খুনে অর্কা আবার শো’তে নামবে, বলছে সি-ওয়ার্ল্ড
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০ফ্লোরিডায় পার্কেই সাংবাদিক সম্মেলন করে এ-খবর জানিয়েছেন সি-ওয়ার্ল্ডের সিইও জিম হাচিসন৷ বুধবার ট্রেনার ডন ব্রনশো'র মৃত্যু নিয়ে তদন্ত চলেছে৷ তা শেষ না হওয়া অবধি শো চলবে, কিন্তু আগের মতো ট্রেনাররা জলে নেমে অর্কার পীঠে চড়া, কি অন্যান্য স্টান্ট দেখাবে না৷ টিলিকুম নামের যে পুরুষ অর্কাটি ব্রনশো'র পনিটেল, অর্থাৎ চুল মুখে নিয়ে তাকে টেনে জলে নামায়, সেই টিলিকুম'কেও আপাতত অন্যান্য অর্কাদের সঙ্গেই রাখা হচ্ছে৷
শিকারের ইতিহাস
মুশকিল এই যে, ফ্লোরিডার অর্লান্ডো পার্কে আটটি অর্কা বা কিলার হোয়েল বা শিকারী তিমি আছে৷ ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান ডিয়েগো এবং টেক্সাসের স্যান এ্যান্টোনিও মিলিয়ে সি-ওয়ার্ল্ডের অর্কা আছে ২৫টি৷ তাদের অধিকাংশের ওজন ২,৭০০ থেকে ৪,০৫০ কিলো৷ কিন্তু টিলিকুমের ওজন ৫,৪০০ কিলো - অন্যদের চেয়ে অনেক বেশী৷ তাকে ধরা হয় ১৯৮৩ সালে, আইসল্যান্ডের উপকূলে৷ ১৯৯১ সালে ক্যানাডার একটি পার্কে এক ট্রেনারকে জলে ডুবিয়ে মারে তিনটি অর্কা - টিলিকুম ছিল তাদের মধ্যে একটি৷ ১৯৯২-তে তাকে বেচে দেওয়া হয় সি-ওয়ার্ল্ডের কাছে৷ ১৯৯৯-তে এক মৃত ব্যক্তিকে টিলিকুমের পীঠে শোয়া অবস্থায় পাওয়া যায়৷ মৃত ব্যক্তি নাকি পার্ক বন্ধ হওয়ার পর কোনোভাবে জলে নেমেছিল৷
‘‘ফ্লিপার''-এর রিক ও'ব্যারি
এই সব কারণেই প্রাক্তন ডলফিন বা শুশুক ট্রেনার রিক ও'ব্যারি এবার অর্লান্ডোর ঘটনার ফেডারাল তদন্ত দাবী করেছেন৷ ষাটের দশকে মার্কিন মুলুকের অতি জনপ্রিয় ‘‘ফ্লিপার'' টেলিভিশন সিরিজে ডলফিনদের ট্রেন করার কাজ ছিল ও'ব্যারির৷ সত্তরের দশক থেকেই তিনি সি-ওয়ার্ল্ডের মতো মেরিন পার্কগুলির বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছেন৷ বলতে কি, সদ্য অস্কারের জন্য মনোনীত তথ্যচিত্র ‘‘দ্য কোভ''-এও তাঁকে দেখতে পাওয়া যাবে: ছবিটির উপজীব্য হল, জাপানে কিভাবে ডলফিন শিকার করা হয়৷ - ও'ব্যারির মতে সি-ওয়ার্ল্ডের কর্তৃপক্ষ সম্ভাব্য বিপদের নানা স্পষ্ট চিহ্ন জেনেশুনে উপেক্ষা করেছেন৷ তাঁর মতে ‘‘বন্দী ডলফিন এবং তিমিদের নিয়ে এই বিলিয়ন ডলারের মনোরঞ্জন শিল্প'' পরিকল্পিতভাবে এই ঝুঁকি নিয়ে থাকে৷
প্রতিবেদক: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই