানে ম্যানহোলের ঢাকনা দেখতে দৈত্যের মতো৷ ‘ফুটুরামা’ নামের অ্যানিমেশন সিরিজের রোবট বেন্ডার৷ দু'টিই সুইডিশ শিল্পী ইয়োহান কার্লগ্রেন-এর সৃষ্টি৷ সিম্পসনও বাদ পড়েনি৷ ‘অ্যাজ গুড অ্যাজ ইট গেটস’ চলচ্চিত্রে জ্যাক নিকলসন-এর বিখ্যাত চরিত্রেরও শৈল্পিক রূপ দিয়েছেন তিনি৷

ইয়োহান কার্লগ্রেন বলেন, ‘‘আমি সত্যি বাস্তব জগত ও শিল্পসৃষ্টির মধ্যে বৈপরীত্য পছন্দ করি৷ এই উদাহরণ হয়তো ভীতিকর৷ কিন্তু অজানা কোনো কিছু বাস্তব জগতে নিয়ে এলে সেই বৈপরীত্য থাকবেই৷ সেটা অত্যন্ত সুন্দর৷’’

বসতবাড়ির পেছনের বাগানের ঘরটি শিল্পীর কাজের জায়গা৷ সেখানেই তিনি মূর্তি বা মোটিফ সৃষ্টি করেন৷ মালার পুঁতির মতো ছোট উপকরণ দিয়ে সেগুলি তৈরি৷

শিশুদের ভাঙাগড়ার খেলা হিসেবে যা শুরু হয়েছিল, ৪০ বছর বয়সি এই সুইডিশ শিল্পী সেগুলিকেই উপকরণ হিসেবে বেছে নিয়েছেন৷ নব্বইয়ের দশকের কম্পিউটার গেমে যে ৮ বিট গ্রাফিকাল নক্সা ব্যবহার করা হতো, ঠিক সেই শৈলি ফুটিয়ে তোলেন তিনি৷ সুইডিশ শিল্পী ইয়োহান কার্লগ্রেন বলেন, ‘‘আজকের হাইটেক জগতে আমি অতি সাধারণ, পুরানো প্রযুক্তি পছন্দ করি৷ ছোটবেলার পুরানো গেমসের কথা মনে করিয়ে দেয়৷ যাকে বলে নির্ভেজাল ভালোবাসা৷’’

টুকরোগুলি লাগানোর পর ইস্তিরি করা হয়৷ তারপর মূর্তি প্রস্তুত৷ ইয়োহান কার্লগ্রেন ৩ বছর ধরে আর্ট নিয়ে পড়াশোনা করেছেন৷ ২০১৪ সালে তিনি প্লাস্টিকের পুঁতি নিয়ে কাজ শুরু করেন৷ এর মধ্যে তিনি প্রায় ২০,০০০ বস্তু সৃষ্টি করেছেন৷ ৩০ থেকে দেড় হাজার ইউরো মূল্যে সেগুলি বিক্রি করেন তিনি৷ ইয়োহান বলেন, ‘‘কাজ করে বেশ আরাম পাই৷ পুঁতি নিয়ে উপার্জনও করতে পারি৷’’

‘বাবার মুক্তা’ নামের আড়ালে ইয়োহান কার্লগ্রেন কাজ করেন৷ তবে এই পুঁতি বা মুক্তা নিয়ে কাজ করার আইডিয়া তিনি পেয়েছেন নিজের ছেলেমেয়ে কাই ও সেলডা-র কাছ থেকে৷ আগে তাঁরা তিনজনে মিলে অনেক কিছু তৈরি করতেন৷ আজ ছেলেমেয়েরা তাদের বাবাকেই পুঁতি নিয়ে কাজ করতে দেয়৷ মেয়ে সেলডা বলে, ‘‘মুক্তা নিয়ে বাবার কাজ অদ্ভুত লাগে৷ কোনো বন্ধুর বাবা-মা এমন করে না৷ আসল কাজ করে তারা রোজগার করে৷’’ তবে ছেলে কাই মনে করে, ‘‘বাবা যা করে, তা আমার ভালো লাগে৷ গোটা বিশ্বে অন্য কেউই হয়ত এমনটা করে না৷’’

পুরানো আমলের এই রেট্রো-আর্ট আন্তর্জাতিক স্তরেও শোভা পায়, যেমন বার্লিনে এক হোটেলে৷ মূলত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম কাজে লাগিয়েই তিনি নিজের শিল্পকর্ম বিক্রি করেন৷ গোটা বিশ্বে প্রায় ৮০,০০০ মানুষ তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট অনুসরণ করেন৷ ইয়োহান কার্লগ্রেন বলেন, ‘‘ইনস্টাগ্রাম থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়৷ সেখান থেকে অনেক ভালোবাসা, প্রেরণা ও শক্তি পাই৷ প্রশংসাও জোটে৷’’

ইনস্টাগ্রামে তাঁর সৃষ্টিকর্ম সম্পর্কে ছোট ছোট ভিডিও-ও দেখা যায়৷ যেমন ‘সুপার মারিও’ কেমন রেসিং করছে, তা দেখা যায়৷ ইওহান কার্লগ্রেন তাঁর সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে মানুষের দৈনন্দিন জীবন সহজ করে তুলতে চান৷ কয়েক মুহূর্ত মজায় কাটলে কার না ভালো লাগে?

কিয়র্স্টিন শুমান/এসবি